নাইজারে সামরিক অভ্যুত্থানে সরকার উৎখাতের দাবি
পশ্চিম আফ্রিকার দেশ নাইজারে সামরিক অভ্যুত্থানে সরকারের পতন হয়েছে বলে সেনাবাহিনী দাবি করেছে।
আজ বৃহস্পতিবার বার্তা সংস্থা এএফপি এ তথ্য জানিয়েছে।
গতকাল বুধবার দেশটির প্রেসিডেন্ট মোহামেদ বাজুমকে তার রক্ষীবাহিনী আটক করে।
আটকের পর রক্ষীবাহিনী রাজধানী নিয়ামে অবস্থিত প্রেসিডেন্টের বাসভবন ও কার্যালয়ে কাউকে ঢুকতে দেয়নি। প্রেসিডেন্টের কার্যালয় সূত্র থেকে জানা গেছে, আলোচনা ব্যর্থ হলে রক্ষী বাহিনীর সদস্যরা 'তাকে ছাড়তে অস্বীকার জানায়।'
সেনাবাহিনী জানিয়েছে, দেশের 'সব সংস্থার' কাজ স্থগিত রাখা হয়েছে এবং পরবর্তী ঘোষণা না আসা পর্যন্ত প্রতিদিন রাত ১০টা থেকে ভোর ৫টা দেশব্যাপী কারফিউ জারি থাকবে।
বুধবার রাতের শেষভাগে কর্নেল-মেজর আমাদৌ আবদ্রামানে টেলিভিশনে প্রচারিত এক বক্তব্যে বলেন, 'আমরা, প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা বাহিনী, প্রেসিডেন্ট বাজুমের শাসনামলের অবসান ঘটানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।'
'দেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতির ক্রমাগত অবনতি, অর্থনীতি সামাজিক সুশাসনের দুর্বল পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে' এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান। বক্তব্য দেওয়ার সময় আমাদৌর সঙ্গে আরও ৯ জন সেনা উপস্থিত ছিলেন।
আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক নেতৃবৃন্দ বাজুমকে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। তিনি ২০২১ সালে প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন। ১৯৬০ সালে ফ্রান্সের কাছ থেকে স্বাধীনতা অর্জনের পর সেটাই ছিল নাইজারে প্রথমবারের মতো শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের ঘটনা।
ইকোনমিক কমিউনিটি অব ওয়েস্ট আফ্রিকান স্টেটস (ইকোওয়াস) জানিয়েছে, পার্শ্ববর্তী দেশ বেনিনের প্রেসিডেন্ট প্যাট্রিস ট্যালন মধ্যস্থতা করার উদ্দেশ্যে নিয়ামেই যাবেন।
নাইজারের ক্ষমতাসীন জোট এক বিবৃতিতে এ ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে। বক্তব্যে বলা হয়, 'এটি একধরনের আত্মহনন ও গণতন্ত্র বিরোধী উন্মাদনা। প্রেসিডেন্টের রক্ষীবাহিনীর এক অংশ প্রেসিডেন্ট ও তার পরিবার এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে আটক করে রেখেছে।'
ইকোওয়াস ও আফ্রিকান ইউনিয়ন এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে একে 'ক্যু প্রচেষ্টা' বলে অভিহিত করেছে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন জানান, তিনি বাজুমের সঙ্গে কথা বলে মার্কিন সহায়তা পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছেন। জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্টনিও গুতেরেস জানান, তিনি নাইজারে 'অসাংবিধানিক সরকার পরিবর্তনের প্রতি তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন' করছেন।
Comments