আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০২৩

ভারতকে কাঁদিয়ে চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া

শিরোপার লড়াইয়ে ভারতের দেওয়া ২৪১ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে অস্ট্রেলিয়া।

ভারতকে কাঁদিয়ে চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া

শিরোপার লড়াইয়ে ভারতের দেওয়া ২৪১ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে অস্ট্রেলিয়া।
ছবি: রয়টার্স

ভারতকে কাঁদিয়ে চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া

ব্যাটারদের ব্যর্থতায় স্কোরবোর্ডে বড় পুঁজি তুলতে পারেনি ভারত। তবে মাঝারী লক্ষ্য দিয়েও শুরুতে অস্ট্রেলিয়াকে বেশ চাপে ফেলে দিয়েছিল তারা। পাওয়ার প্লেতেই তুলে নেয় তিন উইকেট। তাও দলীয় ৪৭ রানে। কিন্তু স্বাগতিকদের গল্প এইটুকুই। বাকীটা লিখেন ট্রাভিস হেড। সঙ্গী হিসেবে পান মার্নাস লাবুশেনকে। অসাধারণ এক সেঞ্চুরি তুলে অজিদের জয় থেকে মাত্র দুই রান দূরে থাকতে আউট হন এই ওপেনার।

রোববার আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে ভারতকে ৬ উইকেটে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় অস্ট্রেলিয়া। টস হেরে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ২৪১ রান করে স্বাগতিকরা। জবাবে ৪২ বল হাতে রেখে জয়ের বন্দরে নোঙ্গর করে অজিরা।

এদিন শুরুটা চেনা রূপেই করেছিলেন হেড। প্রথম ওভারেই দুটি চার। কিন্তু পরের ওভারে ওয়ার্নার আউট হয়ে গেলে দেখেশুনে খেলতে শুরু করেন। এরপর মিচেল মার্শ ও স্টিভ স্মিথের বিদায়ে তো আরও কোণঠাসা হয়ে যান। এক পর্যায়ে ৪০ বলে ছিল ২৮ রান। তবে ধীরে ধীরে খোলস খুলে শেষ পর্যন্ত ১২০ বলে ১৩৭  রান করে মোহাম্মদ সিরাজের শিকার হন এই ব্যাটার। ১৫টি চার ও ৪টি ছক্কায় সাজান নিজের ইনিংস।

দারুণ ইনিংস খেলেছেন লাবুশেনও। হেডের সঙ্গে ২১৫ বলে ১৯২ রানের জুটি গড়েন। শেষ পর্যন্ত ১১০ বলে ৫৮ রানে অপরাজিত থাকেন এই ব্যাটার। 

ভারতের পক্ষে ৯ ওভার বল করে ৪৩ রানের খরচায় ২টি উইকেট পান জাসপ্রিত বুমরাহ। একটি করে উইকেট নেন মোহাম্মদ শামি ও মোহাম্মদ সিরাজ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ভারত: ৫০ ওভারে ২৪০ (রোহিত ৪৭, শুবমান ৪, কোহলি ৫৪, শ্রেয়াস ৪, রাহুল ৬৬, জাদেজা ৯, সূর্যকুমার ১৮, শামি ৬, বুমরাহ ১, কুলদিপ ১০, সিরাজ ৯*; স্টার্ক ৩/৫৫, হ্যাজলউড ২/৬০, ম্যাক্সওয়েল ১/৩৫, কামিন্স ২/৩৪, জ্যাম্পা ১/৪৪, মার্শ ০/৫, হেড ০/৪)।

অস্ট্রেলিয়া: ৪৩ ওভারে ২৪১/৪ (ওয়ার্নার ৭, হেড ১৩৭, মার্শ ১৫, স্মিথ ৪, লাবুশেন ৫৮*, ম্যাক্সওয়েল ২*; বুমরাহ ২/৪৩, শামি ১/৪৭, জাদেজা ০/৪৩, কুলদীপ ০/৫৬, সিরাজ ১/৪৫)।

ফলাফল: অস্ট্রেলিয়া ৬ উইকেটে জয়ী।  

লাবুশেনের হাফসেঞ্চুরি

সাবলীল ব্যাটিংয়ে এক প্রান্তে রানের গতিটা সচল রাখেন ট্রাভিস হেড। তবে সাবধানী ব্যাটিংয়ে অপর প্রান্তটা আগলে রাখেন মার্নাস লাবুশেন। চাপের মুখে হেডকে সঙ্গ দিয়ে দলের ইনিংস মেরামত করেন। নিজেও তুলে নিয়েছেন হাফসেঞ্চুরি। মোহাম্মদ সিরাজের বলে বাউন্ডারি মেরে ৯৯ বলে ছুঁয়েছেন ফিফটি।

৪১ ওভার শেষে অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ৩ উইকেটে ২৩০ রান। ১১৫ বলে ১২৯ রান করে উইকেটে আছেন হেড। ১০৪ বলে ৫৭ রানে ব্যাটিং করছেন লাবুশেন।  

দুইশ রান পূর্ণ অস্ট্রেলিয়ার

ট্রাভিস হেড ও মার্নাস লাবুশেনের ব্যাটে জয়ের সুবাস পাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া। অসাধারণ ব্যাটিংয়ে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন এ দুই ব্যাটার। শুরুর দিকে দুই ব্যাটারই দেখে খেললেও হেড ফিরেছেন চেনা রূপে। খোলস ভেঙে রীতিমতো ঝড় তুলছেন। তাতে সহজেই দুইশত রান পূর্ণ হয়েছে দলটির। ২১৯ বলেই আসে দলের দ্বিশতক।

