শ্রীলঙ্কার পার্লামেন্ট নির্বাচনে ৬২ শতাংশ ভোট পেয়ে অনূঢ়ার বামপন্থী জোটের জয়
শ্রীলঙ্কায় আগাম পার্লামেন্ট নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট অনূঢ়া কুমারা দিশানায়েকের বামপন্থী জোট ন্যাশনাল পিপলস পাওয়ার (এনপিপি) সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে।
আজ শুক্রবার এই তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
নির্বাচন কমিশনের দেওয়া ফলাফলে অনূঢ়ার দলের জয় নিশ্চিত হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার শ্রীলঙ্কায় আগাম পার্লামেন্ট নির্বাচন হয়। পার্লামেন্টে আসনসংখ্যা ২২৫। তবে এর মধ্যে ১৯৬ আসনে সরাসরি ভোট হয়। বাকি ২৯টি সংরক্ষিত 'জাতীয়ভিত্তিক' আসন ওই ১৯৬ আসনে কোন দল কতটিতে জিতেসে, সে হিসাবে বণ্টন হবে।
১৯৬ আসনের মধ্যে বামপন্থী এনপিপি ১৩৭টিতে জয় পেয়েছে। অর্থাৎ, তারা প্রায় ৭০ শতাংশ আসন পেয়ে পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছে। জোটটি সব মিলিয়ে ৬২ শতাংশ ভোট পেয়েছে।
এনপিপি জোটের প্রধান প্রতিপক্ষ সমাগি জনা বালাবেগায়া (এসজেবি) মাত্র ৩৫ আসনে জয় পেয়েছে। শ্রীলঙ্কার স্থানীয় গণমাধ্যম বলছে, ২২৫ আসনের পার্লামেন্টে এনপিপির আসনসংখ্যা ১৫০ ছাড়িয়ে যেতে পারে।
গত সেপ্টেম্বরে দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন অনূঢ়া। কিন্তু তখন পার্লামেন্টে তাঁর নির্বাচনী জোট এনপিপির আসন ছিল মাত্র তিনটি। পার্লামেন্টে নিজ জোটের আসনসংখ্যা বাড়াতে তিনি আগাম নির্বাচন দেন। এখন তার জোট সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করল।
গতকাল ভোট দেওয়ার পর অনূঢ়া বলেছিলেন, 'আমরা একটি শক্তিশালী পার্লামেন্ট গঠনের জন্য জনরায় (ম্যান্ডেট) পাওয়ার আশা করছি। আমরা আত্মবিশ্বাসী যে জনগণ আমাদের এই ম্যান্ডেট দেবে।'
অনূঢ়া আরও বলেছিলেন, শ্রীলঙ্কার রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে পরিবর্তন এসেছে, যার শুরু গত সেপ্টেম্বরে। এই পরিবর্তন অবশ্যই অব্যাহত থাকবে।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, পার্লামেন্টে অনূঢ়ার জোটের সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন তার হাতকে শক্তিশালী করল। এখন তিনি অর্থনৈতিক নীটসহ অন্যান্য নীতি সহজেই বাস্তবায়ন করতে পারবেন।
২০২২ সালে অর্থনৈতিক সংকটে পড়ে দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কা। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বেড়ে যায় বহুগুণ। প্রতিবাদে রাস্তায় নামেন দেশটির বিক্ষুব্ধ জনগণ। ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে পদত্যাগ করে দেশ থেকে পালিয়ে যান। এরপর রাষ্ট্রপতি ভবনে ঢুকে পড়ে উল্লাস করে দেশটির জনগণ। ছবিগুলো হয়ে যায় ভাইরাল।
এর প্রায় দুই বছর পর গত সেপ্টেম্বরে দেশটিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয়। এতে জয়ী হন বামপন্থী রাজনীতিক অনূঢ়া। নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, ক্ষমতা গ্রহণের পর তিনি পার্লামেন্ট ভেঙে দেন। ১৪ নভেম্বর আগাম পার্লামেন্ট নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেন।
শ্রীলঙ্কায় ২০২০ সালের আগস্টে পাঁচ বছর মেয়াদে পার্লামেন্ট নির্বাচন হয়েছিল। সে হিসাবে নির্ধারিত সময়ের প্রায় এক বছর আগে গতকাল দেশটিতে আগাম পার্লামেন্ট নির্বাচন হয়।
Comments