দেশে ঘড়ির বাজার প্রায় ২০০ কোটি টাকার

স্মার্ট ওয়াচ, ঘড়ি,

দেশের মানুষের জীবনমানের উন্নতি ও ক্রয় ক্ষমতা বৃদ্ধি পাওয়ায় গত দশকে বিলাসবহুল ও সাধারণ ঘড়ির বিক্রি বেড়েছে।

যদিও ঘড়ির বাজার নিয়ে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্য নেই। কিন্তু, ঘড়ির বাজারের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, বাংলাদেশে সাধারণ ঘড়ি থেকে শুরু করে বিলাসবহুল ঘড়ির বাজার মূল্য প্রায় ২০০ কোটি টাকা। তারা এটাও বলছেন, গত এক দশকে ঘড়ির বাজারের বার্ষিক প্রবৃদ্ধি প্রায় ৮ থেকে ১০ শতাংশ। ২০১০ সালে ঘড়ির বাজার মূল্য ছিল প্রায় ১০০ কোটি টাকা

বাংলাদেশে সুইস ঘড়ির আমদানিকারক ও পরিবেশক কবির ওয়াচ। এই প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী আরাফাত মোহাম্মদ কবির প্রায় ২ দশক ধরে সুইজারল্যান্ডে আছেন। সেখানে ঘড়ি বিষয়ে প্রশিক্ষণও নিয়েছেন।

বাংলাদেশে ঘড়ির বাজার বৃদ্ধি নিয়ে কবির বলেন, 'বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান মধ্যবিত্ত শ্রেণি ও ফ্যাশন ও লাইফস্টাইল পণ্যে আগ্রহী তরুণ ভোক্তাদের সংখ্যা বাড়ছে। বিশেষ করে তরুণরা ইন্টারনেট ও ইউটিউবের মাধ্যমে মানসম্মত ঘড়ির বিষয়ে জানতে পারেন।'

'আমি দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে সুইজারল্যান্ডে আছি এবং ঘড়ি শিল্পের সঙ্গে জড়িত। বিখ্যাত ওয়াচমেকিং ইনস্টিটিউট 'উ স্টেপ' থেকে ডিপ্লোমা করেছি। ঘড়ি তৈরিতে বিভিন্ন দক্ষতা অর্জন করেছি। যেহেতু আমি ঘড়ি শিল্পের সঙ্গে জড়িত, তাই বাংলাদেশের ঘড়ির বাজার নিয়ে আমার ধারণা আছে,' বলেন তিনি।

কবিরের প্রতিষ্ঠান ১৪টি ব্র্যান্ডের সুইস ঘড়ি আমদানি করে, যার মধ্যে অ্যারো ও ম্যাথে-টিসোটের মতো উন্নতমানের ঘড়ি আছে।

তিনি মন্তব্য করেন, ঘড়ির চাহিদা নির্ভর করে মানুষের ফ্যাশন চাহিদা, ব্যক্তিগত পছন্দ ও ক্রয় ক্ষমতার ওপর।

আরাফাত মোহাম্মদ কবির ২০২১ সাল থেকে মেঘনা গ্রুপের মালিকাধীন মোহাম্মদ অ্যান্ড সন্সসহ স্থানীয় খুচরা বিক্রেতাদের কাছে ঘড়ি আমদানি ও সরবরাহের উদ্যোগ নেন। তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের বাজারে বিভিন্ন দেশের ঘড়ি পাওয়া গেলেও সুইজারল্যান্ড সবচেয়ে বিখ্যাত।

বিলাসবহুল ঘড়ির খুচরা বিক্রেতা মোহাম্মদ অ্যান্ড সন্সের জেনারেল ম্যানেজার সাফায়েত চৌধুরী জেসন বলেন, 'দেশের মানুষে ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি বিত্তশালীদের মাঝে ব্র্যান্ড সচেতনতা বৃদ্ধির পেয়েছে, তাই ঘড়ির চাহিদাও বাড়ছে। বাংলাদেশে হাতঘড়ির বাজার নিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোনো তথ্য নেই। কিন্তু, বিভিন্ন বাজার গবেষণায় দেখা গেছে, হাতঘড়ির বাজার মূল্য প্রায় ২০০ কোটি টাকা।'

তিনি জানান, ডেটা সংগ্রহ ও ভিজ্যুয়ালাইজেশনে বিশেষায়িত জার্মান অনলাইন প্ল্যাটফর্ম স্ট্যাটিসটার বাজার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ২০২৩-২০২৬ সালের মধ্যে বাংলাদেশে ঘড়ির বাজারের বার্ষিক প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ৭৯ শতাংশ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সুইজারল্যান্ড, জার্মানি, জাপান, ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মতো দেশগুলো থেকে আমদানি করা বিলাসবহুল ও কম দামি ব্র্যান্ডের ঘড়ির ভালো চাহিদা আছে।

তিনি বলেন, 'আগে মানুষ বিদেশ থেকে বিলাসবহুল ঘড়ি কিনতেন। আবার যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও ইউরোপে বসবাসরত আত্মীয়-স্বজনরা উপহার হিসেবে ঘড়ি আনতেন। কিন্তু, এসব ঘড়ি এখন বাংলাদেশে পাওয়া যাচ্ছে।'

কল্লোল গ্রুপ অব কোম্পানির সহযোগী প্রতিষ্ঠান টাইম জোন বাংলাদেশে হাতঘড়ির প্রধান আমদানিকারক।

এদিকে হাতঘড়ির বাজার ধরতে বাংলাদেশে যাত্রা শুরু করছে ভারতের শীর্ষস্থানীয় লাইফস্টাইল টেক ও স্মার্টওয়াচ ব্র্যান্ড নয়েজ। আজ বুধবার বাংলাদেশের বাজারে আত্মপ্রকাশের ঘোষণা দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। তারা স্মার্টওয়াচের বাজার সম্প্রসারণে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।

নয়েজের স্মার্টওয়াচ নয়েজ কালারফিট পালস গো বাজ- ২ হাজার ৭৯০ টাকা, নয়েজ কালারফিট পালস ২ ম্যাক্স- ২ হাজার ৯৯০ টাকা, নয়েজফিট হ্যালো- ৫ হাজার ৪৯৯ টাকা এবং নয়েজ কালারফিট প্রো ৪ আলফা- ৫ হাজার ৪৯৯ টাকায় পাওয়া যাবে।

নয়েজের সহ-প্রতিষ্ঠাতা গৌরব খাত্রি বলেন, 'বাংলাদেশে আমারা যাত্রা শুরু করতে পেরে আনন্দিত। আমরা আমাদের পণ্যকে বাংলাদেশি ভোক্তাদের নাগালে নিয়ে আসতে চাই।'

Comments

The Daily Star  | English

Managing expectations the challenge for EC

The EC was a rubber stamp to legalise AL's usurpation of power in last three elections

1h ago