৩৭ ওভার শেষে অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ৩ উইকেটে ২০৪ রান। ১০৭ বলে ১১৭ রান করে উইকেটে আছেন হেড। লাবুশেন ৮৮ বলে ব্যাটিং করছেন ৪৩ রানে।  

হেডের শতরান

চোটের কারণে শুরুতে দিতে পারেননি। চোট কাটিয়ে উঠতে উঠতে আসরের প্রায় অর্ধেক শেষ। কিন্তু তারপরও ট্রাভিস হেডে আস্থা রেখেছিল অস্ট্রেলিয়া। আর কেন রেখেছিল তার প্রমাণ দিলেন ফাইনাল ম্যাচে। অসাধারণ এক সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন এই ওপেনার। ৯৫ বলে আসে তার এই শতক। যেখানে ১৪টি চার ও ১টি ছক্কা মেরেছেন এই ব্যাটার।

অথচ পাওয়ার প্লেতে দলীয় ৪৭ রানে তিন উইকেট হারিয়ে বিপদে ছিল দলটি। সেখান থেকে মার্নাস লাবুশেনের সঙ্গে জুটি বেঁধে দলকে উদ্ধার করেন। শুরুতে কিছুটা ব্যাকফুটে ছিলেন। তবে ধীরে ধীরে খোলস খুলে চেনা রূপে ফেরেন এই ব্যাটার। বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচে এটা সপ্তম সেঞ্চুরি।

৩৫ ওভার শেষে অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ৩ উইকেটে ১৯২ রান। ৯৯ বলে ১০৭ রান করে উইকেটে আছেন হেড। ৮৪ বলে ৪১ রানে ব্যাটিং করছেন লাবুশেন। 

হেড-লাবুশেন জুটির সেঞ্চুরি

পাওয়ার প্লেতেই তিন উইকেট হারিয়ে বড় চাপে পড়েছিল অস্ট্রেলিয়া। সেখান থেকে দলকে টেনে তোলেন ট্রাভিস হেড ও মার্নাস লাবুশেন। নির্ভরতার প্রতীক হয়ে দুই ব্যাটারই করছেন দারুণ ব্যাটিং। এরমধ্যেই শতরানের জুটি গড়েছেন তিনি। ১১৯ বলে এসেছে চতুর্থ উইকেট জুটির সেঞ্চুরি।

২৮ ওভার শেষে অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ৩ উইকেটে ১৪৮ রান। ৭৪ বলে ৭১ রান করে উইকেটে আছেন হেড। লাবুশেন ৬১ বলে ব্যাটিং করছেন ৩৪ রানে।

হেডের ফিফটি

চাপের মুখে শুরু থেকেই দারুণ ব্যাটিং করে যাচ্ছেন ট্রাভিস হেড। দলীয় ৪৭ রানে তিন ব্যাটারকে হারিয়ে বিপদে পড়া দলকে উদ্ধার করেন মার্নাস লাবুশেনের সঙ্গে পঞ্চাশোর্ধ্ব জুটি গড়ে। নিয়মিত বাউন্ডারি মেরে সচল রেখেছেন রানের চাকা। এবার নিজেও তুলে নিয়েছেন ব্যক্তিগত ফিফটি। ৫৮ বলে ছুঁয়েছেন নিজের পঞ্চাশ। এ সময়ে ৬টি চার ও ১টি ছক্কা মেরেছেন তিনি।

২২ ওভার শেষে অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ৩ উইকেটে ১১৭ রান। হেড ৫১ ও লাবুশেন ২৩ রানে ব্যাটিং করছেন।

জুটির ফিফটি, অস্ট্রেলিয়ার দলীয় শতক

দলীয় ৪৭ রানেই প্রথম সারির তিন ব্যাটারকে হারিয়ে বড় চাপে পড়ে অস্ট্রেলিয়া। এরপর মার্নাস লাবুশেনকে নিয়ে দলের হাল ধরেছেন ট্রাভিস হেড। ইনিংস মেরামত করে এরমধ্যেই এ জুটি পাড় করেছে পঞ্চাশ রান। ৭০ বলে এসেছে চতুর্থ উইকেট জুটির ফিফটি। যেখানে হেডের অবদান ৩২ রান, লাবুশেনের ১২। বাকি ৬ রান এসেছে অতিরিক্তর খাত থেকে।

এছাড়া দলীয় শতকও পূরণ করেছে অস্ট্রেলিয়া। ১১৫ বলে এসেছে দলীয় সেঞ্চুরি। 

২০ ওভার শেষে অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ৩ উইকেটে ১০৪ রান। ট্রাভিস হেড খেলছেন ৫৪ বলে ৪৪ রানে। ৩৯ বলে ১৭ রান নিয়ে ব্যাটিং করছেন মার্নাস লাবুশেন।

বুমরাহর দ্বিতীয় শিকার স্মিথ

অসাধারণ বোলিংয়ে অস্ট্রেলিয়াকে চেপে ধরেছেন ভারতের বোলাররা। শুরুটা মোহাম্মদ শামি করলেও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছেন জাসপ্রিত বুমরাহ। স্মিথকে ফিরিয়ে দিয়েছেন তিনি। তার স্লোয়ারে লাইন মিস করে প্যাডে লাগলে আবেদনে সাড়া দেন আম্পায়ার। তবে রিভিউ নিলে বেঁচে যেতেন স্মিথ। কারণ রিপ্লেতে দেখা গিয়েছে ইমপ্যাক্ট ছিল বাইরে। ৯ বলে ৪ রান করেন স্মিথ।

৭ ওভার শেষে অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ৩ উইকেটে ৪৭ রান। ট্রাভিস হেড ১৫ বলে ১০ রান করেছেন। নতুন ব্যাটার মার্নাস লাবুশেন এখনও কোনো বল মোকাবেলা করেননি।

