কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রাখলে গণবিরোধী বাজেট হবে: বাম জোট

ছবি: সংগৃহীত

বাম গণতান্ত্রিক জোট বলেছে, 'আজিজ-বেনজীর-আনারের ঘটনার মধ্য দিয়ে দুর্বৃত্তায়িত অর্থনীতি ও রাজনীতির চেহারা যতটুকু ফুটে উঠেছে তা ভয়াবহ। বর্তমান সরকারের নীতি ও উপরের মহলের আশ্রয়-প্রশ্রয় ছাড়া এ ধরনের ঘটনা একেবারেই অসম্ভব।'

আজ বুধবার সকাল ১১টায় বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) কেন্দ্রীয় কার্যালয় বাম জোটের সমন্বয়ক ও সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্সের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের সভায় এ কথা বলেন নেতারা।

তারা আরও বলেন, 'দেশের অর্থনৈতিক সংকট মোচনে বর্তমান ব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে আসা, কালো টাকা-পাচারের টাকা-খেলাপি ঋণ উদ্ধার, দুর্নীতি লুটপাট বন্ধ করা, অপ্রয়োজনীয় মেগা প্রকল্প ও বিলাসদ্রব্য আমদানি বন্ধসহ জনস্বার্থকেই প্রাধান্য দেওয়া প্রয়োজন। কিন্তু আমরা দেখলাম বাজেটের আগে সরকার সাধারণ মানুষের সঙ্গে, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে কথা বলার প্রয়োজন অনুভব করল না।'

'তারা ব্যবসায়ী ওই লুটেরাদের সাথে কথা বলে, তাদের স্বার্থেই বাজেট প্রণয়ন করতে যাচ্ছে। এমনিতেই দেশের মানুষ ঋণের জালে আবদ্ধ হয়ে গেছে। আগামী বাজেটে ঋণ করেই এসব ঋণের কিস্তি শোধ করতে হবে। এই অবস্থা বহাল রেখে বাজেট প্রণীত হলে, কালো টাকাকে সাদা করার সুযোগ রাখলে তা শুধু অনৈতিকই হবে না, গণবিরোধী বাজেটও হবে', যোগ করেন তারা।

বাম জোটের নেতারা বলেন, 'নানা সংকটের মধ্যেও দেশের কৃষক-খেতমজুররা উৎপাদন অব্যাহত রেখেছেন। সেই কৃষকরা ফসলের লাভজনক দাম পাচ্ছে না। ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা ও যে দাম ঠিক করা হয়েছে তা প্রকৃত কৃষকরা পাচ্ছে না। কারণ সরাসরি প্রকৃত কৃষকদের কাছ থেকে ধান কেনা হচ্ছে না। শ্রমজীবী মানুষদের জন্য জাতীয় ন্যূনতম মজুরির দাবি থাকলেও তা এখনও নির্ধারণ করা হয়নি।'

সভায় এ পর্যন্ত যাদের নামে দুর্বৃত্তায়নের অভিযোগ উঠেছে তাদের শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি জানানো হয়। টাকা পাচারের সঙ্গে জড়িত, ঋণখেলাপি ও কালো টাকার তালিকা ও শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি জানানো হয়।

সভায় আগামী বাজেটকে সামনে রেখে আইএমএফের সিদ্ধান্ত মেনে, লুটেরাদের স্বার্থে জনগণের কাঁধে আরও করের বোঝা চাপানোর যেসব খবর বেরিয়েছে তাতে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।

সভায় ফিলিস্তিনে গণহত্যা বন্ধ, জাতিসংঘ থেকে ইসরাইলকে বহিষ্কার ও গণহত্যার দায়ে বিচার এবং সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন বন্ধের দাবিতে ১ জুন সারাদেশে যার যার অবস্থান থেকে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ ও ফিলিস্তিনের জনগণের প্রতি সংহতি জানানোর আহ্বান জানানো হয়।

এ ছাড়া দুঃশাসনের অবসান ও জনমনের সংকট মোচনের দাবিতে আগামী ৮ জুন দেশব্যাপী বিক্ষোভ সমাবেশের আহ্বান জানানো হয়।

বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ, বাসদের (মার্কসবাদী) সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানা, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি আব্দুল আলী, কমিউনিস্ট লীগের আব্দুস সাত্তার, মোশারফ হোসেন নান্নু, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির শহিদুল ইসলাম সবুজ, বাসদের (মার্কসবাদী) তসলিমা আক্তার বিউটি এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

Comments

The Daily Star  | English

Yunus meets Chinese ambassador to review China visit, outline next steps

Both sides expressed a shared commitment to transforming discussions into actionable projects across a range of sectors

8h ago