বসন্তের মৌমাছি

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার তথ্য অনুসারে, মৌমাছি কেবল বিশ্বের বৃহত্তম মধু উৎপাদনকারীই নয়, বিশ্বের খাদ্য উৎপাদনের এক তৃতীয়াংশ নির্ভর করে মৌমাছির ওপর।
ছবি: হাবিবুর রহমান/স্টার

পঞ্জিকার পাতায় আজ ফাল্গুনের তৃতীয় দিবস। বাংলার প্রকৃতিতে চলছে ঋতুরাজ বসন্তের আবাহন। এই বসন্তের সঙ্গে বাহারি সব ফুলের যেমন সম্পর্ক, তেমন সম্পর্ক এসব ফুল থেকে মধু আহরণকারী নানা প্রজাতির মৌমাছির।

বসন্তে যখন গাছে গাছে ফুলের সমারোহ দেখা যায়, মৌমাছি সে সময়টাতে ফুলের মৌ-রস সংগ্রহ করতে গিয়ে পরাগায়ন ঘটায় পৃথিবীর বিপুল সংখ্যক উদ্ভিদে। ফলে বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা পায় প্রচুর উদ্ভিদ। আর উদ্ভিদের সঙ্গে সরাসরি জড়িয়ে আছে মানুষের জীবন। ফলে উদ্ভিদের সুরক্ষায় রক্ষা পাচ্ছে মানুষসহ আরও অনেক প্রাণীর জীবন। পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় মৌমাছি এভাবে কাজ করে চলছে প্রায় ১৫ কোটি বছর ধরে।

এই ক্ষুদ্র প্রাণীটির সঙ্গে মানুষের সম্পর্কও প্রায় আট হাজার বছরের। তখন থেকেই মানুষ মধু এবং মোমের জন্য এই প্রাণীটির ওপর নির্ভর করত। ষোড়শ শতাব্দীর আগে যখন চিনি সহজলভ্য ছিল না, তখন খাবারদাবার মিষ্টি করতে প্রায় সব ক্ষেত্রেই ছিল মধুর ব্যবহার।

যুক্তরাষ্ট্রের কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক স্কট ম্যাকআর্ট জানাচ্ছেন, মৌমাছির পাশাপাশি পতঙ্গ পৃথিবীর প্রায় ৮৭টি গুরুত্বপূর্ণ ফসলের পরাগসংযোগে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মৌমাছি ও অন্যান্য পতঙ্গ পরাগায়নের মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে ১ লাখ ৭০ হাজার কোটি মার্কিন ডলারের ফসল উৎপাদনে সরাসরি অবদান রাখছে।

ছবি: হাবিবুর রহমান/স্টার

এ কারণেই হয়তো প্রাচীন গ্রিক পুরাণে মৌমাছিকে অভিহিত করা হয়েছে 'ঈশ্বরের দূত' হিসেবে আর মৌ-রস অর্থাৎ মধুকে বলা হয়েছে 'অমৃত'।

আবার জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার তথ্য অনুসারে, মৌমাছি কেবল বিশ্বের বৃহত্তম মধু উৎপাদনকারীই নয়, বিশ্বের খাদ্য উৎপাদনের এক তৃতীয়াংশ নির্ভর করে মৌমাছির ওপর।

তবে সাম্প্রতিক দশকগুলোতে নির্বিচারে বন উজাড়, ফসল উৎপাদনে কীটনাশকের অধিক ব্যবহার ও বায়ু দূষণের মতো কারণগুলোর জন্য মৌমাছির সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে কমে আসছে, যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে বাস্তুতন্ত্রে। বিশেষজ্ঞদের অভিমত, পৃথিবীসহ পুরো মানবজাতির জন্যই এটা হুমকি।

সম্প্রতি খুলনার বিল পাবলা এলাকা থেকে সজনে ফুলের মধু সংগ্রহে ব্যস্ত মৌমাছির ছবিগুলো তুলেছেন দ্য ডেইলি স্টারের আলোকচিত্রী হাবিবুর রহমান

Comments

The Daily Star  | English

Police didn't follow int'l standards while using lethal weapons: IGP

Police failed to adhere to the standards in home, which they have maintained during their UN missions, Mainul Islam said

5h ago