মার্শকে ফেরালেন বুমরাহ

ডেভিড ওয়ার্নারকে শুরুতে হারালেও আগ্রাসনে কমতি ছিল না অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটারএর। ট্রাভিস হেডের সঙ্গে উইকেটে নেমে আক্রমণাত্মকভাবেই শুরু করেন। একটি করে চার ও ছক্কা মেরে রানের গতি বাড়ান দ্রুত। তবে খুব বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি তিনি। জাসপ্রিত বুমরাহ শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরেছেন এই ব্যাটার।

অফস্টাম্পের বেশ বাইরের বলে শর্ট বলে জায়গায় দাঁড়িয়ে ব্যাট চালিয়েছিলেন মার্শ। কিন্তু ব্যাটের নিচের দিকের কানায় লেগে চলে যায় উইকেটরক্ষক লোকেশ রাহুলের হাতে। ফলে ১৫ বলে ১৫ রান করে ফিরতে হয় মার্শকে।

পাঁচ ওভার শেষে অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ২ উইকেটে ৪১ রান। ট্রাভিস হেড ৯ বলে ৮ রানে ব্যাটিং করছেন। নতুন ব্যাটার স্টিভ স্মিথ ৩ বল খেলে কোনো রান করতে পারেননি।

ওয়ার্নারকে ফিরিয়ে প্রথম আঘাত শামির

জাসপ্রিত বুমরাহর করা ইনিংসের প্রথম বলেই ফিরতে পারতেন ডেভিড ওয়ার্নার। স্লিপে ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন। কিন্তু প্রথম স্লিপ ও দ্বিতীয় স্লিপের মাঝ দিয়ে উল্টো চার হয়ে যায়। কেউই বল ধরার চেষ্টা করেননি। তবে বড় ক্ষতি করার আগেই ওয়ার্নারকে ফিরিয়েছেন মোহাম্মদ শামি।

চলতি আসরে জাদুকরী ছন্দে থাকা এই পেসার ওয়াইড দিয়ে শুরু করলেও পরের বলেই ফেরান ওয়ার্নারকে। অফস্টাম্পের বেশ বাইরে রাখা বল যা ছেড়ে দিলে ওয়াইডও পেতে পারতো অস্ট্রেলিয়া, কিন্তু এগিয়ে  খেলতে গিয়ে বিপদ ডেকে আনেন অজি ওপেনার। ব্যাটের কানায় লেগে সোজা চলে যায় স্লিপে দাঁড়ানো বিরাট কোহলির হাতে। ৩ বলে ৭ রান করেন ওয়ার্নার।

দুই ওভার শেষে অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ১ উইকেটে ২৮ রান। ট্রাভিস হেড ৫ বলে ৮ রানে ব্যাটিং করছেন। নতুন ব্যাটার মিচেল মার্শ ৩ বলে ৫ রান নিয়ে খেলছেন।

অস্ট্রেলিয়াকে ২৪১ রানের লক্ষ্য দিল ভারত

ব্যাটিংয়ে উড়ন্ত শুরুর ধারা বজায় রাখতে পারল না ভারত। বোলিংয়ে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়াল অস্ট্রেলিয়া। দলটির তিন পেসার মিচেল স্টার্ক, জশ হ্যাজেলউড ও অধিনায়ক প্যাট কামিন্স রাখলেন অগ্রণী ভূমিকা। তাদেরকে যোগ্য সঙ্গ দিলেন দুই স্পিনার অ্যাডাম জ্যাম্পা ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েল।

রোববার আহমেদাবাদের বিশ্বকাপের ফাইনালে টস হেরে আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ২৪০ রানে অলআউট হয়েছে ভারত। অর্থাৎ শিরোপা নির্ধারণী লড়াইয়ে অস্ট্রেলিয়া পেয়েছে ২৪১ রানের লক্ষ্য।

বিশ্বকাপের আয়োজক ভারতের পক্ষে ১০৭ বলে সর্বোচ্চ ৬৬ রানের ইনিংস খেলেন লোকেশ রাহুল। তার পাশাপাশি ফিফটি পান বিরাট কোহলি। তিনি ৬৩ বলে করেন ৫৪ রান। এছাড়া, ওপেনিংয়ে নামা অধিনায়ক রোহিত শর্মার আগ্রাসী ব্যাট থেকে আসে ৩১ বলে ৪৭ রান। বাকিরা কেউ সুবিধা করতে পারেননি। এই তিনজন বাদে দুই অঙ্কে পৌঁছান কেবল সূর্যকুমার যাদব ও কুলদীপ যাদব।

অজিদের হয়ে ৫৫ রানে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন বাঁহাতি পেসার স্টার্ক। দুই ডানহাতি পেসার কামিন্স ও হ্যাজেলউড দুটি করে উইকেট পান যথাক্রমে ৩৪ ও ৬০ রান খরচায়। তিন ফাস্ট বোলারই পূরণ করেন নিজেদের ১০ ওভারের কোটা।

 

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ভারত: ৫০ ওভারে ২৪০ (রোহিত ৪৭, শুবমান ৪, কোহলি ৫৪, শ্রেয়াস ৪, রাহুল ৬৬, জাদেজা ৯, সূর্যকুমার ১৮, শামি ৬, বুমরাহ ১, কুলদীপ ১০, সিরাজ ৯*; স্টার্ক ৩/৫৫, হ্যাজেলউড ২/৬০, ম্যাক্সওয়েল ১/৩৫, কামিন্স ২/৩৪, জ্যাম্পা ১/৪৪, মার্শ ০/৫, হেড ০/৪)।

