মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগে ‘সিন্ডিকেট প্রথা’ বন্ধ

মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগে বন্ধ হচ্ছে সিন্ডিকেট প্রথা। কর্মীদের ভিসা পরিচালনার সঙ্গে জড়িত মালয়েশিয়ার ভিসা আবেদনকারী সংস্থাগুলোর পরিষেবা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির সরকার।

আজ শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন নাসুশন ইসমাইল এ কথা জানিয়েছেন। 

তিনি জানান, ই-ভিসার জন্য এখন সরাসরি ইমিগ্রেশন বিভাগের মাইভিসা পোর্টালের মাধ্যমে আবেদন করা যাবে।

মন্ত্রী বলেন, 'বাংলাদেশি অভিবাসী শ্রমিকদের নিয়োগের বিষয়ে সরকার নিয়োগকর্তাদের সক্রিয় আইডি এবং ব্যবহারকারীর ম্যানুয়াল দিয়েছে। ৩১ মার্চের পরে অব্যবহৃত অভিবাসী কর্মীদের কোটা বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।'

সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় প্রতিটি সেক্টরে জনবলের বর্তমান এবং প্রত্যাশিত প্রয়োজনীয়তাও বিবেচনা করছে। এ সিদ্ধান্তের কারণে দেশটির সরকারকে বিদেশি কর্মীদের নেওয়ার জন্য নতুন কোটা খোলার প্রয়োজনীয়তা বিবেচনা করার আগে বাস্তবায়িত উদ্যোগগুলোর কার্যকারিতা মূল্যায়ন করতে এবং দেশে বিদেশি জনশক্তির প্রয়োজনীয়তা ও সক্ষম সঠিকভাবে পরিমাপ করতে হবে। 

গত সপ্তাহে মন্ত্রী সাইফুদ্দিন বলেছিলেন, 'কলিং ভিসা, রেফারেন্সসহ ভিসা হিসেবে পরিচিত, যদি ৩১ মার্চের মধ্যে সম্পন্ন না করা হয় তবে সক্রিয় বিদেশি কর্মী কোটা বাতিল হয়ে যাবে।'

তিনি আরও বলেছিলেন, 'আগামী ১ জুন থেকে পুত্রজায়া এই সক্রিয় কোটার অধীনে বিদেশি শ্রমিকদের দেশে প্রবেশ করতে দেবে না। যে নিয়োগকর্তারা বাতিল কোটার জন্য কর পরিশোধ করেছেন তাদের ফেরত দেওয়া হবে।'

ফেডারেশন অফ মালয়েশিয়ান ম্যানুফ্যাকচারার্স (এফএমএম) এবং মালয়েশিয়ান ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমআইসিসিআই) এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে বলেছে, এটি আকস্মিক এবং ব্যবসাকে অচলাবস্থায় ফেলেছে।

এফএমএম বলেছে, এটি এমন কিছু সংস্থাকে প্রভাবিত করবে যারা তাদের প্রকল্পের সময়সূচি অনুযায়ী পর্যায়ক্রমে তাদের অভিবাসী কর্মী নেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল।

এমআইসিসিআই সতর্ক করে বলেছে, নিয়োগকর্তাদের চুক্তিভিত্তিক বাধ্যবাধকতা পূরণ করতে এবং সময়সীমা পূরণ করতে সমস্যায় পড়তে হবে, যার ফলে আর্থিক ক্ষতি এবং অপারেশনাল বিপত্তি ঘটবে।

মন্ত্রী সাইফুদ্দিন বলেছেন, নিয়োগকর্তারা ৪ লাখ ১২ হাজার ১১ অভিবাসী কর্মী কোটার জন্য লেভি পরিশোধ করেছেন, যার মধ্যে মাত্র ৫৮ দশমিক ১ শতাংশ (২ লাখ ৩৯ হাজার ৩০৫ কোটা) কলিং ভিসা দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেছেন, 'যে নিয়োগকর্তাদের সত্যিকারের বিদেশি কর্মীদের প্রয়োজন তারা তাদের কাজকর্মের জন্য প্রয়োজনীয় শ্রমিক আনতে ত্বরান্বিত করতে সক্ষম হবে।'

এই শ্রমিকদের নেওয়ার সংক্ষিপ্ত সময়সীমা (১ জুনের আগে) শিল্পখাতে কর্মী চাহিদা মেটাতে অভিবাসী শ্রমিকদের নেওয়ার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করা সরকারের সিদ্ধান্তের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ।

এ সিদ্ধান্তটি অভিবাসী কর্মীদের প্রতারণা রোধ করবে। যেমন সম্প্রতি অনেক প্রতিবেদনে অভিবাসী শ্রমিকদের মালয়েশিয়া গিয়ে প্রতারিত হওয়ার ঘটনা উল্লেখ করা হয়েছে, যেখানে কর্মীদের চাকরি দেওয়া হয়নি বলে জানানো হয়েছে। 

বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য সরাসরি ই-ভিসা আবেদনের অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়োগকর্তাদের কোটা ব্যবহার করতে সহায়তা করবে এবং আবেদনগুলোর প্রক্রিয়া এক থেকে দুই কার্যদিবসের মধ্যে সম্পন্ন করা হবে।

Comments

The Daily Star  | English
US dollar price rises

Explanations sought from 13 banks for higher dollar rate

BB issued letters on Dec 19 and the deadline for explanation ends today

2h ago