পাকিস্তানের পারফরম্যান্সে ভারতীয়রাও হতাশ!

পাকিস্তানকে উড়িয়ে দিয়েছে ভারত, কিন্তু মানুষের উচ্ছ্বাসের ধরনটা খুব প্রবল নয়। ব্যাপার কী!

পুনে থেকে

পাকিস্তানের পারফরম্যান্সে ভারতীয়রাও হতাশ!

ভারত বনাম পাকিস্তান

ভারত-পাকিস্তান খেলা শেষ হতেই পুনের রাস্তায় বেরিয়ে আমেজ বোঝার চেষ্টা করা গেল। দুয়েকটা পটকার আওয়াজ পেয়ে সেদিকে এগোনোর পর দেখা গেল, বারের সামনে ছোট জটলার মতন। পাকিস্তানকে উড়িয়ে দিয়েছে ভারত, কিন্তু মানুষের উচ্ছ্বাসের ধরনটা খুব প্রবল নয়। ব্যাপার কী!

আগে থেকে নিয়ে আসা পটকাগুলো ফেলে না রাখতেই হয়তো ফুটানো হচ্ছে ছাড়া-ছাড়াভাবে। কিন্তু উৎসব ঠিক জমছে বলে মনে হচ্ছে না। কেন জমছে না বলার অপেক্ষা রাখে না। খেলার ফল সবাই জানেন। সেটা আর পুনরাবৃত্তি করছি না। আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপের আসরে এই নিয়ে ভারত-পাকিস্তানের আটবারের দেখায় জয়ী দল একটাই- ভারত। তবে আগে কখনো কখনো ম্যাচে উত্তেজনা ছিল, রোমাঞ্চ ছিল ভরপুর। সেটা মানুষকেও আবেগের স্রোতে ভাসিয়েছে। এবার তেমন বাড়াবাড়ি রকমের ঢেউ নেই। মনের ওপর দিয়ে কোনো চাপই বয়ে গেল না। মানুষ বড় বিচিত্র প্রাণীই বলতে হয়। যে জিনিস পেতে চায়, সেটা খুব সহজে ধরা দিলে আবার কেমন অস্বস্তিতে ভুগতে থাকে।

শনিবার রাত হওয়ায় পাব, বার কিংবা গলির ফুটপাতের ধারের দোকান- সবখানেই মানুষ গমগম করছে। সবারই একটু রাত করে বাড়ি ফেরার পরিকল্পনা। পরের দিন ছুটি থাকায় কারোরই তাড়া বিশেষ নেই।

এমন রাতে ভারত-পাকিস্তান খেলা বেশ আদর্শ সূচি। আবার ভারত জিতেছেও। সব মিলিয়ে সোনায় সোহাগা অবস্থা হওয়া উচিত তাদের। কিন্তু খেলাটা এত একপেশে হয়েছে যে আনন্দটাও যেন পানসে।

পুনের একটি বহুজাতিক সংস্থায় কাজ করেন সরেন তিওয়ারি। বিরাট কোহলির জার্সি গায়ে এক পাবে খেলা দেখতে গিয়েছিলেন। ভারত জেতায় খুশি হলেও মন ভরছে না তার, 'অফিস থেকে আগেভাগে বেরিয়ে গিয়েছিলাম। সন্ধ্যায় বন্ধুদের নিয়ে এখানে এসেছিলাম খেলা দেখতে। আমরা আসার আগেই খেলার ফল অনেকটা নির্ধারিত হয়ে যায়। ভালো লাগছে ভারত জিতেছে। কিন্তু খেলাটা আরেকটু জমলে ভালো লাগত।'

একই কথা দীপিকা তালওয়েকারের। বন্ধুদের সঙ্গে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ দেখতে হুল্লোড় করতে বেরিয়েছিলেন তিনিও। তার ধারণার বাইরে অনেক আগে খেলা শেষ হয়ে যাওয়ায় বাকি সময় কী করবেন ভেবে পাচ্ছেন না, 'একটা তুমুল লড়াই হবে ভেবেছিলাম। অনেক আগেই শেষ হয়ে গেল। ভারত যেভাবে খেলল তা লা জবাব। এত দ্রুত ফুরিয়ে যাবে ভাবিনি। আমাদের আরও আনন্দ করার ইচ্ছা ছিল।'

ভোরে চেন্নাই থেকে পুনে এসে নামার পর এখানকার জনপদ খুব একটা দেখার সুযোগ হয়নি। পুনে বিমানবন্দর থেকে অনেকটা দূরে একটা অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়া করেছি বিশ্বকাপ কাভার করতে আসা কয়েকজন সংবাদকর্মী। সেখান থেকে মহারাষ্ট্র ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন কিছুটা কাছে। পুনেতে মনে হলো ভিড়ভাট্টা কম, বড় রাস্তার ধারেও প্রচুর বৃক্ষসারি জানান দেয় এখানে সবুজের সমারোহ আছে বিস্তর। তবে হাইওয়েতে মেট্রোরেলের কাজ চলমান থাকায় ধুলোবালিরও অভাব নেই।

শীত আসি আসি করছে, পুনের হাওয়ায় গরমের আঁচ নেই। ক্রিকেটের গরমও ঠিক সেভাবে লাগছে না। খেলা তো জমতে হবে। পাকিস্তানকে হারিয়ে ভারত রোববারই এসে যাবে পুনেতে। আগামী বৃহস্পতিবার এখানে বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ। এখানকার সমর্থকরা উৎসবের প্রস্তুতি নিতে পারছেন আরেকবার। সেই ম্যাচটা জমবে তো?

Comments

The Daily Star  | English

What are we building after dismantling the AL regime?

Democracy does not seem to be our focus today. Because if it were, then shouldn’t we have been talking about elections more?

6h ago