ভারত অলআউট

ইনিংসের শেষ বলে অলআউট হলো ভারত। ডাবল নেওয়ার চেষ্টায় রানআউট হয়ে গেলেন কুলদীপ যাদব। ১৮ বলে তার সংগ্রহ ১০ রান। মোহাম্মদ সিরাজ অপরাজিত থাকলেন ৮ বলে ৯ রানে।

সূর্যকুমার হতে পারলেন না ত্রাতা

ভারতের বিপদের দিনে ত্রাতা হতে ব্যর্থ হলেন সূর্যকুমার যাদব। ধুঁকতে ধুঁকতে ২৮ বলে ১৮ রান করে থামলেন তিনি। তাকে উইকেটরক্ষক জশ ইংলিসের পঞ্চম ক্যাচ বানিয়ে বিদায় করলেন জশ হ্যাজেলউড।

স্লোয়ার শর্ট বলে সূর্যকুমারকে বিপাকে ফেলছিলেন হ্যাজেলউড। শেষমেশ ওই ডেলিভারিতেই উইকেট খোয়ালেন এই ডানহাতি ব্যাটার। গ্লাভসে লেগে উপরে উঠে যাওয়া বল অনায়াসে লুফে নিলেন ইংলিস।

৪৮ ওভার শেষে ভারতের রান ৯ উইকেটে ২২৭। ক্রিজে আছেন শেষ দুই ব্যাটার কুলদীপ যাদব ও মোহাম্মদ সিরাজ।

শেষ ওভারে উইকেট পেলেন জ্যাম্পা

নিজের দশ ওভারের কোটার শেষটিতে উইকেটের দেখা পেলেন অস্ট্রেলিয়ার লেগ স্পিনার অ্যাডাম জ্যাম্পা। জাসপ্রিত বুমরাহকে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলে তিনি ধরলেন এবারের আসরে ২৩তম শিকার।

জ্যাম্পা ভাগ বসালেন মুত্তিয়া মুরালিধরনের রেকর্ডে। বিশ্বকাপের এক আসরে স্পিনারদের মধ্যে সর্বোচ্চ উইকেট নেওয়ার কীর্তি এখন যৌথভাবে দুজনের। ২০০৭ সালে শ্রীলঙ্কার কিংবদন্তি মুরালিধরনও নিয়েছিলেন ২৩ উইকেট। 

চার ওভারের মধ্যে স্কোরবোর্ডে ১১ রান যোগ করতে ৩ উইকেট পড়ল ভারতের। ৪৫ ওভার শেষে তাদের রান ৮ উইকেটে ২১৫। সূর্যকুমার যাদব ২৩ বলে ১৪ ও কুলদীপ যাদব ১ বলে ১ রানে খেলছেন তিনি।

শামিকে ফিরিয়ে তৃতীয় শিকার ধরলেন স্টার্ক

ভারতের ইনিংসে একের পর এক আঘাত করছে অস্ট্রেলিয়া। নিজের পরপর দুই ওভারে দুই শিকার ধরলেন মিচেল স্টার্ক। লোকেশ রাহুলের পর তিনি ফেরালেন মোহাম্মদ শামিকে।

১০ বলে শামির রান ৬। জায়গায় দাঁড়িয়ে বড় শট খেলতে গিয়ে উইকেটের পেছনে জশ ইংলিসের গ্লাভসবন্দি হলেন তিনি।

৪৪ ওভার শেষে ভারতের রান ৭ উইকেটে ২১৩ রান। ক্রিজে আছেন সূর্যকুমার যাদব ২০ বলে ১৩ ও জাসপ্রিত বুমরাহ ১ বলে ১ রানে। অস্ট্রেলিয়াকে চ্যালেঞ্জিং পুঁজি ছুঁড়ে দেওয়া এই মুহূর্তে ভীষণ কঠিন মনে হচ্ছে ভারতের জন্য।

মন্থর ফিফটির পর স্টার্কের শিকার রাহুল

মন্থর ফিফটির পর লোকেশ রাহুল পারলেন না পুষিয়ে দিতে। মিচেল স্টার্কের রাউন্ড দ্য উইকেটে অসাধারণ এক ডেলিভারিতে পরাস্ত হলেন তিনি। অফ স্টাম্পের বাইরের বল তার ব্যাট ছুঁয়ে জমা পড়ল উইকেটরক্ষকের গ্লাভসে।

১০৭ বলে ৬৬ রান করে থামলেন রাহুল। তার ইনিংসে কেবল একটি চার। আর কোনো বাউন্ডারি নেই। তার বিদায়ে ভাঙল ৩৪ বলে ২৫ রানের ষষ্ঠ উইকেট জুটি। রাহুলকে মাঠছাড়া করে স্টার্ক ধরলেন দ্বিতীয় শিকার। তাতে লোয়ার অর্ডার বেরিয়ে গেল ভারতের।

৪২ ওভার শেষে ভারতের সংগ্রহ ৬ উইকেটে ২০৭ রান। ক্রিজে শেষ স্বীকৃত ব্যাটার সূর্যকুমার যাদবের সঙ্গে আছেন মোহাম্মদ শামি।

ভারতের দলীয় দুইশ

প্রথম শতরান আসতে লেগেছিল স্রেফ ৯৪ বল। পরের একশ এলো অনেক মন্থর গতিতে। সেজন্য লাগল ১৫১ বল।

৪১ ওভার শেষে ভারতের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ২০০ রান। লোকেশ রাহুল ১০৬ বলে ৬৬ ও সূর্যকুমার যাদব ১২ বলে ৯ রানের খেলছেন।

৪০ ওভার শেষে ভারতের স্কোর ১৯৭/৫

৪০ ওভার শেষে ভারতের রান ৫ উইকেটে ১৯৭ রান। শেষ ১০ ওভারে তারা ১ উইকেট হারিয়ে এনেছে ৪৫ রান। ক্রিজে আছেন লোকেশ রাহুল ১০২ বলে ৬৪ ও সূর্যকুমার যাদব ১২ বলে ৮ রানে।

