সরকার দাম নির্ধারণের পর আলুর দাম আরও বেড়েছে

আলু, আলুর দাম, মূল্যস্ফীতি, টিসিবি, কারওয়ান বাজার, বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন,
অলঙ্করণ: বিপ্লব চক্রবর্তী

আলুর দাম নিম্ন আয়ের মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাওয়ায় গত বৃহস্পতিবার সরকার আলুর দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে। শুধু তাই নয়, দাম নিয়ন্ত্রণে বাজার অভিযানও শুরু করেছে। তারপরও আলুর দাম কমছে না, বরং বাড়ছে।

আগে থেকেই ঢাকার বিভিন্ন বাজারে ৪২ থেকে ৪৫ টাকা দরে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছিল। এরপর গত ১৪ সেপ্টেম্বর খুচরা বাজারে প্রতি কেজি আলুর দাম ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা নির্ধারণ করে দেয় সরকার। কিন্তু, সরকার দাম নির্ধারণ করার পর দাম না কমে বরং দিন দিন বাড়ছে। বর্তমানে প্রতি কেজি আলু খুচরা পর্যায়ে ৪৩ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

রাষ্ট্রায়ত্ত ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য অনুযায়ী, গতকাল প্রতি কেজি আলু বিক্রি হয়েছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকায়, যা ২০২০ সালের অক্টোবরের পর সর্বোচ্চ।

পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, সরবরাহ না বাড়িয়ে আলুর দাম কমানো সম্ভব নয়।

কারওয়ান বাজারের পাইকারি বিক্রেতা মোহাম্মদ সবুর বলেন, 'এভাবে দাম কমানো যাবে না।' তিনি জানান, তিনি তার চাহিদার অর্ধেক পরিমান আলু পাচ্ছেন।

সবুর বলেন, বাজার দাম বাড়ার পেছনে এটা অন্যতম প্রধান একটি কারণ।

রাজধানীর ফার্মগেটের পশ্চিম তেজতুরি বাজার এলাকার খুচরা বিক্রেতা হুমায়ুন কবির বলেন, গত সপ্তাহে ৬৫ কেজি ওজনের এক বস্তা আলুর দাম ছিল ২ হাজার ৯০০ টাকা, গতকাল তার দাম হয়েছে ৩ হাজার টাকা।

তিনি প্রতি কেজি আলু বিক্রি করছেন ৪৬-৫০ টাকা দরে।

তিনি বলেন, 'পাইকারি পর্যায়ে দাম বাড়ছে- তাই আমারও দাম বাড়ানো ছাড়া কিছুই করার নেই। তবে খুব শিগগির আলুর দাম কমার সম্ভাবনা কম।'

এদিকে সরকার নির্ধারিত দাম ঘোষণার পর মুন্সীগঞ্জ জেলার বিভিন্ন কোল্ড স্টোরেজে আলু বিক্রি প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে, এখানে থেকে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ আলুর সরবরাহ আসে।

মুন্সীগঞ্জের পূর্ব মুক্তারপুরের টঙ্গীবাড়ী কোল্ড স্টোরেজের ব্যবস্থাপক আব্দুল মালেক জানান, গত দুই দিন ধরে তাদের কোল্ড স্টোরেজ কোন ব্যবসায়ী আলু বিক্রি করেননি।

'হয়তো তারা আলু বিক্রি করতে পারছে না অথবা করতে চায়নি,' বলেন তিনি।

বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী জানান, গত ১৩ সেপ্টেম্বর কোল্ড স্টোরেজ থেকে আলু বিক্রি হচ্ছিল ৩৬ থেকে ৩৭ টাকা কেজি দরে। এর তিন দিন পর জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে ব্যবসায়ীদের প্রতি কেজি আলু ২৬ থেকে ২৭ টাকা দরে বিক্রির নির্দেশ দেয়।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, ভোক্তা অধিদপ্তরের নির্দেশিত দামে আলু বিক্রি করলে তাদের ব্যাপক লোকসান হবে, বলেন তিনি।

'এ কারণে অনেক ব্যবসায়ী আলু বিক্রি বন্ধ করে দিয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন,' বলেন মোস্তফা আজাদ চৌধুরী।

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, মুক্তবাজার অর্থনীতির ধারণার সঙ্গে মূল্য নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি আসলে যায় না।

তিনি বলেন, সরকারের উচিত একটি আনুষ্ঠানিক সাপ্লাই চেইন তৈরি করা। তাহলে অনেক সমস্যার সমাধান হবে এবং ভোক্তারাও উপকৃত হবেন।

সরকার বর্তমানে বাজার নিয়ন্ত্রণে যত অভিযান পরিচালনা করবে ও ব্যবসায়ীদের জরিমানা করবে পণ্যের দাম তত বাড়বে বলে মনে করেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English
August 5 declared as July Mass Uprising Day

Govt declares August 5 as ‘July Mass Uprising Day’

It also declared August 8 as "New Bangladesh Day" and July 16 as "Shaheed Abu Sayed Day"

35m ago