কারখানার দূষিত পানিতে মাছশূন্য শীতলক্ষ্যা

শীতলক্ষ্যা
গাজীপুরের কাপাসিয়ায় কারখানার দূষিত পানিতে মাছশূন্য হয়ে পড়েছে শীতলক্ষ্যা। ছবি: স্টার

গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার বাঘিয়া গ্রামের সঞ্জিত একসময় শীতলক্ষ্যা নদী থেকে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতেন।

গত ৩-৪ বছর ধরে তিনি নদীর তীরে নারায়ণপুর বাজারে চা বিক্রি করছেন।

তার মতে, কারখানার দূষিত পানির কারণে নদী এখন মাছশূন্য হয়ে পড়েছে।

সঞ্জিত দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বাবা ও আমি শীতলক্ষ্যা থেকে মাছ ধরে জীবন চালিয়েছি। এখন নদীতে মাছ না থাকায় আমার মতো অনেকেই মাছ ধরা ও বিক্রি ছেড়ে দিয়েছে।'

সঞ্জিতের দাদা শুটকি বিক্রেতা অখিল বাবু ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পাঁচ বছর আগে আমি নদী থেকে মাছ ধরে শুঁটকি বানাতাম। এখন মাছ না থাকায় শুঁটকি বানাতে পারি না। শুটকি কিনে এনে বিক্রি করি। কারখানার দূষিত পানির কারণে এই নদী এখন মাছশূন্য।'

গাজীপুর, নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকার আশপাশ দিয়ে বয়ে গেছে শীতলক্ষ্যা নদী। এক সময় এই নদী ছিল কৃষকের চোখের মনি, জেলেদের জীবিকার অবলম্বন, বণিকের পথ।

রুই, কাতলা, কালবাউশ, বোয়াল, আইড়, পুঁটি, চিংড়ি, শৈল, চাপিলা ইত্যাদি মাছে ভরপুর ছিল শীতলক্ষ্যা। এখন এখানে মাছ নেই।

স্থানীয় বরমী বাজারের হোটেল ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'চাষের মাছকে এখন নদীর মাছ বলে বিক্রি করতে হচ্ছে। নদীতে নানান প্রজাতির মাছ মরে ভেসে উঠতে দেখা যায়। এই এলাকার অনেক জেলে বংশের পেশা ছেড়ে রিকশা চালান। অনেকে ইট ভাটা, মাটিকাটা, বা চা বিক্রির কাজ করেন।

কাপাসিয়ার সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আশরাফুল্লাহ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'প্রাকৃতিক জলাশয়ের মাছ কমে যাওয়ার প্রধান কারণ নদী দূষণ। ভালুকা থেকে কলকারখানার ময়লা-আবর্জনা শ্রীপুরের বরমী এলাকার মাটিকাটা নদী ও সুতিয়া নদী হয়ে শীতলক্ষ্যায় আসে। এ নদীর পানি কালো হয়ে গেছে। এতে মাছসহ জলজ প্রাণী প্রায় ধ্বংসের পথে।'

পরিবেশ অধিদপ্তর গাজীপুরের উপপরিচালক নয়ন মিয়া ডেইলি স্টারকে বলেন, 'নদী রক্ষায় কারখানার মালিকদের সচেতন করা হচ্ছে। এ ছাড়াও, দূষণকারী শিল্প প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে পরিবেশ অধিদপ্তরের অভিযান অব্যাহত আছে।'

Comments

The Daily Star  | English
FY2026 Budget,

How the FY2026 budget can make a difference amid challenges

The FY2026 budget must be more than a mere fiscal statement.

19h ago