এই দুজনই ভারতের ব্যাটিং লাইনআপের শেষ স্বীকৃত ব্যাটার। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে লড়াইয়ের পুঁজি পেতে তাদের দিকেই তাকিয়ে থাকবে দলটি।

জাদেজার বিদায়ে ভারত হারাল পঞ্চম উইকেট

প্যাট কামিন্সের পর আক্রমণে ফিরেই উইকেট শিকারে যোগ দিলেন অস্ট্রেলিয়ার পেসার জশ হ্যাজেলউড। ভারত হারাল পঞ্চম উইকেট। রবীন্দ্র জাদেজা আউট হলেন ২২ বলে ৯ রানে। থামল ৪৪ বলে ৩০ রানের সম্ভাবনাময় জুটি।

আগের বলেই রিভিউ নিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু রিপ্লেতে দেখা যায়, বল উইকেটরক্ষক জশ ইংলিসের গ্লাভসে জমা পড়ার আগে জাদেজার ব্যাট ছুঁয়ে যায়নি। তবে পরেরবার আর বাঁচলেন না এই বাঁহাতি ব্যাটার। রাউন্ড দ্য উইকেটে করা হ্যাজেলউডের ফুল লেংথ ডেলিভারি তার ব্যাটের কানায় লেগে গেল ইংলিসেরই কাছে।

৩৬ ওভার শেষে ভারতের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ১৭৮ রান। ক্রিজে ৮৯ বলে ৫৫ রান করা লোকেশ রাহুলের সঙ্গে আছেন সূর্যকুমার যাদব। তিনি ১ বলে খেলে এখনও রানের খাতা খুলতে পারেননি। তারা দুজনই ভারতের শেষ স্বীকৃত ব্যাটার।

মন্থর ব্যাটিংয়ে রাহুলের হাফসেঞ্চুরি

পঞ্চম ব্যাটার হিসেবে উইকেটে গেছেন লোকেশ রাহুল। তখন ভারতের রান ছিল ৩ উইকেটে ৮১। চাপ থাকায় শুরু থেকেই সতর্কতার সঙ্গে ব্যাটিং করছেন তিনি। বাউন্ডারি মারার চেয়ে সিঙ্গেল-ডাবলস নেওয়ার দিকেই মনোযোগ তার।

মুখোমুখি হওয়া ৮৬ বলে ফিফটি তুলে নিলেন রাহুল। তার ইনিংসে চার মাত্র একটি। ভীষণ মন্থর গতির ফিফটির পর এবার চালিয়ে খেলার চ্যালেঞ্জ তার সামনে। তাছাড়া, প্রথম সারির চার ব্যাটার ইতোমধ্যে সাজঘরে ফেরায় এখন তার কাঁধেই বড় দায়িত্ব।

৩৫ ওভার শেষে ভারতের রান ৪ উইকেটে ১৭৩। ক্রিজে রাহুলের সঙ্গী ২০ বলে ৯ রান করা রবীন্দ্র জাদেজা।

অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের ঘুরে দাঁড়ানো

১-১০ ওভার: ৮০ রান, ২ উইকেট (শুবমান গিলকে মিচেল স্টার্ক, রোহিত শর্মাকে গ্লেন ম্যাক্সওয়েল)

১১-২০ ওভার: ৩৫ রান, ১ উইকেট (শ্রেয়াস আইয়ারকে প্যাট কামিন্স)

২১-৩০ ওভার: ৩৭ রান, ১ উইকেট (বিরাট কোহলিকে প্যাট কামিন্স)

৩০ ওভার শেষে ভারতের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ১৫২ রান। ক্রিজে লোকেশ রাহুলের সঙ্গে আছেন রবীন্দ্র জাদেজা।

কোহলিকে বিদায় করে জুটি ভাঙলেন কামিন্স

দলীয় ৮১ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলার পর ভারত মূলত এগিয়ে যাচ্ছিল বিরাট কোহলির ব্যাটে। অপর প্রান্তে লোকেশ রাহুল খোলসে ঢুকে থাকলেও তাকে সঙ্গ দিচ্ছিলেন। সাবধানী ব্যাটিংয়ে ইনিংস মেরামতও করছিলেন তারা। তবে কোহলিকে বিদায় করে অস্ট্রেলিয়াকে জরুরি ব্রেক থ্রু দিলেন দ্বিতীয় স্পেলে ফেরা অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। দিনের শুরু থেকেই অসাধারণ বোলিং করে যাওয়ার দ্বিতীয় পুরস্কার পেলেন তিনি।

কামিন্সের শর্ট বলে জায়গায় দাঁড়িয়ে থার্ডম্যানের দিকে খেলতে চেয়েছিলেন কোহলি। তবে দুর্ভাগ্য তার, ব্যাটে লেগে মাটিতে ড্রপ খেয়ে বল চলে গেল স্টাম্পে। মুহূর্তেই পুরো স্টেডিয়ামে নেমে আসলো পিনপতন নীরবতা। ভাঙল ১০৯ বল স্থায়ী ৬৭ রানের জুটি। ৬৩ বলে ৪টি চারের সাহায্যে ৫৪ রান করলেন কোহলি।

২৯ ওভার শেষে ভারতের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ১৪৯ রান। রাহুল উইকেটে আছেন ৬৭ বলে ৩৭ রানে। নতুন ব্যাটার রবীন্দ্র জাদেজা ৩ বল খেলে কোনো এখনও রান করতে পারেননি।

