বাজেটে টেকসই জ্বালানিকে গুরুত্ব দিতে হবে: সিপিডি

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ, সিপিডি, খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, বাজেট, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি,
রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টার ইনে ‘পাওয়ার অ্যান্ড এনার্জি সেক্টর ইন দ্য ন্যাশনাল বাজেট ফিন্যান্সিয়াল ইয়ার: ক্যান দ্য প্রপোজড মেজারস অ্যাড্রেস দ্য চ্যালেঞ্জেস?’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে মূল প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। ছবি: স্টার

আগামী অর্থবছরের বাজেটে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন ও অহেতুক উচ্চাভিলাষী বিদ্যুৎ চাহিদার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে কিছু পরিবর্তন ও টেকসইবিরোধী উদ্যোগ গ্রহণের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।

সিপিডি বলছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের প্রস্তাবিত বাজেট টেকসই জ্বালানি ও রূপান্তরের প্রয়োজনীয় বরাদ্দ প্রতিপালনে ব্যর্থ হয়েছে।

'বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের বাজেট টেকসই ও জ্বালানি রূপান্তরের দৃষ্টিকোণ থেকে কাঠামোগত করতে হবে। সঠিক পরিকল্পনা, বরাদ্দ, বাস্তবায়ন ও পর্যবেক্ষণ ছাড়া জ্বালানির স্থায়িত্ব ও রূপান্তর কোনোটাই অর্জন করা যাবে না।'

আজ রোববার রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টার ইনে 'পাওয়ার অ্যান্ড এনার্জি সেক্টর ইন দ্য ন্যাশনাল বাজেট ফিন্যান্সিয়াল ইয়ার: ক্যান দ্য প্রপোজড মেজারস অ্যাড্রেস দ্য চ্যালেঞ্জেস?' শীর্ষক অনুষ্ঠানে উপস্থাপিত এক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়। মূল প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বাজেটে কিছু নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন ঘটলেও বেশ কিছু অঙ্গীকার সেখানে প্রতিফলিত হয়নি। এর মধ্যে রয়েছে ভাড়া ও অদক্ষ বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ, জলবিদ্যুৎ আমদানি ও স্মার্ট গ্রিড।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যেখানে স্বতন্ত্র আর্থিক ব্যবস্থার প্রয়োজন ছিল সেগুলো সমাধান করা হচ্ছে না। এর মধ্যে রয়েছে জীবাশ্ম জ্বালানি ফেজ-আউট, দ্রুত ভাড়াচালিত পাওয়ার প্ল্যান্টগুলো বন্ধ, ক্যাপাসিটি পেমেন্টের অবসান এবং আর্থিক ব্যবস্থার মাধ্যমে নবায়নযোগ্য শক্তিকে উত্সাহিত করা।

সিপিডি বলেছে, নবায়নযোগ্য জ্বালানি-ভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্প্রসারণের দিকে যথেষ্ট মনোযোগ না দেওয়ার প্রবণতা রয়েছে।

'নবায়নযোগ্য শক্তির দ্রুত সম্প্রসারণের জন্য আরও বাজেট বরাদ্দ নিশ্চিত করতে হবে। নবায়নযোগ্য জ্বালানিবান্ধব আর্থিক ও বাজেটে প্রণোদনা প্রস্তাব এবং সুপারিশ করা উচিত।'

সিপিডি আরও বলেছে, নবায়নযোগ্য জ্বালানির উন্নয়ন ও ব্যবহারকে উৎসাহিত করতে ১০০ কোটি টাকার বিশেষ বরাদ্দের প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী। তবে পরিমাণ কম হলেও দেশে কার্বন লক-ইন ভাঙার কাজকে ত্বরান্বিত করবে বলে উদ্যোগটি প্রশংসনীয়।

'ড্রিল করা গ্যাসের বিতরণ এবং সঞ্চালন নেটওয়ার্ককে অগ্রাধিকার দেওয়া প্রশংসনীয়।'

তবে আমদানি করা এলএনজির ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল বাংলাদেশকে বৈশ্বিক মূল্য পরিবর্তন এবং বিভিন্ন দেশের মধ্যে রাজনৈতিক ইস্যুতে আরও ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলতে পারে বলে সতর্ক করেছে সিপিডি।

২০২৪-২৫ অর্থবছরে এলএনজি আমদানিতে সাত হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। গত অর্থবছরে যা ছিল ৬ হাজার কোটি টাকা।

'এলএনজি আমদানি বাড়ানোর পরিবর্তে দেশীয় গ্যাস অনুসন্ধানে অর্থ বরাদ্দ দেওয়া উচিত।'

বাংলাদেশে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত একটি চ্যালেঞ্জিং সময় পার করছে, এজন্য বিদ্যুৎ উৎপাদন, সঞ্চালন ও বিতরণ এবং দেশীয় গ্যাস উৎপাদন, সঞ্চালন সম্পর্কিত যথাযথ আর্থিক, বাজেট এবং নীতি পরিকল্পনা প্রয়োজন

নতুন করে জীবাশ্ম জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনে অর্থায়ন বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে সিপিডি। 'বাজেটে চুক্তির মেয়াদ শেষ করে পুরনো ও ব্যয়বহুল জ্বালানিভিত্তিক এবং বিদ্যুৎকেন্দ্র পর্যায়ক্রমে বন্ধ করতে সরকারের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করা উচিত।'

লোডশেডিং কমানো এবং আরও গ্যাসকূপ খননে বরাদ্দ বাড়ানোর সুপারিশ করেছে সিপিডি।

Comments

The Daily Star  | English
Unhealthy election controversy must be resolved

Unhealthy election controversy must be resolved

Just as the fundamental reforms are necessary for the country, so is an elected government.

12h ago