জুলাই-নভেম্বরে স্বাস্থ্য খাতে খরচ অনেক কমেছে

ছবি: সংগৃহীত

সংশোধিত বাজেটে অন্তর্বর্তী সরকার বরাদ্দ বাড়ানোর উদ্যোগ নিলেও চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উন্নয়ন খরচ আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে।

বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) তথ্য অনুসারে, চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে নভেম্বরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ৫৪৪ কোটি টাকা খরচ করেছে।

গত অর্থবছরের একই সময়ে খরচের তুলনায় এক-তৃতীয়াংশ।

২০২৩-২৪ অর্থবছরে স্বাস্থ্যসেবা ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের সমন্বয়ে গঠিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় খরচ করেছে এক হাজার ৪৮০ কোটি টাকা।

১৫ মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মধ্যে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ সবচেয়ে বেশি খরচ করেছে ৩২৫ কোটি টাকা। এটি মোট বরাদ্দ ১১ হাজার ১৫৩ কোটি টাকার মাত্র দুই দশমিক ৯১ শতাংশ।

গত ২৫ নভেম্বর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা শেষে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ সাংবাদিকদের জানান, তারা সংশোধিত বাজেটে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতের বাজেট বাড়ানোর পরিকল্পনা করছেন।

'বাজেটের এক শতাংশেরও কম পায় স্বাস্থ্য খাত'—এ কথা জানিয়ে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান গতকাল রোববার টেলিফোনে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'তারা এই অল্প বরাদ্দও খরচ করতে পারেনি।'

তিনি আরও বলেন, 'যদিও স্বাস্থ্য খাত দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, তবে এর (বাজেট) বাস্তবায়নের হার সবসময়ই সবচেয়ে খারাপ। কেন তারা বছরের পর বছর খরচ করতে পারছে না, তা সরকারের পর্যালোচনা করা উচিত।'

তিনি আরও বলেন, 'দেশের মানুষের একটি বড় অংশ সরকারি স্বাস্থ্য সেবার ওপর নির্ভরশীল। তাই সরকারকে অবশ্যই প্রকৃত কারণ উদঘাটন করতে হবে।'

আইএমইডি সচিব আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'প্রকল্প বাস্তবায়নের হার কম হওয়ার পেছনে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সক্ষমতা কম থাকা একটি সাধারণ কারণ।'

'সঠিক প্রকল্প নির্বাচনের অভাব দুর্বল বাস্তবায়নের জন্য দায়ী' উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'স্বাস্থ্য খাত খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। প্রকল্প নির্বাচনের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে।'

সর্বোচ্চ বরাদ্দ পাওয়া ১৫টির মধ্যে স্থানীয় সরকার বিভাগ খরচ করেছে সর্বোচ্চ সাত হাজার ৭১১ কোটি টাকা। এটি মোট বরাদ্দের ২০ শতাংশ।

তবে তা গত অর্থবছরের তুলনায় কম।

এই বিভাগের অগ্রগতি সম্পর্কে অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, 'স্থানীয় প্রকৌশলীরা তাদের অতীতের সময়সূচী অনুযায়ী কাজ পরিচালনা করায় এটি সম্ভব হয়েছে।'

২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে সরকারের বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) পাওয়া সামগ্রিক তহবিল থেকে ৩৪ হাজার ২১৪ কোটি টাকা খরচ করতে পেরেছে।

বাস্তবায়নের হার দাঁড়িয়েছে ১২ দশমিক ২৯ শতাংশ। গত অন্তত ১৪ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।

২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ১৭ দশমিক শূন্য ছয় শতাংশ বা ৪৬ হাজার ৮৫৭ কোটি টাকা।

তবে অন্তর্বর্তী সরকার চলমান উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন দ্রুত করার পরিকল্পনা করে বলেছে, এটি আরও অর্থনৈতিক মন্দা এড়াতে সহায়তা করবে।

একনেক সভার পর পরিকল্পনা উপদেষ্টা বলেছেন, 'বেসরকারি খাত বিনিয়োগ করছে না। সরকারি খরচ যদি স্থবির হয়ে পড়লে মন্দা আরও বেড়ে যাবে।'

তবে বাস্তবায়নে ধীরগতির জন্য চলমান কৃচ্ছ্রসাধন ও জুলাই-আগস্টের রাজনৈতিক অস্থিরতায় অর্থনৈতিক মন্দা সৃষ্টি হওয়ার কথা উল্লেখ করেন আইএমইডি সচিব।

সার্বিক বাস্তবায়ন কম হওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, 'আমরা শুধু প্রকল্প বাস্তবায়নের তথ্য সংকলন করেছি। ভালোমান ও সময়মতো প্রকল্প বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে মনিটরিং জোরদার করা ছাড়া আমাদের কিছুই করার নেই। আমরা এখনো তা করছি।'

Comments

The Daily Star  | English

Those involved in Ijtema ground deaths won't be spared: home adviser

He also said that those who are involved with the killings must be brought to book.

6m ago