চাপের মুখে কোহলির ফিফটি

শ্রেয়াস আইয়ারের বিদায়ের পর খোলসে ঢুকে গেছেন বিরাট কোহলি। ভারতের ইনিংসে শেষ ১৬ ওভারে আসেনি কোনো বাউন্ডারি। তবে নিয়মিত এক-দুই রান নিয়ে রানের গতি সচল রাখার চেষ্টা করছেন তিনি। ৫৬ বলে হাফসেঞ্চুরি পূরণ করলেন কোহলি। বিশ্বকাপে এই নিয়ে টানা পাঁচটি পঞ্চাশোর্ধ্ব স্কোর করলেন তিনি। তার সঙ্গী লোকেশ রাহুল খেলছেন বেশ ধীর গতিতে।

২৬ ওভার শেষে ভারতের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ১৩৫ রান। কোহলি ৫৭ বলে ৫০ রানে ব্যাট করছেন। রাহুল আছেন ৫৮ বলে ২৮ রানে। সতর্ক থেকে জুটি গড়ার মাধ্যমে ইনিংস পুনর্গঠনের লক্ষ্যে আছেন দুজন।

রাহুল-কোহলির জুটির ফিফটি

অধিনায়ক রোহিত শর্মা ও শ্রেয়াস আইয়ারের দ্রুত বিদায়ের পর বেশ সাবধানী ব্যাটিং করছেন বিরাট কোহলি ও লোকেশ রাহুল। পাওয়ার প্লের পর আর কোনো বাউন্ডারিই মারেননি তারা। ধীর গতিতে ব্যাটিং করে অবশ্য ইতোমধ্যেই জুটির ফিফটি তুলে নিয়েছেন তারা। ৮৮ বলে আসে এই জুটির পঞ্চাশ রান।

২৫ ওভার শেষে ভারতের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ১৩১ রান। তিন নম্বর ব্যাটার হিসেবে ক্রিজে যাওয়া বিরাট কোহলি খেলছেন ৫৫ বলে ৪৯ রানে। পাঁচে নামা লোকেশ রাহুল আছেন ৫৪ বলে ২৫ রানে।

ভারতের দলীয় একশ

৩ উইকেট পড়ে যাওয়ায় ভারতের রানের গতি কমে এসেছে। পাওয়ার প্লে শেষের পর সবশেষ ৬ ওভারে কোনো বাউন্ডারি মারতে পারেননি দলটির ব্যাটাররা। ষোড়শ ওভারে দলীয় একশ পূরণ হলো স্বাগতিকদের। ৩৯ বলে এসেছিল প্রথম পঞ্চাশ, পরের পঞ্চাশ এলো ৫৫ বলে।

১৬ ওভার শেষে স্বাগতিকদের রান ৩ উইকেটে ১০১। তিন নম্বর ব্যাটার হিসেবে ক্রিজে যাওয়া বিরাট কোহলি খেলছেন ৩৩ বলে ৩৪ রানে। পাঁচে নামা লোকেশ রাহুল আছেন ২২ বলে ১০ রানে। সতর্ক থেকে জুটি গড়ার মাধ্যমে ইনিংস পুনর্গঠনের লক্ষ্যে আছেন দুজন।

কামিন্সের আঘাতে কুপোকাত শ্রেয়াস

স্কোরবোর্ডে মাত্র ৫ রান যোগ হতে আরও একটি উইকেট হারিয়ে ফেলল ভারত। গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের মতো নিজের দ্বিতীয় ওভারেই উইকেটের দেখা পেলেন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। আগের দুই ম্যাচে ঝড়ো সেঞ্চুরি করা শ্রেয়াস আইয়ার ফাইনালে জ্বলে উঠতে ব্যর্থ হলেন।

ব্যাক অব অ্যা লেংথ ডেলিভারিতে খোঁচা মেরে উইকেটরক্ষক জশ ইংলিসের গ্লাভসবন্দি হলেন শ্রেয়াস। চার মেরে রানের খাতা খোলা এই ব্যাটার থামলেন ৩ বলে ৪ রানেই। ৮১ রানে পতন হলো ভারতের তৃতীয় উইকেটের। পরপর দুই ওভারে সাজঘরে ফিরলেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা ও শ্রেয়াস। শুরুতে মার খাওয়ার পর দারুণভাবে লড়াইয়ে ফিরে এলো অস্ট্রেলিয়া।

১১ ওভার শেষে ভারতের রান ৩ উইকেটে ৮২। আগ্রাসী শুরুর পর বিশ্বকাপের ফাইনালে বেশ চাপে পড়েছে স্বাগতিকরা। ক্রিজে ২২ বলে ২৪ রানে খেলছেন বিরাট কোহলি। তার সঙ্গে আছেন মাত্রই নামা লোকেশ রাহুল। তাদের কাঁধে এখন দায়িত্ব প্রতিরোধ গড়ে দলকে এগিয়ে নেওয়ার।

আগ্রাসী রোহিতকে বিদায় করলেন ম্যাক্সওয়েল

প্রথম পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে গুরুত্বপূর্ণ উইকেট তুলে নিলেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মাকে বিদায় করে অস্ট্রেলিয়াকে উল্লাসে মাতালেন তিনি। কভার থেকে পেছনের দিকে দৌড়ে ডাইভ দিয়ে অসাধারণ ক্যাচ নিলেন ট্রাভিস হেড।

দুই পেসার মিচেল স্টার্ক ও জশ হ্যাজেলউড সুবিধা করতে পারছেন না দেখে অষ্টম ওভারেই বোলিংয়ে পরিবর্তন আনলেন অজি দলনেতা প্যাট কামিন্স। আক্রমণে নিয়ে এলেন স্পিন অলরাউন্ডার গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে। তিনি নিজের দ্বিতীয় ওভারেই আউট করলেন বিপজ্জনক রোহিতকে। ৩১ বলে ৪ চার ও ৩ ছক্কায় রোহিতের রান ৪৭। ভাঙল ৩২ বলে ৪৬ রানের জুটি।

