দুই ব্যবসায়ীকে প্রত্যর্পণে ঢাকার আবেদনের ব্যাখ্যা চায় মালয়েশিয়া
মালয়েশিয়ায় বসবাসরত দুই ব্যবসায়ীকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে বাংলাদেশ যে অনুরোধ করেছে তার ব্যাখ্যা চায় মালয়েশিয়া।
মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন নাসুশন বলেছেন, বেস্টিনেট এসডিএন বিএইচডির প্রতিষ্ঠাতা আমিনুল ইসলাম এবং তার সহযোগী রুহুল আমিনকে প্রত্যর্পণের অনুরোধের যে উদ্দেশ্য বাংলাদেশ তা স্পষ্ট করুক।
মালয়েশিয়ান সংবাদপত্র ফ্রি মালয়েশিয়া টুডের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েঠে, এক অনুষ্ঠানের ফাঁকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, 'আমিনুল ও রুহুলকে কি শুধু তদন্তের অংশ হিসেবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে নাকি তাদের আদালতে অভিযুক্ত করা হবে ঢাকাকে সেটা পরিস্কার করা উচিত।'
প্রত্যর্পণের অনুরোধে উদ্দেশ্য প্রকাশ পায়নি বলেও জানান তিনি।
'আমাদের আগে উদ্দেশ্যটি স্পষ্ট করতে হবে। যদি ঢাকার উদ্দেশ্য হয় তদন্ত করা, তাহলে তাদের উচিত পারস্পরিক আইনি সহায়তা চ্যানেল ব্যবহার করা। আর যদি ঢাকার উদ্দেশ্য হয় এই ব্যক্তিদের আদালতে অভিযুক্ত করা, তাহলে তাদের বলা উচিত এটাই প্রত্যর্পণের উদ্দেশ্য।'
মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ঢাকা যদি তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনে তবেই কেবল তাদের প্রত্যর্পণ করা যেতে পারে।
বাংলাদেশের প্রত্যর্পণের অনুরোধ নিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল ও পুলিশের আইজিপির সঙ্গে এ বিষয়ে তাদের মতামত জানতে আলোচনা করেছেন বলেও জানান তিনি।
আমি বিশ্বাস করি, আইজিপি বিষয়টি সামাল দেবেন এবং বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন।
গত ২৪ অক্টোবর অর্থপাচার, অভিবাসী শ্রমিকদের কাছ থেকে জোর করে অর্থ আদায় ও মানবপাচারের অভিযোগের তদন্তের অংশ হিসেবে দুই ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে অনুরোধ করে বাংলাদেশ পুলিশ।
চিঠিতে বলা হয়, আমিনুল ইসলাম ও রুহুল আমিন নামে ওই দুই ব্যক্তি এমন এক ব্যবস্থায় প্রধান ভূমিকা পালন করেছেন যেখানে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে জালিয়াতির মাধ্যমে অর্থ আদায় করে তাদের 'শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের' সুযোগ করে দিয়েছেন তারা।
বাংলাদেশে জন্ম হলেও মালয়েশিয়ার নাগরিকত্ব পেয়েছেন আমিনুল। অন্যদিকে রুহুল তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। রুহুল ঢাকাভিত্তিক রিক্রুটিং ফার্ম ক্যাথারসিস ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী।
বাংলাদেশ পুলিশ আমিনুলের প্রতিষ্ঠিত কোম্পানি বেস্টিনেট এসডিএনের সফটওয়্যার ব্যবহার সাময়িক বন্ধ রাখারও অনুরোধ জানিয়েছে।
বেস্টিনেট সম্প্রতি মালয়েশিয়া স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে ফরেন ওয়ার্কার্স সেন্ট্রালাইজড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (এফডব্লিউসিএমএস) রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ছয় বছরের চুক্তি করেছে।
গত জুলাই মাসে মালয়েশিয়ার পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটি জানায়, এফডাব্লুসিএমএসে বেস্টিনেটের ২৪ জন অননুমোদিত ব্যবহারকারী বিদেশি কর্মী নেওয়ার আবেদন অনুমোদনের সঙ্গে জড়িত।
২০২২ সালের অডিটর-জেনারেলের প্রতিবেদনেও দেখা যায় কর্মী নেওয়ার পদ্ধতিতে সরকার ও বেস্টিনেটের মধ্যে কোনো আনুষ্ঠানিক চুক্তি ছিল না।
Comments