আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০২৩

হাথুরুসিংহে দায় নিলেন আবার নিলেনও না

এই বিশ্বকাপে অন্তত সেমি-ফাইনাল খেলতে চেয়েছিল বাংলাদেশ। অত বড় আশা কোন ভিত্তিতে করা হয়েছিল তা নিয়েই প্রশ্ন জাগতে পারে। সেমি-ফাইনাল তো বহুত দূর। দশ দলের মধ্যে দশ নম্বরে না থাকার বিব্রতকর লড়াই এখন চালাতে হচ্ছে সাকিব আল হাসানদের।

দিল্লি থেকে

হাথুরুসিংহে দায় নিলেন আবার নিলেনও না

হাথুরুসিংহে দায় নিলেন আবার নিলেনও না

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচের আগের দিন চণ্ডিকা হাথুরুসিংহের মুখ থেকে বেরুলো- 'হ্যাঁ আমি ব্যর্থতার দায় নিচ্ছি…।' কিন্তু স্রেফ এইটুকুতে শিরোনাম করলে মুশকিল আছে। কারণ হাথুরুসিংহে এরপরে আরও যা বলছেন তাতে আছে আত্মপক্ষ সমর্থন, আসলে দায় না নেওয়ার নির্যাসও।

এই বিশ্বকাপে অন্তত সেমি-ফাইনাল খেলতে চেয়েছিল বাংলাদেশ। অত বড় আশা কোন ভিত্তিতে করা হয়েছিল তা নিয়েই প্রশ্ন জাগতে পারে। সেমি-ফাইনাল তো বহুত দূর। দশ দলের মধ্যে দশ নম্বরে না থাকার বিব্রতকর লড়াই এখন চালাতে হচ্ছে সাকিব আল হাসানদের।

এমন দলের কোচ, অধিনায়ক, টিম ডিরেক্টর কে বলতে পারবেন যে, 'আমি দায়ি না।' গড়পড়তায় কথায় দায় সবাই নেবেন। টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজনও যেমন সেদিন দায় নিয়েছেন, তবে আবার জানিয়েও দিয়েছেন সিদ্ধান্ত গ্রহণের কোন প্রক্রিয়ায় এবার তাকে রাখা হয়নি।

এই দায় নেওয়ার পরের কথাটুকুতে হাবভাব পুরোই বদলে যায়। বাংলাদেশের কোচ যেমন এক প্রশ্নের জবাবে বললেন,  'হ্যাঁ, আমি দায় নিচ্ছি। যেমন করে দলের বাকিরাও দায় নিবে। সমর্থকদের জন্য হতাশার, আমাদের জন্য হতাশার। আমরা আমাদের সেরা ক্রিকেট খেলিনি।'

হাথুরুসিংহে নিজের কাঁধে দায় চাপাননি, বাকিদের মতো একই কাতারে দাঁড়িয়ে দায় নিয়েছেন। দলের একজন সদস্য হিসেবে সেটা তার নিতেই হতো।

কোচ হিসেবে তিনি তার জায়গায় কাজটা ঠিকঠাক করতে পেরেছেন কিনা এরকম কিছু সুনির্দিষ্ট আলোচনা যখন আসছে তখন তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন আরেকটি পয়েন্ট। যেখানে অনেকেই খুঁজতে পারেন যুক্তি, 'আমি কেবল সাত মাস আগে কাজ শুরু করেছি। এরমধ্যে আমার নিয়ন্ত্রণের বাইরেও কিছু জিনিস ঘটেছে। আমার মনে হয় পর্যালোচনার জন্য এটা আদর্শ মঞ্চ না। এই মুহূর্তে আমার ফোকাস হবে কীভাবে পরের ম্যাচ জিততে পারি। আমরা সব কিছুই ঠিকঠাক করছি। খেলোয়াড়রা ভালো আবহে অনুশীলন করছে। কঠোর পরিশ্রম করছে। প্রত্যেকের ভালো করতে মুখিয়ে আছে আমার মূল চ্যালেঞ্জ হচ্ছে সবাইকে প্রতিটি ম্যাচের আগে সব রকম জায়গা থেকে নির্ভার রাখা।'

গত ফেব্রুয়ারি মাসে কোচ করে আবার ফেরানো হয় হাথুরুসিংহেকে। এক বছরের কম সময়ের মধ্যে বিশ্বকাপ পরিকল্পনাতেও হয় উলট-পালট। যিনি ছিলেন নিয়মিত অধিনায়ক সেই তামিম ইকবাল আচমকা সরে যান, তৈরি হয় চরম নাটকীয়তা। দৃশ্যমানভাবে এর কোন কিছুতে হাত নেই হাথুরুসিংহের। দায় নেওয়ার প্রসঙ্গ এলে এসব তিনি বলতেই পারেন। তবে এতে যে তিনি দায় নেওয়ার অবস্থাই নেই সেটাও স্পষ্ট হয়ে যায়।

বাংলাদেশের কোচ বলেছেন, তার কাজ শুরু হবে মূলত বিশ্বকাপের পর। তাকে যেন বিচার করা হয় সেই সময়টা দিয়ে।

তবে একটা জায়গায় হাথুরুসিংহেকে কাঠগড়ায় তোলা নায্য। এই বিশ্বকাপে ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে রীতিমতো ছেলেখেলা হয়েছে বাংলাদেশ। সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতার জায়গায় থাকায় কোচ ও অধিনায়ক দুজনেই এতে দায়ি।

মেহেদী হাসান মিরাজ যেন ছিল লবনের মতন। সব তরকারিতে তাকে ঢেলে দেওয়ার ফরমুলায় হেঁটেছে দল। মিরাজ তিনে, চারে, পাঁচে বা আটে নানান পজিশনে খেলেছেন। মিরাজকে উপরে তুলতে গিয়ে দ্বিধাগ্রস্ত করে ফেলা হয়েছে ছন্দে থাকা নাজমুল হোসেন শান্ত, তাওহিদ হৃদয়দের।

ব্যাটিং অর্ডারের ব্যাখ্যাহীন এই অদল-বদল নিয়ে প্রশ্নে বরং নিজেদের সিদ্ধান্তের সাফাই গেয়েছেন তিনি, 'এটা অর্ডারের বিষয় না। যেখানেই আসুন যে সময়, যে ওভারে ব্যাট করতে আসুন সেটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।'

টি-টোয়েন্টি ম্যাচে শাফলিং হয় দলের প্রয়োজনে। একটা ওয়ানডে ম্যাচে নিয়মিত শাফলিং কতটা স্বাস্থ্যকর এই প্রশ্নের ব্যাখ্যা মেলেনি। হাথুরুসিংহে তাই দায় নিয়েছেন ঠিকই, তবে ব্যর্থতার জন্য নিজেকে দায়ি করছেন না।

Comments

The Daily Star  | English
tax collection target for IMF loan

Talks with IMF: Consensus likely on exchange rate, revenue issues

The fourth tranche of the instalment was deferred due to disagreements and now talks are going on to release two tranches at once.

10h ago