ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ধীরগতি, বন্দরে কনটেইনার জট

বন্দরের তথ্য অনুসারে, বন্দরের জেটিতে ১৬ কনটেইনারবাহী জাহাজ পণ্য খালাসের অপেক্ষায়। সেসব জাহাজে তিন হাজার ৬৭৪টি টিইইউএস কনটেইনার আছে।
চট্টগ্রাম বন্দর
চট্টগ্রাম বন্দর। ছবি: স্টার ফাইল ফটো

ফেনী ও এর আশেপাশের জেলায় ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির কারণে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যান চলাচলে ধীরগতি হওয়ায় চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য সরবরাহ স্বাভাবিক হচ্ছে না। ফলে দেশের প্রধান সমুদ্র বন্দরটিতে কনটেইনার জট দেখা দিয়েছে।

আজ মঙ্গলবার সংশ্লিষ্টরা পরিস্থিতির একটু উন্নতি হয়েছে দাবি করলেও তা এখনো বন্দরে কনটেইনার খালাস ও জাহাজীকরণে তেমন উন্নতি দেখা যায়নি।

পরিবহন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন, গত রোববার আংশিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

তারা আরও জানিয়েছেন, বন্যায় মহাসড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় রাজধানীর সঙ্গে চট্টগ্রাম বন্দরের স্বাভাবিক যোগাযোগ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এই বন্দর দিয়ে দেশের প্রায় ৯০ শতাংশ বাণিজ্য হয়ে থাকে।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বন্দরে সাধারণত ৩০ থেকে ৩২ হাজার টিইইউএস (২০ ফুটের ইউনিট) কনটেইনার থাকে। তবে এ সংখ্যা আজ মঙ্গলবার এসে দাঁড়িয়েছে ৩৮ হাজার ৯৯৭ টিইইউএস। গতকাল তা ছিল ৩৭ হাজার ৯৯৬ টিইইউএস। গত শুক্রবার ছিল ৩৬ হাজার ৬৪২ টিইইউএস।

বন্দরের তথ্য অনুসারে, বন্দরের জেটিতে ১৬ কনটেইনারবাহী জাহাজ পণ্য খালাসের অপেক্ষায়। সেসব জাহাজে তিন হাজার ৬৭৪টি টিইইউএস কনটেইনার আছে।

একই সঙ্গে রপ্তানি পণ্যের জাহাজীকরণেও ধীরগতি।

মঙ্গলবার রপ্তানি পণ্যবাহী ৩৮ হাজার তিনটি টিইইউএস কনটেইনার জাহাজীকরণ হয়েছে যা গতকাল ছিল চার হাজার ২৪১টি টিইইউএস কনটেইনার। গত শুক্রবার তা ছিল পাঁচ হাজার ২৩১ টিইইউএস।

বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরওয়ার্ডার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাফা) সহ-সভাপতি খায়রুল আলম সুজন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সোমবার সকাল থেকে মহাসড়কে পরিবহন কিছুটা বেড়েছে। গত কয়েকদিনের তুলনায় এবার বেসরকারি ডিপোতে বেশি রপ্তানিমুখী যানবাহন আসছে।'

'পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে কয়েকদিন সময় লাগবে' উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, 'মহাসড়কটি দ্রুত মেরামত করা দরকার। বন্যার কারণে মহাসড়কের অনেক অংশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।'

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের (চবক) সচিব মো. ওমর ফারুক মনে করেন, 'পরিস্থিতির খুব বেশি অবনতি হয়নি।' তার আশা, দুই-তিন দিনের মধ্যে সরবরাহ স্বাভাবিক হয়ে আসবে।

তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে আন্দোলন ও প্রায় সপ্তাহব্যাপী ইন্টারনেট বন্ধের কারণে গত দেড় মাস নানা সমস্যায় ভুগেছি। সাপ্তাহিক ছুটির দিন ও অন্যান্য সরকারি ছুটির দিনে কাজ করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা হচ্ছে।'

ইন্টারনেট বন্ধের সময় বন্দরের কার্যক্রম ম্যানুয়ালি পরিচালিত হতো বলে জানান তিনি।

তার ভাষ্য, গণ-আন্দোলনের সময়ের পর কনটেইনার জট কমলেও চলমান বন্যার কারণে তা আবার দেখা দিচ্ছে। তবে তা এখনো বন্দরের ইয়ার্ডের ধারণ ক্ষমতার মধ্যে আছে।

তিনি আরও বলেন, আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে চালু রাখতে কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক পুরোপুরি চালু হলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি মাহবুবুল আলম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'মহাসড়কের কয়েকটি এলাকা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় আবারও কনটেইনার জট দেখা দিয়েছে। তবে এখন ওইসব এলাকার পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। আশা করছি, অল্প সময়ের মধ্যে মহাসড়কে যাতায়াত নির্বিঘ্ন হবে।'

'দেশের ৮০ থেকে ৯০ শতাংশের বেশি আমদানি-রপ্তানি পণ্য ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক দিয়ে পরিবহন করা হয়। মহাসড়কটি পুরোপুরি চালু না হওয়া পর্যন্ত বন্দরের কার্যক্রম স্বাভাবিক হবে না,' যোগ করেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

Post-August 5 politics: BNP, Jamaat drifting apart

The taunts and barbs leave little room for doubt that the 33-year-old ties have soured. Since the fall of Sheikh Hasina’s government on August 5, BNP and Jamaat-e-Islami leaders have differed in private and in public on various issues, including reforms and election timeframe.

6h ago