বিশ্বকে বাংলাদেশের গণহত্যার কথা জানাবে প্রামাণ্যচিত্র ‘বে অব ব্লাড’
'গণহত্যা নিছকই হত্যাকাণ্ড নয়। বাংলাদেশে গণহত্যার মাধ্যমে ইতিহাসের এক অধ্যায়কে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার চেষ্টা চালানো হয়েছে। কিন্তু আদতে তা সফল হয়নি। বিশ্বে গণহত্যা নিয়ে প্রচুর আলোচনা হয়, কিন্তু বাংলাদেশের মাটিতে স্মরণকালের ভয়াবহতম যে গণহত্যা হয়েছে তা পৃথিবীর বেশিরভাগ মানুষ জানে না। কারণ এ চিত্রটি তাদের কাছে তুলে ধরা হয়নি।'
আজ শনিবার বিকেলে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে গণহত্যাভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র 'বে অব ব্লাডের' উদ্বোধনী প্রদর্শনী উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এমনটিই বলেছেন প্রামাণ্যচিত্রটির নির্মাতা ও ভারতের প্রখ্যাত তথ্যচিত্র পরিচালক কৃষ্ণেন্দু বোস।
৯৫ মিনিটের 'বে অব ব্লাড' প্রামাণ্যচিত্রে উঠে এসেছে মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদারদের সংঘটিত ইতিহাসের ভয়াল গণহত্যার চিত্র। সেই সঙ্গে উঠে এসেছে তৎকালীন বিশ্বরাজনীতি থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধপূর্ব ২৫ বছরের প্রেক্ষাপটও।
'বে অব ব্লাড' নির্মাণের কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, 'একজন নির্মাতা হিসেবে আমার নিজের জাতি ও সংস্কৃতির প্রতি দায়বদ্ধতা রয়েছে, তাই আমি ইতিহাসের চরম নির্মমতম সত্যটি প্রামাণ্যচিত্রের মাধ্যমে বলার চেষ্টা করেছি।'
প্রামাণ্যচিত্রটিতে তুলে আনা হয়েছে একাত্তরের গণহত্যার প্রত্যক্ষদর্শী মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ স্বজন, বীরাঙ্গনা, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, গণহত্যা গবেষক, রাজনীতিবিদদের বয়ান।
প্রামাণ্যচিত্রটির প্রদর্শন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা ও পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র রচয়িতা ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম প্রধান সংগঠক ব্যারিস্টার আমীর-উল-ইসলাম, বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক রকিবুল হাসান, মাহবুব উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম, ২৫ মার্চ রাতে প্রথম প্রতিরোধের বার্তা বাহক শাহজাহান মিয়া, সংসদ সদস্য আরমা দত্ত, শহীদ বুদ্ধিজীবী জ্যোতির্ময় গুহ ঠাকুরতার কন্যা মেঘনাগুহ ঠাকুরতা প্রমুখ।
প্রামাণ্যচিত্রটির প্রদর্শনী শেষে অনুষ্ঠানে আগত দর্শক ও শ্রোতাদের নানা প্রশ্নের জবাব দেন নির্মাতা কৃষ্ণেন্দু বোস।
Comments