জাম খাবেন যেসব উপকার পেতে

জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাদানকল্প প্রতিষ্ঠান গভর্নমেন্ট কলেজ অব অ্যাপ্লাইড হিউম্যান সায়েন্স কলেজের খাদ্য ও পুষ্টিবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রেহানা বেগম।
জাম খাওয়ার উপকারিতা
ছবি: সংগৃহীত

গ্রীষ্মকালীন ফলের মধ্যে অন্যতম জাম। বছরের এই সময়ে পাকা জাম পাওয়া যায়। ফলটি খেতেও যেমন সুস্বাদু, তেমনই এর রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ।  

জামের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে আমাদের জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাদানকল্প প্রতিষ্ঠান গভর্নমেন্ট কলেজ অব অ্যাপ্লাইড হিউম্যান সায়েন্স কলেজের খাদ্য ও পুষ্টিবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রেহানা বেগম।

রেহানা বেগম বলেন, গরমের মৌসুমে জাম শরীরের জন্য খুবই উপকারী একটি ফল। এতে রয়েছে প্রচুর পুষ্টি উপাদান, যা দেহের বিভিন্ন চাহিদা পূরণ করার পাশাপাশি বিভিন্ন রোগ থেকে দেহকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।

জামের পুষ্টি উপাদান

জামে আছে পর্যাপ্ত পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট, ভিটামিন এ, বি, সি এবং রয়েছে পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, আয়রন ইত্যাদি প্রয়োজনীয় মিনারেলস।

জামের উপকারিতা

  • রসালো ফল জামে জলীয় অংশের পরিমাণ বেশি। এটি খেলে শরীর হাইড্রেটেড থাকে, যা গরমের দিনে খুবই দরকার।
  • গরমের মৌসুমে জ্বর, ঠান্ডা, সর্দি হতে পারে। এ সময়ে পর্যাপ্ত পরিমাণে জাম খেলে এই রোগগুলো প্রতিরোধ করা সম্ভব। কারণ জামে থাকা ভিটামিন সি এবং অন্যান্য উপাদান মৌসুমের আবহাওয়া অনুযায়ী শরীরের ইমিউনিটি সিস্টেম আরও সচল করে তোলে।
  • গরমের মৌসুমে ত্বকে বিভিন্ন সমস্যার দেখা দিতে পারে। যেমন ত্বক রুক্ষ ও শুষ্ক হয়ে যাওয়া,সানবার্ন হওয়া ইত্যাদি। জাম খেলে এসব সমস্যার সমাধান হতে পারে। জামের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন সি ত্বকের জ্বালাপোড়া, ব্রনের মত সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে এবং ত্বক মসৃণ ও উজ্জ্বল করে।
  • জামে আছে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং মাইক্রো ও ম্যাক্রো মিনারেলস, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
  • এই ফলে আছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এ এবং ভিটামিন সি। এই দুই ভিটামিন শরীরে জমে থাকা টক্সিন শরীর থেকে বের করে দিয়ে শরীর সুস্থ রাখে।
  • জাম খেলে পেট ঠান্ডা থাকে এবং হজমশক্তি বাড়ে। বদহজম, কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়রিয়ার মতো সমস্যা প্রতিরোধে সাহায্য করে।
  • জামে রয়েছে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিফ্যাঙ্গাল উপাদান, যা জীবাণু বা ব্যাকটেরিয়াজনিত অসুখ থেকে শরীরকে রক্ষা করে।
  • যাদের শরীরে হিমোগ্লোবিন কম, তাদের জন্য জাম খাওয়া খুবই উপকারী। জামে থাকা মিনারেলস হিমোগ্লোবিন বাড়ায় এবং সব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে সঠিকভাবে রক্ত সঞ্চালনে সাহায্য করে।
  • জামের ডায়াটারি ফাইবার ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। তাই ডায়াবেটিস রোগীরা এ ফলটি খেতে পারেন।
  • জামে আছে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান, যা রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখে এবং ধমনীগুলোকে সঠিকভাবে কাজ করতে সাহায্য করে। ফলে কার্ডিওভাস্কুলার সমস্যা প্রতিরোধ হয়।
  • যাদের খাবারে রুচি নেই তারা এ ফলটি খাদ্যতালিকায় রাখতে পারেন। জামের ভিটামিন এ ও ভিটামিন সি মুখের রুচি ফেরাতে সাহায্য করে।

সতর্কতা

  • খালিপেটে জাম খাওয়া একদমই উচিত নয়। আধাপাকা জাম না খেয়ে পাকা জাম খেতে হবে। খাবার পরপরই ভরাপেটে জাম খেলে অ্যাসিডিটি ও গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হতে পারে।
  • কিডনি রোগীদের জাম খেতে নিষেধ করা হয়। কিডনি রোগীরা এ ফলটি খেতে চাইলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন।

     

Comments

The Daily Star  | English

BNP's meet with interim govt: Roadmap for polls sought

The party also places several demands to Yunus, including removal of 'one or two' members of interim govt, removal of 'partisan judges'

6h ago