বাংলাদেশের জিডিপি কমানো প্রসঙ্গে যা বলল আইএমএফ

আইএমএফ
আইএমএফ। ছবি: রয়টার্স

বাংলাদেশে চলমান মূল্যস্ফীতি ও রপ্তানিতে মন্দার পাশাপাশি প্রতিকূল বিশ্ব অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণে দেশটির জিডিপির পূর্বাভাস কমানো হয়েছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)।

গত ১০ অক্টোবর প্রকাশিত জাতিসংঘের আর্থিক সংস্থার 'ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুক'-এ বাংলাদেশের জিডিপির ছয় শতাংশ উল্লেখ করা হয়। তবে গত এপ্রিলে এর পূর্বাভাস ছিল ছয় দশমিক পাঁচ শতাংশ।

সংস্থাটির এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের পরিচালক কৃষ্ণা শ্রীনিবাসন বলেন, বাংলাদেশে পণ্যের দাম বৃদ্ধি ও পণ্যের বৈদেশিক চাহিদা কমার পাশাপাশি বৈশ্বিক অর্থ ব্যবস্থায় কঠোর পরিস্থিতি এখনো রয়ে গেছে।

গত শুক্রবার মরক্কোয় এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক আউটলুক নিয়ে আইএমএফের সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, এই সবই বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির ওপর প্রভাব ফেলছে।

তিনি আরও বলেন, 'এসব কারণেই ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আমরা প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস করেছি ছয় শতাংশ, যা ২০২২-২৩ অর্থবছরের তুলনায় অপরিবর্তিত আছে।'

বাংলাদেশ সরকারের সাত দশমিক পাঁচ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা সম্পর্কে তিনি বলেন, 'আমাদের পূর্বাভাসের তুলনায় দেশগুলোর প্রবৃদ্ধি বেশি হওয়া খুব অস্বাভাবিক কিছু নয়।'

শ্রীনিবাসন বলেন, 'এখন বাংলাদেশ সামষ্টিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় উল্লেখযোগ্য উদ্যোগ নিয়েছে।'

সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা লক্ষ্যমাত্রা ও প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যগুলোর মধ্যে পার্থক্য করা গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতি কমাতে দেশটি তার মুদ্রানীতির অবস্থান কঠোর করেছে এবং বিনিময় হার ব্যবস্থাকে একীভূত করার সময় আরও নমনীয় বিনিময় হারের অনুমতি দিয়েছে।

তার মতে, বাংলাদেশ সরকার একটি বিচক্ষণ আর্থিক নীতি বজায় রেখেছে এবং দরিদ্র ও দুর্বলদের সহায়তার জন্য সরকারি খরচকে আবারো অগ্রাধিকার দিয়েছে।

শ্রীনিবাসন বলেন, 'এই মুহূর্তে সরকারের প্রচেষ্টা সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার দিকে যাচ্ছে। সেই প্রেক্ষাপটে ছয় শতাংশ প্রবৃদ্ধি বেশ যুক্তিসঙ্গত।'

তিনি আরও বলেন, এখন বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা আছে।

তার আশা, অনুকূল জনসংখ্যার কারণে বাংলাদেশ এই সংকট কাটিয়ে উঠবে এবং একটি পূর্ণাঙ্গ কর্মসূচির মাধ্যমে সংস্কারে হাত দেবে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হবে।

'... বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ও অবকাঠামোগত চাহিদা পূরণের জন্য রাজস্ব বাড়ানো। এটি অর্থনীতির উৎপাদনশীলতার সম্ভাবনাকেও বাড়িয়ে তুলবে,' বলেন শ্রীনিবাসন।

আইএমএফের চার দশমিক সাত বিলিয়ন ডলার ঋণের সঙ্গে যুক্ত শর্তগুলোর মধ্যে রাজস্ব বাড়ানোর শর্ত ছিল। এর অংশ হিসেবে ২০২২-২৩ অর্থবছরে কর বাবদ তিন কোটি ৪৫ লাখ টাকা আদায়ের কথা ছিল। তবে সেই লক্ষ্য অর্জন করা যায়নি।

চলতি অর্থবছরে সরকারকে জিডিপির শূন্য দশমিক পাঁচ শতাংশ অতিরিক্ত রাজস্ব আদায় করতে হবে। আইএমএফের প্রতিনিধি দল ঋণ সংক্রান্ত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের পারফরম্যান্স পর্যালোচনা করতে এখন বাংলাদেশে আছে।

শ্রীনিবাসন বলেন, 'সামগ্রিকভাবে আমি মনে করি, ঋণ কর্মসূচির লক্ষ্য পূরণ, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনা ও খুব কঠিন বৈশ্বিক পরিবেশে সামষ্টিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অর্থনীতি ভালো পথে আছে।'

Comments

The Daily Star  | English

Polythene ban: A litmus test for will and eco-innovation

Although Bangladesh became the first country in the world to announce a complete ban on the use of polythene bags in 2002, strict enforcement of the much-lauded initiative has only started taking shape recently.

16h ago