ঠিক আগের দুই বলেই ম্যাক্সওয়েলকে যথাক্রমে ছক্কা ও চার মেরেছিলেন রোহিত। কিন্তু প্রতিশোধ নিয়ে শেষ হাসি হাসলেন ম্যাক্সওয়েলই। ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে উড়িয়ে মারলেও ব্যাটে-বলে সংযোগ হলো না ঠিকঠাক। অনেক উঁচুতে উঠে যাওয়া বল সম্ভাব্য সেরা কায়দাতেই লুফে নিলেন হেড।

১০ ওভার শেষে ভারতের রান ২ উইকেটে ৮০ রান। ক্রিজে ২০ বলে ২৩ রান করা বিরাট কোহলির সঙ্গী শ্রেয়াস আইয়ার।

আগ্রাসী রোহিত, কোহলিও আক্রমণাত্মক মেজাজে

ইনিংসের প্রথম থেকেই আগ্রাসী ঢঙে আছেন রোহিত শর্মা। বাউন্ডারি আনছেন নিয়মিত। শুবমান গিলের বিদায়ের পর ক্রিজে নামা বিরাট কোহলিও তার সঙ্গে আক্রমণে যোগ দিলেন। সপ্তম ওভারে মিচেল স্টার্ককে মারলেন টানা তিনটি চার। প্রথমটি মিড অনের উপর দিয়ে উড়িয়ে মেরে, পরেরটি নিখুঁত টাইমিংয়ে ব্যাটের ফেস ওপেন করে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্ট দিয়ে এবং শেষটি অসাধারণ ড্রাইভে কভার দিয়ে।

অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের ওপর চড়াও হয়ে সাত ওভারের মধ্যেই দলীয় পঞ্চাশ পূর্ণ করল ভারত। মাত্র ৩৯ বল লাগল সেজন্য। ওই ওভার শেষে ভারতের রান ১ উইকেটে ৫৪। রোহিত ২২ বলে ৩৩ ও কোহলি ১৩ বলে ১৬ রানে খেলছেন।

গিলকে শুরুতেই ফেরালেন স্টার্ক

পঞ্চম ওভারেই অস্ট্রেলিয়াকে উইকেট এনে দিলেন মিচেল স্টার্ক। ওপেনার শুবমান গিলের বিদায়ে ভাঙল ভারতের ৩০ রানের উদ্বোধনী জুটি। ৭ বলে ৪ রান করে আউট হলেন তিনি।

কিছুটা শর্ট লেংথের ডেলিভারি ঠিকমতো পুল করতে পারলেন না গিল। বল চলে গেল সোজা মিড অনে। অনায়াসে ক্যাচ লুফে নিলেন অ্যাডাম জ্যাম্পা।

পাঁচ ওভার শেষে ভারতের রান ১ উইকেটে ৩৭। ২০ বলে ৩১ রান নিয়ে আক্রমণাত্মক মেজাজে থাকা রোহিত শর্মার সঙ্গী মাত্রই নামা বিরাট কোহলি।

রোহিতের ব্যাটে ভারতের দারুণ শুরু

ভারতের ইনিংসের প্রথম বাউন্ডারি এলো ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে। জশ হ্যজেলউডের করা দ্বিতীয় বলে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে ড্রাইভ করে কভার দিয়ে চার মারলেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা। পরের বলে আবারও চার। এবার ব্যাক অব অ্যা লেংথ ডেলিভারিতে মিডউইকেট দিয়ে সীমানার বাইরে বল পাঠালেন তিনি।

এরপর অস্ট্রেলিয়া তৈরি করল দুটি হাফ চান্স। তৃতীয় ওভারে বাঁহাতি পেসার মিচেল স্টার্কের একটু ভেতরে ঢোকা বল আরেক ওপেনার শুবমান গিলের ব্যাটের কানায় লেগে গেল পেছনে। কিন্তু বল পড়ে উইকেটরক্ষক ও একমাত্র স্লিপের মাঝামাঝি জায়গার একটু সামনে। পরের ওভারে হ্যাজেলউডের শর্ট বল পুল করলেন রোহিত। কিন্তু পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে ছিল না। ডিপ স্কয়ার লেগে সীমানার কাছে থাকা ট্রাভিস হেড ডাইভ দিয়েও বলের নাগাল পেলেন না।

ওই ওভারেরই শেষ দুই বলে হ্যাজেলউডের ওপর চড়াও হলেন রোহিত। ছক্কার পর হাঁকালেন চার।

চার ওভার শেষে ভারতের রান বিনা উইকেটে ৩০ রান। তাদের শুরুটা হয়েছে দারুণ। ক্রিজে ১৯ বলে ২৫ রান করা আগ্রাসী রোহিতের সঙ্গে গিল খেলছেন ৫ বলে ৪ রানে।

একাদশ

কোনো দলই তাদের সেমিফাইনালের একাদশে পরিবর্তন আনেনি। প্রথম সেমিতে মুম্বাইতে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়েছিল ভারত। দ্বিতীয় সেমিতে কলকাতায় দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া।

ভারত:
রোহিত শর্মা (অধিনায়ক), শুবমান গিল, বিরাট কোহলি, শ্রেয়াস আইয়ার, লোকেশ রাহুল (উইকেটরক্ষক), সূর্যকুমার যাদব, রবীন্দ্র জাদেজা, মোহাম্মদ শামি, জাসপ্রিত বুমরাহ, কুলদীপ যাদব, মোহাম্মদ সিরাজ।

