জাবি কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষার্থী কৌশিকের প্রতিবাদ ও প্রতিবেদকের বক্তব্য

দ্য ডেইলি স্টার বাংলায় গতকাল বৃহস্পতিবার প্রকাশিত 'ছাত্রদল-সমন্বয়ক মিলে তিন দফা পিটিয়ে হত্যা করে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শামীমকে' শীর্ষক প্রতিবেদনের প্রতিবাদ জানিয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়, ২০ সেপ্টেম্বর অনলাইন বাংলা ভার্সনে প্রকাশিত 'ছাত্রদল-সমন্বয়ক মিলে তিন দফা পিটিয়ে হত্যা করে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শামীমকে' শীর্ষক সংবাদে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী 'এমনকি প্রক্টর ও উপাচার্যের সামনেও শামীম মোল্লাকে পেটানো হয়' উল্লেখ করে যে তথ্য পরিবেশন করা হয়েছে তা সত্য নয়। 

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, ঘটনার দিন প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম রাশিদুল আলম সন্ধ্যা আনুমানিক পৌনে ৬টার দিকে জানতে পারেন যে, প্রান্তিক গেটে প্রাক্তন শিক্ষার্থী শামীম মোল্লাকে মারধর করা হচ্ছে। এ খবর জানার সঙ্গে সঙ্গে প্রক্টরের নেতৃত্বাধীন প্রক্টরিয়াল টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে বিক্ষুদ্ধদের নিবৃত্ত করে এবং আহত শামীম মোল্লাকে উদ্ধার করে প্রক্টর অফিসে নিয়ে যায়। 

প্রক্টর অফিস থেকে আশুলিয়া থানায় খবর দেওয়া হয় এবং পরিস্থিতি জানার পর রাত আনুমানিক পৌনে ৮টার দিকে উপাচার্য প্রক্টর অফিসে যান। প্রক্টর অফিসে উপাচার্য ও প্রক্টরের উপস্থিতিতে কোনো শিক্ষার্থী বা অন্য কেউ শামীম মোল্লাকে মারধর করেনি। মারধরের ঘটনা উপাচার্য প্রক্টর অফিসে পৌঁছানোর আগেই ঘটেছে এবং প্রক্টর মারধর নিবৃত্ত করতে ঢালস্বরূপ শামীম মোল্লার সামনে দাঁড়িয়েছেন বলে প্রতিবাদলিপিতে উল্লেখ করা হয়।

প্রতিবেদকের বক্তব্য

প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়, শামীমকে পুলিশের গাড়িতে তোলার সময় বিচ্ছিন্নভাবে কয়েকজন শামীমকে মারধর করেন। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, প্রক্টর, নিরাপত্তা কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। 

দ্য ডেইলি স্টারের হাতে আসা ভিডিওতে দেখা যায়, প্রক্টর অফিস থেকে পুলিশের গাড়িতে তোলার সময় শামীমকে বেশ কয়েকজন মারধর করছিলেন। প্রক্টর সেসময় সেখানেই ছিলেন এবং মারধরে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন। 

বিশেষ কোনো উদ্দেশ্য নিয়ে ডেইলি স্টার বাংলা কোনো সংবাদ প্রকাশ করে না। এক্ষেত্রেও করেনি।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী নাইমুল হাসান কৌশিকের প্রতিবাদ

প্রতিবাদলিপিতে তিনি জানান, সংবাদে হামলায় অংশগ্রহণকারীদের বিবরণ উপস্থাপনের এক পর্যায়ে বলা হয়, 'চশমা পরা এক শিক্ষার্থী লাঠি হাতে দাঁড়িয়ে আছেন। সেসময় এক শিক্ষার্থী মারধর না করার অনুরোধ করেন। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, চশমা পরা শিক্ষার্থী ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের কৌশিক।' এ ছাড়াও বলা হয়েছে, 'বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এবং শামীমকে দফায় দফায় পেটানোর সবগুলো ঘটনার সময় উপস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছে দ্য ডেইলি স্টার। তাদের অভিযোগ, শামীমকে মারধরের নেতৃত্ব দিয়েছেন জাবি ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ২০০৩-০৪ শিক্ষাবর্ষের আবু সাঈদ ভূঁইয়া, ছাত্রদলকর্মী সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের কৌশিক, একই বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রদলকর্মী রাজন ও ইংরেজি বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের  ছাত্রদলকর্মী হামিদ উল্লাহ সালমান।'

'১৮ তারিখে বিভিন্ন গণমাধ্যমে হামলাকারীদের নাম-পরিচয়সহ সংবাদ প্রকাশ হয়, যেখানে কোথাও আমাকে জড়িয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়নি। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক তদন্ত কমিটি মারধরের ঘটনায় জড়িতদের ছাত্রত্ব বাতিল করে, সেখানেও আমার নাম নেই। সবশেষ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন আশুলিয়া থানায়, সেখানেও আমার বিরুদ্ধে কোনো মামলা হয়নি।'

প্রতিবাদলিপিতে কৌশিক আরও বলেন, আমি সম্পূর্ণ দায়িত্ব নিয়ে বলছি উপরোক্ত ঘটনার সময় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আমি উপস্থিত ছিলাম না। আমার দাবির বিষয়ে শতভাগ প্রমাণ আমি দিতে পারব। ১৮ সেপ্টেম্বর রাত ৯টার কিছু পরে আমি ক্যাম্পাসে প্রবেশ করি প্রধান গেট দিয়ে। তারপর সরাসরি ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে যাই এবং সাড়ে ১১টা পর্যন্ত সেখানেই অবস্থান করি। তারপর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ত্যাগ করি বাসার উদ্দেশে। সেদিন এই সময়টুকুই আমি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবস্থান করি। এর বাইরে কোথাও আমি অবস্থান করিনি।

প্রতিবেদকের বক্তব্য

প্রকাশিত সংবাদে নাইমুল হাসান কৌশিকের নাম প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য ও একটি অস্পষ্ট ভিডিওর ভিত্তিতে লেখা হয়েছিল। তবে, এক্ষেত্রে আরও সতর্ক থাকা দরকার ছিল। বিশেষ কোনো উদ্দেশ্য নিয়ে ডেইলি স্টার বাংলা কোনো সংবাদ প্রকাশ করে না। এক্ষেত্রেও করেনি। আমাদের অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য দুঃখিত।

Comments

The Daily Star  | English
10-bed ICU

Life-saving care hampered in 25 govt hospitals

Intensive Care Units at 25 public hospitals across the country have remained non-functional or partially operational over the last few months largely due to a manpower crisis, depriving many critically ill patients of life-saving care.

9h ago