হাইকোর্টের রায় প্রকাশ

সরকার কোটার হার কমাতে বা বাড়াতে পারবে

high court
স্টার ফাইল ফটো

সরকারি চাকরির পরীক্ষায় নির্ধারিত কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে মেধা তালিকা থেকে সেসব পদে নিয়োগ দিতে পারবে সরকার।

আজ বৃহস্পতিবার কোটা সংক্রান্ত রিট আবেদন নিয়ে হাইকোর্টের রায়ের মূল অংশ প্রকাশিত হয়েছে।

এতে বলা হয়, 'সরকার চাইলে যেকোনো কোটার অনুপাত বা হার প্রয়োজন অনুযায়ী বাড়াতে বা কমাতে পারবে।'

রায়ে বলা হয়, সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা পদ্ধতি বাতিল করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর জারি করা প্রজ্ঞাপনটি 'অবৈধ, আইনি এখতিয়ার বহির্ভূতভাবে জারি করা এবং এর আইনগত কোনো কার্যকারিতা নেই' বলে গণ্য হবে।

২০১৮ সালের পরিপত্রে বলা হয়েছিল, নবম গ্রেড (আগের প্রথম শ্রেণি) এবং ১০ম থেকে ১৩তম গ্রেডের (আগের দ্বিতীয় শ্রেণি) পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে মেধাতালিকার ভিত্তিতে নিয়োগ দিতে হবে। ওইসব পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি বাতিল করা হয়েছে।

সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ওহিদুল ইসলাম তুষারসহ ছয়জন রিট করেন। প্রাথমিক শুনানি শেষে গত ৫ জুন কোটা বহাল রাখার আদেশ দিয়ে রায় দেন হাইকোর্ট।

ওই দিনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারাদেশে শিক্ষার্থীরা কোটাবিরোধী আন্দোলন শুরু করেন।

২০১৮ সালের সার্কুলার পুনর্বহালের দাবিতে গত ১ জুলাই থেকে তারা পুনরায় আন্দোলন শুরু করেন।

হাইকোর্টের রায় আপিল বিভাগে স্থগিত না হওয়ায় গত ৪ জুলাই থেকে সারাদেশে রাজপথে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। দফায় দফায় ঘোষণা করা হয় অবরোধ কর্মসূচি।

আইন করে কোটাপদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে এখনো শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলছে।

আজ প্রকাশিত রায়ের মূল অংশে বলা হয়েছে, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান/নাতি–নাতনিদের জন্য কোটা পুনর্বহাল করতে বিবাদীদের নির্দেশ দেওয়া হলো। একই সঙ্গে জেলা, নারী, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, উপজাতি–ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর জন্য কোটাসহ, যদি অন্যান্য থাকে, কোটা বজায় রাখতে নির্দেশ দেওয়া হলো।

এ বিষয়ে যত দ্রুত সম্ভব আদেশ পাওয়ার তিন মাসের মধ্যে পরিপত্র জারি করতেও নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।

রায়ের মূল অংশের অনুলিপি হাতে পেয়েছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ সাইফুজ্জামান। তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, হাইকোর্ট কোন গ্রাউন্ডে এই রায় দিয়েছেন, সেটা পূর্ণাঙ্গ কপি পেলে বলা যাবে।

তিনি বলেন, আজ প্রকাশিত রায়ের মূল অংশের কপি নিয়ে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আপিল করা যাবে না।

'হাইকোর্টের রায় সঠিক না ত্রুটিপূর্ণ, তা আপিল বিভাগ যাতে খতিয়ে দেখতে পারেন, সেজন্য রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি প্রয়োজন', বলেন তিনি।

সরকারি চাকরিতে কোটা বহালে হাইকোর্টের রায়ের ওপর গত ১০ জুলাই চার সপ্তাহের স্থিতাবস্থা দেন আপিল বিভাগ।

কয়েকজন আইন বিশেষজ্ঞ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, সর্বোচ্চ আদালতের এই আদেশের অর্থ হলো, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কোটাপদ্ধতি কার্যকর থাকছে না।

Comments