অস্ট্রেলিয়া:
ট্রাভিস হেড, ডেভিড ওয়ার্নার, মিচেল মার্শ, স্টিভেন স্মিথ, মারনাস লাবুশেন, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, জশ ইংলিস (উইকেটরক্ষক), মিচেল স্টার্ক, প্যাট কামিন্স (অধিনায়ক), অ্যাডাম জ্যাম্পা, জশ হ্যাজেলউড।

পিচ

পিচ রিপোর্টে ভারতের সাবেক ক্রিকেটার রবি শাস্ত্রী বলেছেন, উইকেট দেখে শুষ্ক মনে হয়েছে তার কাছে। স্পিনারদের সুবিধাও দেখছেন তিনি। অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন তারকা ম্যাথু হেইডেন বলেছেন, লেগ স্পিনার অ্যাডাম জ্যাম্পা হতে পারেন অজিদের এক্স-ফ্যাক্টর।

টস

ফাইনালের মহাগুরুত্বপূর্ণ টস জিতে নিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। তিনি আগে বেছে নিয়েছেন ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত। অর্থাৎ ভারতকে আগে নামতে হবে ব্যাটিংয়ে। তাদের অধিনায়ক রোহিত শর্মা বলেছেন, টস জিতলে তিনি ব্যাটিংয়েরই সিদ্ধান্ত নিতেন।

ভারত নাকি অস্ট্রেলিয়া?

প্রায় দেড় মাসব্যাপী বিশ্বকাপ এখন শেষদিনে। অপেক্ষা কেবল একটি প্রশ্নের উত্তর জানার। কে হবে চ্যাম্পিয়ন, রোহিত শর্মার ভারত নাকি প্যাট কামিন্সের অস্ট্রেলিয়া?

রোববার আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হবে দুই ক্রিকেট পরাশক্তি। ১ লাখ ৩২ হাজার আসনবিশিষ্ট স্টেডিয়ামে ফাইনাল শুরু হবে বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে।

অস্ট্রেলিয়া রেকর্ড পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন। আর স্বাগতিক ভারত শিরোপা উঁচিয়ে ধরেছে দুবার। দুই দলের সামনেই এই পরিসংখ্যানকে আরও সমৃদ্ধ করার সুযোগ।

২০ বছর পর ফের বিশ্বমঞ্চের ফাইনালে পরস্পরকে মোকাবিলা করবে দল দুটি। ২০০৩ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে হয়েছিল তাদের লড়াই। সেবার একপেশে ম্যাচে ১২৫ রানের বিশাল ব্যবধানে জিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল অজিরা। তাদের ২ উইকেটে ৩৫৯ রানের জবাবে ভারত গুটিয়ে গিয়েছিল ২৩৪ রানেই।

মুখোমুখি লড়াইয়ে কার জয় কতটি?

  • ভারত-অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে ওয়ানডেতে ১৫০ লড়াইয়ে অস্ট্রেলিয়া জিতেছে ৮৩ বার, ভারত জিতেছে ৫৭ বার। বাকি ১০ ম্যাচে কোনো ফল আসেনি।
  • বিশ্বকাপে দুই দল মুখোমুখি হয়েছে ১৩ বার। তাতে ভারতের ৫ জয়ের বিপরীতে ৮ জয় নিয়ে এগিয়ে আছে অস্ট্রেলিয়া।
  • ভারতের মাঠে মুখোমুখি লড়াইয়ে দুই দলই সমানে সমান। ৭১ ম্যাচের মধ্যে দুই দলই জিতেছে ৩৩টি করে ম্যাচ। বাকি পাঁচটি ম্যাচে কোনো ফল হয়নি।

ফাইনালের পথে কে কেমন করেছে?

ভারত

গ্রুপ পর্ব

অক্টোবর ০৮: চেন্নাইতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৬ উইকেটের জয়।

অক্টোবর ১১: দিল্লিতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৮ উইকেটের জয়।

অক্টোবর ১৪: আহমেদাবাদে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৭ উইকেটের জয়।

অক্টোবর ১৯: পুনেতে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৭ উইকেটের জয়।

অক্টোবর ২২: ধর্মশালায় নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৪ উইকেটের জয়।

অক্টোবর ২৯: লক্ষ্ণৌতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১০০ রানের জয়।

নভেম্বর ০২: মুম্বাইতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৩০২ রানের জয়।

নভেম্বর ০৫: কলকাতায় দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ২৪৩ রানের জয়।

নভেম্বর ১২: বেঙ্গালুরুতে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ১৬০ রানের জয়।

সেমিফাইনাল

নভেম্বর ১৫: মুম্বাইতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৭০ রানের জয়।

অস্ট্রেলিয়া

গ্রুপ পর্ব 

অক্টোবর ০৮:  চেন্নাইতে ভারতের কাছে ৬ উইকেটে হার।

অক্টোবর ১২: লক্ষ্ণৌতে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ১৩৪ রানে হার।

অক্টোবর ১৬: লক্ষ্ণৌতে শ্রীলঙ্কাকার বিপক্ষে ৫ উইকেটের জয়।

অক্টোবর ২০: বেঙ্গালুরুতে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৬২ রানের জয়।

অক্টোবর ২৫: দিল্লিতে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ৩০৯ রানের জয়।

অক্টোবর ২৮: ধর্মশালায় নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৫ রানের জয়।

নভেম্বর ০৪: আহমেদাবাদে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৩৩ রানের জয়।

নভেম্বর ০৭: মুম্বাইতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৩ উইকেটের জয়।

নভেম্বর ১১: পুনেতে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৮ উইকেটের জয়।

সেমিফাইনাল

নভেম্বর ১৬: কলকাতায় দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৩ উইকেটের জয়।

Comments