ব্রহ্মপুত্রপাড়ের ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দি

শুক্রবার বিকেলে উলিপুর উপজেলার চর বেগমগঞ্জের চিত্র। ছবি: এস দিলীপ রায়/স্টার

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বেড়ে যাওয়ায় কুড়িগ্রামের চিলমারী ও উলিপুর উপজেলার ৪০টি চর এবং দ্বীপচর প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন ৩০ হাজারের বেশি মানুষ। অনেকে ঘর-বাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে গেছেন।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেওয়া তথ্য বলছে, পাহাড়ি ঢলের কারণে বৃহস্পতিবার রাত থেকেই ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বাড়ছে। আজ শনিবার সকাল ৬টায় নদের পানি প্রায় বিপৎসীমা ছুঁয়েছে। পানি আরও বাড়লে উলিপুর উপজেলার সাহেবের আলগা ও বেগমগঞ্জ এবং চিলমারী উপজেলার নয়ারহাট ইউনিয়নের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে।

এমন পরিস্থিতিতে দুর্গম চরের বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে চলে আসার আহ্বান জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

আজ সকালে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এখন ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপৎসীমার ২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আপাতত পানির লেভেল স্থির আছে। নদের পানি বেড়ে যাওয়ায় বিভিন্ন জায়গায় ভাঙনও দেখা দিয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোতে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা চলছে।'

তবে ব্রহ্মপুত্র ছাড়া দুধকুমার, তিস্তা ও ধরলাসহ অন্যন্য নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে আছে বলে জানান আব্দুল্লাহ আল মামুন।

উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বাবলু মিয়া আজ সকালে ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এই ইউনিয়নের তিন-চতুর্থাংশ এলাকায় পানি ঢুকে পড়েছে। ১০-১২ হাজার মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় আছেন। দুর্গম এলাকায় আটকে পড়া অনেককে নিরাপদে নিয়ে আসা হচ্ছে। পানিবন্দি মানুষের মাঝে শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানি বিতরণের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।'

চর বেগমগঞ্জের বাসিন্দা খাদিজা খাতুনের (৪৮) ভাষ্য, বৃহস্পতিবার রাতেই তাদের বাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে। এখন বাড়ির পাশে উঁচু জায়গায় গরু-ছাগল ও হাঁস-মুরগি নিয়ে অবস্থান করছেন তারা। রান্না করতে না পারায় শুকনো খাবার খেয়ে দিন কাটছে তাদের।

একই চরের মৌসুমি বেগম জানান, এখন সন্তানদের নিয়ে ঘরের চৌকির ওপর অবস্থান নিয়ে আছেন তারা। এরমধ্যে ৮টি মুরগি পানিতে ভেসে গেছে। পানি আরেকটু বাড়লে তাদের পক্ষে বাড়িতে থাকা সম্ভব হবে না।

কুড়িগ্রামের ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুল হাই সরকার ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পানিবন্দি পরিবারগুলোর মাঝে শুকনো খাবার ও চাল বিতরণ করা হচ্ছে। সংকট মোকাবিলায় তাদের সব ধরনের প্রস্তুতি আছে।'

Comments

The Daily Star  | English

'Rab destroyed secret detention centres post August 5'

Finds Commission of Inquiry on Enforced Disappearances

1h ago