‘এত মানুষের মৃত্যুর জন্য অব্যবস্থাপনাই দায়ী’

লালমাইয়ের পেরুল উত্তর ইউনিয়নের চরবাড়িয়া গ্রামের বাড়িতে কোরবান আলীর দুই মেয়ের মরদেহবাহী গাড়ি। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজে অগ্নিকাণ্ডে প্রাণ হারানো কুমিল্লার পাঁচ জনের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল শুক্রবার তাদের দাফন করা হয়। 

এদের মধ্যে ব্যবসায়ী কোরবান আলীর দুই মেয়েকে গতকাল বিকেলে লালমাইয়ের পেরুল উত্তর ইউনিয়নের চরবাড়িয়া গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়েছে। আর তার ভায়রার মেয়েকে দাফন করা হয় সদর উপজেলার কোটবাড়ির হাতিগাড়া গ্রামে।

দুই মেয়ের দাফন শেষে কোরবান আলী বলেন, 'আমার দুই মেয়ে ও ভায়রার মেয়ে একইসঙ্গে মারা গেছে। আমার ব্যবসা, এই সম্পদ এখন কার জন্য?'
 
তিনি অভিযোগ করেন, 'নিহতদের কেউই অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যায়নি। তারা সবাই শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা গেছে। দেশে কোনো কিছুরই সঠিক ব্যবস্থাপনা নেই। এভাবে এত মানুষের মৃত্যুর জন্য অব্যবস্থাপনাই দায়ী।'

স্থানীয়রা জানান, কোরবান আলীর বড় মেয়ে ফৌজিয়া আফরিন রিয়া মালয়েশিয়ার ইসলামি ইন্টারন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। গতকাল শুক্রবার বিকেলে মালয়েশিয়ায় ফিরে যাওয়ার কথা ছিল তার। যাওয়ার আগে রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ পড়ুয়া ছোট বোন আলিশা ও সিটি কলেজ পড়ুয়া খালাতো বোন নিমুকে নিয়ে বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজে খেতে গিয়েছিলেন। সেখানে অগ্নিকাণ্ডে একইসঙ্গে মৃত্যুবরণ করেন তারা। 

একই ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক লুৎফুন নাহার করিম লাকী ও তার ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া মেয়ে জান্নাতিন তাজরী নিকিতা। তারা কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার কান্দুঘর গ্রামের গোলাম মহিউদ্দিন খোকার স্ত্রী এবং কন্যা। তাদের এই মর্মান্তিক মৃত্যুতে পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

গোলাম মহিউদ্দিন খোকা দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, গতকাল সন্ধ্যায় রাজধানীর শাহজাহানপুর কবরস্থানে স্ত্রী ও কন্যাকে দাফন করা হয়েছে। এই মুহূর্তে তিনি অসুস্থ, চিকিৎসাধীন আছেন। 

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার রাতে মেয়ে নিকিতাকে নিয়ে বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজে রেস্টুরেন্টে যান লুৎফুন নাহার করিম লাকী। ভর্তিপরীক্ষা থাকায় ছেলেকে বাসায় রেখে গিয়েছিলেন। 

গ্রিন কোজি কটেজে আগুন লাগলে অন্যদের সঙ্গে সেখানে আটকা পড়ে মারা যান মা-মেয়ে।

 

Comments

The Daily Star  | English

The end of exemption?

TRIPS waiver end poses dual challenge: legal and technological

20h ago