২০২৪-২৫ অর্থবছর

রপ্তানির লক্ষ্য সাড়ে ৫৭ বিলিয়ন ডলার

রপ্তানির লক্ষ্য
অলঙ্করণ: আনোয়ার সোহেল/স্টার ডিজিটাল গ্রাফিক্স

চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের পণ্য ও সেবা রপ্তানি বছরে প্রায় ১২ দশমিক ৭৪ শতাংশ বাড়িয়ে সাড়ে ৫৭ বিলিয়ন ডলার করার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।

গতকাল রোববার অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) বোর্ড সভায় এই তথ্য তুলে ধরা হয়।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, পণ্যের ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা ১২ দশমিক ৩৫ শতাংশ বাড়িয়ে ৫০ বিলিয়ন ডলার ও সেবার ক্ষেত্রে ১৫ দশমিক ৩৮ শতাংশ বাড়িয়ে সাড়ে সাত বিলিয়ন ডলার ধরা হয়েছে।

ইপিবির হিসাব অনুসারে, গত অর্থবছরে মোট রপ্তানি হয়েছে ৫১ দশমিক শূন্য সাত বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে পণ্য রপ্তানি হয়েছে ৪৪ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন ডলার। সেবা রপ্তানি হয়েছে ছয় দশমিক ছয় বিলিয়ন ডলার।

বৈঠকের পর সালেহউদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, এই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা যাবে বলে তিনি আশাবাদী।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণে অন্তর্বর্তী সরকার পোশাক শিল্পে চলমান অস্থিরতা, দেশের কয়েকটি স্থানে বন্যা ও আন্তর্জাতিক সংকটের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েছে।'

তিনি আরও বলেন, 'সরকার দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং বিশ্বাস করে যে চলমান পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতি হবে।'

গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বর্তমান সরকার পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে শিগগিরই ব্যবসায়ীদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে পারবে বলে আশা করেন ওই কর্মকর্তা।

বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এ বছরের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা অবাস্তব নয়। তবে এ লক্ষ্য অর্জনে জ্বালানি সরবরাহের পাশাপাশি লজিস্টিক, বন্দর ও পরিবহন সেবা মসৃণ হতে হবে।'

তিনি মনে করেন, বিনিয়োগকারী ও উদ্যোক্তাসহ সংশ্লিষ্ট সবার আস্থা ফিরিয়ে আনতে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো করতে হবে।

একই মত প্রকাশ করেছেন রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্টের চেয়ারম্যান এম এ রাজ্জাক। তিনি বলেন, 'এই লক্ষ্যমাত্রা খুবই বাস্তবসম্মত।' গত বছরের রপ্তানি আয় কত কম ছিল তা বিবেচনায় নিয়ে ১২ দশমিক ৭৪ শতাংশ রপ্তানি প্রবৃদ্ধি অর্জন সহজ।

তিনি আরও বলেন, 'সাধারণত এক বছর কম অর্জনের পর পরের বছর রপ্তানি প্রবৃদ্ধি বেশি হয়। তাই রপ্তানি এই মুহূর্তে ধীর হলেও নতুন লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবসম্মত ও অর্জনযোগ্য।'

শ্রমিক অসন্তোষ ও অন্যান্য কারণে বাংলাদেশে সরবরাহ ব্যবস্থায় চ্যালেঞ্জ আছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

এই বিষয়গুলোর সুরাহা হলে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন অনেকটাই সহজ হবে বলেও মনে করেন তিনি।

ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন ডেইলি স্টারকে জানান, ভুল এড়াতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও বাংলাদেশ ব্যাংকের পাশাপাশি তারাও রিয়েল টাইম এক্সপোর্ট ডেটা সরবরাহ করবে।

রপ্তানির সঠিক প্রতিবেদন নিশ্চিত করতে আগামী অক্টোবর থেকে প্রতি তিন মাস পরপর রপ্তানির তথ্য সংশোধন করবে এনবিআর, কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও ইপিবি।

এনবিআরের কাস্টমস বিভাগের রপ্তানি তথ্য দ্বৈত এন্ট্রির কারণে ইপিবিতে ব্যাপক তথ্য অসামঞ্জস্যের সাম্প্রতিক ঘটনার প্রেক্ষাপটে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

এখন থেকে সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে রপ্তানির তথ্য প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ।

রপ্তানি বাড়ানোর প্রসঙ্গে সম্পর্কে তিনি বলেন, 'সরকার রপ্তানি বাধা দূর করবে। কর সংক্রান্ত রপ্তানি চ্যালেঞ্জ পর্যালোচনা করবে। অন্তর্বর্তী সরকার দেশের রপ্তানি বাণিজ্য বহুমুখীকরণেও কাজ করবে।'

যুক্তরাষ্ট্রে জেনারালাইজড সিস্টেম অব প্রেফারেন্সেস (জিএসপি) ফিরিয়ে আনার বিষয়ে তিনি বলেন, 'এ নিয়ে আলোচনা চলছে। মার্কিন সরকার এ বিষয়ে ইতিবাচক অবস্থানে আছে।'

Comments

The Daily Star  | English

Dhaka College, City College students clash at Science Lab; traffic halted

A clash broke out between the students of Dhaka College and City College in the capital's Science Laboratory area today

34m ago