এস আলম ও সালমান এফ রহমানের শেয়ার কারসাজি তদন্তে কমিটি

পুঁজিবাজার কারসাজি

শিল্প প্রতিষ্ঠান এস আলম গ্রুপ ও বেক্সিমকো গ্রুপের মালিকদের বিরুদ্ধে পুঁজিবাজার কারসাজির অভিযোগ খতিয়ে দেখতে কমিটি গঠন করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

এই তদন্তে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে এই দুই প্রভাবশালী ব্যবসায়ী পরিবারের সদস্যদেরও তথ্য পাওয়া যাবে।

বিএসইসির পরিচালক মোহাম্মদ আবুল হাসানের নেতৃত্বে গঠিত চার সদস্যের কমিটিকে আগামী ৬০ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

এ বিষয়ে বিএসইসি গণমাধ্যম সূত্রের বরাত দিয়ে বলে ১৯৮০-এর দশকে বেক্সিমকো গ্রুপের মালিক সালমান এফ রহমানকে ঋণখেলাপি হিসেবে উল্লেখ করা হয়। ১৯৯৬ সালের শেয়ার কেলেঙ্কারিতেও তার নাম আসে।

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর 'বিশেষ সুবিধায়' সালমান এফ রহমানের নাম ঋণখেলাপির তালিকা থেকে কেটে দেওয়া হয়। তিনি ছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা।

এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদের নেতৃত্বে বাজার তদন্ত কমিটি পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার নিয়ন্ত্রণে সালমান এফ রহমানের জড়িত থাকার কথা বলে।

২০১৭ সালে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে চট্টগ্রামের এস আলম গ্রুপ ইসলামী ব্যাংকের দায়িত্ব নেয় বলে উল্লেখ করে বিএসইসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, নিয়ন্ত্রণ পাওয়ার পর শিল্প প্রতিষ্ঠানটি ৫০ হাজার কোটি টাকার ঋণ পায়। এটি সেই ব্যাংকের মোট ঋণের এক-তৃতীয়াংশ।

গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে জিএমজি এয়ারলাইন্সকে নিয়ে সালমান এফ রহমানের কারসাজির কথা আছে।

১৯৯৮ সালে কার্যক্রম শুরুর পর থেকে জিএমজির আর্থিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। ২০০৬ সাল পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটির লোকসান হয় ৪২ কোটি টাকা।

তবে ২০০৭ সালে এর বার্ষিক মুনাফা দেখা যায় এক কোটি টাকা।

২০০৯ সালে জিএমজির অর্ধেক শেয়ার কিনে নেয় বেক্সিমকো। তখন থেকে পরিস্থিতি 'স্বাভাবিক' হতে শুরু করে। কোনো কারণ ছাড়াই ২০১০ সালে জিএমজির মুনাফা বেড়ে হয় ৭৯ কোটি টাকা।

শিগগিরই পুঁজিবাজারে কেনাবেচা হবে এমন প্রতিশ্রুতি দিয়ে ৪০০ শতাংশ প্রিমিয়ামে ৩০০ কোটি টাকার প্রাইভেট সেল অফার করে জনগণকে স্বপ্ন দেখায় উড়োজাহাজ পরিবহণ প্রতিষ্ঠানটি। নতুন উড়োজাহাজ কেনার ও নতুন গন্তব্যে যাওয়ার কথা বলা হয়।

নির্ধারিত সময়ের মধ্যে টাকা পরিশোধ না করে ঋণশোধের বাজার নষ্ট করারও অভিযোগ আছে সালমান এফ রহমানের বিরুদ্ধে। বন্ড মার্কেটও তার প্রভাব ছিল।

২০২১ সালে বেক্সিমকো দেশের সবচেয়ে বড় সুকুক বন্ড ইস্যু করে। এর মাধ্যমে তিন হাজার কোটি টাকা তোলা হয়।

সালমান এফ রহমান বন্ড বিক্রিতে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ছিলেন বলে অভিযোগ আছে। কোনো ব্যাংক ও ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান এই বন্ড কিনতে আগ্রহী ছিল না।

তিনি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের তার প্রতিষ্ঠানের শরিয়াহ-সম্মত বন্ডের মতো সুকুকে টাকা রাখার জন্য চাপ দিয়েছিলেন। কিছু ব্যাংক দ্বিধা নিয়ে অল্প বিনিয়োগ করেছিল।

স্টক নিয়ন্ত্রক সংস্থা কমপক্ষে দুই বার বন্ড কেনার সময় বাড়িয়েছিল।

শরিয়াহভিত্তিক বন্ডের জন্য নয়, শুধু পুঁজিবাজারের জন্য তৈরি স্কিম থেকে ঋণ নিয়ে ব্যাংকগুলো যাতে সুকুকে বিনিয়োগ করতে পারে সে জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে নিয়ম পরিবর্তন করতে 'বাধ্য' করা হয়।

তার প্রতিষ্ঠান কখনো এমন অন্যায় স্বীকার না করলেও বিষয়টি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল ব্যক্তিরা বলছেন, ব্যাংকগুলোকে সুকুকে বিনিয়োগের অনুমতি দিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সার্কুলার জারি করতে বাধ্য হয়েছিল।

Comments

The Daily Star  | English
US dollar price rises

Explanations sought from 13 banks for higher dollar rate

BB issued letters on Dec 19 and the deadline for explanation ends today

55m ago