ঈদের ছুটিতে দক্ষিণ ভারতীয় যেসব সিনেমা দেখতে পারেন

আল্লু অর্জুন, আরআরআর, বিজয়, প্রভাস, রাম চরণ, যশ, পবণ কল্যাণ,
ছবি: সংগৃহীত

বর্তমানে দক্ষিণ ভারতীয় চলচ্চিত্র শিল্প ভারতীয় চলচ্চিত্র শিল্পে রাজত্ব করছে। একের পর এক ব্লকবাস্টার সিনেমা উপহার দিয়ে দক্ষিণের অভিনেতারা চমকে দিয়েছেন। যেখান বলিউডের সিনেমা ধারাবাহিকভাবে ফ্লপ হয়েছে, সেখানে দক্ষিণের সিনেমাগুলো ধারাবাহিকভাবে আয়ের রেকর্ড গড়েছে। দক্ষিণ ভারতীয় অভিনেতা প্রভাস, জুনিয়র এনটিআর, রাম চরণ, যশ, আল্লু অর্জুন, বিজয়সহ অনেকে ইতোমধ্যে প্যান-ইন্ডিয়া সুপারস্টার খ্যাতি অর্জন করেছেন।

এখানে ১২টি দক্ষিণ ভারতীয় সিনেমার কথা উল্লেখ করা হলো- যেগুলো সিনেমাপ্রেমীরা ঈদের ছুটিতে দেখতে পারেন।

বাহুবলী- দ্য বিগিনিং

বাহুবলী দক্ষিণ ভারতীয় চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আয় করা ও সেরা একটি চলচ্চিত্র। বড় বাজেটের এই সিনেমা ভারতীয় চলচ্চিত্র শিল্পকে যে অন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে তা অস্বীকার করার উপায় নেই। আপনাদের অনেকেই নিশ্চয়ই এই মাস্টারপিস দেখেছেন। কারণ, আমরা পৃথিবীর বাইরের কোনো গ্রহে বাস করি না। এই সিনেমাটি মূলত ইতিহাস নির্ভর সিনেমা। এটির আরও একটি সিক্যুয়েল আছে। সেটিও দর্শকের মনোযোগ আকর্ষণ করতে পেরেছে। যাইহোক, সিনেমাটির পরিচালনা ও ভিজ্যুয়াল ইফেক্টস সবার ভালো লেগেছে। চাইলে সিনেমাটি আপনিও উপভোগ করতে পারেন্

আরআরআর

জুনিয়র এনটিআর ও রাম চরণ অভিনীত আরআরআর বিশ্বব্যাপী দারুণ সাড়া ফেলেছে। এই সিনেমার মাধ্যমে দক্ষিণের সিনেমার নতুন পরিচিতি তৈরি হয়েছে। শুধু তাই নয়, আরআরআর সিনেমার একটি গান অস্কারও জিতেছে। যারা সিনেমা দেখতে ভালোবাসেন তারা আরআরআর সিনেমাটি অবশ্যই দেখতে পারেন। এই সিনেমাটি দর্শককে ভিন্ন রকমের অনুভূতি দেবে।

বিক্রম

বিক্রম ২০২২ সালের শীর্ষ দক্ষিণ ভারতীয় চলচ্চিত্রগুলোর একটি। ১৯৮৬ সালের ক্লাসিক বিক্রমের পর আবার 'বিক্রম' চরিত্রে ফিরছেন সুপারস্টার কমল হাসান। চলচ্চিত্রটি একজন তদন্তকারীকে নিয়ে। যে চরিত্রে অভিনয় করেছেন ফাহাদ ফাসিল। যাকে ধারাবাহিক হত্যাকাণ্ডের একটি মামলার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি খুব দ্রুত বুঝতে পারেন মামলাটি সামনে থেকে যা মনে হচ্ছে আসলে তা নয়। এর পেছনে আছে দুর্নীতি ও ভয়ঙ্কর কিছু মানুষ। এভাবেই এগিয়ে যাবে পুরো সিনেমা।

সুরারাই পত্রু

দক্ষিণের অভিনেতা সুরিয়া খুবই পরিচিত একটি মুখ। কারণ, তার চলচ্চিত্র সামাজিক সচেতনতা বাড়ায় এবং সামাজিক বিষয়গুলো লাইমলাইটে নিয়ে আসে। সুরারাই পত্রু একটি ছোট্ট গ্রামের এক যুবককে নিয়ে নির্মিত। যার স্বপ্ন নিজের গ্রামে বিমানবন্দর ও এয়ারলাইন্স সংস্থা থাকবে। কিন্তু ধনী ব্যক্তিরা তাকে সমর্থন করে না। বরং তাকে ছোট করে দেখে। শেষ পর্যন্ত তিনি সফল হন। তবে, তার পেছনে আছে বিরাট লড়াই। সেই লড়াইয়ের কথা জানতে হলে সিনেমাটি দেখতে হবে।‍

‍পুষ্পা: দ্য রাইজ

দক্ষিণের স্টাইলিশ অভিনেতা আল্লু অর্জুন। তার ভক্তের সংখ্যা নেহায়েত কম নয়। পুষ্পা ‍মুক্তির পর ভক্তের সংখ্যা দ্রুত বাড়তে শুরু করে। আল্লু অর্জুন দক্ষিণের সীমান্ত ছাড়িয়ে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েন। পুষ্পা সিনেমার গান, সংলাপ, নাচ ছড়িয়ে পড়ে মানুষের মুখে মুখে। এখনো সামাজিক মাধ্যমে পুষ্পার গান ও নাচের সঙ্গে পারফর্ম করছেন সোশ্যাল সেলিব্রেটিরা। এই সিনেমার প্লট একজন শ্রমিককে ঘিরে আবর্তিত হয়। যিনি লাল চন্দন চোরাচালানে জড়িয়ে পড়েন। যাইহোক, পুলিশ এই অবৈধ কার্যকলাপ বন্ধ করতে চায়। এভাবেই এগিয়েছে পুরো সিনেমার গল্প। বাকিটুকু বললে সিনেমার মজা থাকবে না। তাই সাউথের এই সিনেমাটি দেখতে পারেন।

‍বিগিল

নারীদের নিয়ে তৈরি সিনেমা বিগিল। কীভাবে নারীরা সামাজিক বাধা ভেঙে তাদের শক্তিতে এগিয়ে যেতে পারে সেই গল্প উঠে এসেছে বিগিল সিনেমাতে। সিনেমার প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন বিজয় থালাপাতি। এতে সংগীত শিল্পী এ আর রহমানের স্পর্শও আছে, যা এটিকে সেরা দক্ষিণ ভারতীয় চলচ্চিত্রগুলোর একটি করে তুলেছে। সিনেমার গল্প বিগিল রায়াপ্পান ও নারী ফুটবল দলের কোচ হওয়ার যাত্রাকে ঘিরে আবর্তিত হয়। সিনেমাটি দেখলে আশা করা যায়, দর্শক হতাশ হবেন না।

পোন্নিয়িন সেলভান

মণিরত্নমের পোন্নিয়িন সেলভান একটি মাস্টারপিস। চলচ্চিত্রটি ভারতীয় লেখক কল্কি কৃষ্ণমূর্তির ঐতিহাসিক কল্পকাহিনী উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত। তারকাবহুল এই চলচ্চিত্রটি বক্স দারুণ ব্যবসা করেছে। তাই যারা দক্ষিণ ভারতের সিনেমা দেখতে চান তারা পছন্দের তালিকায় পোন্নিয়িন সেলভান রাখতে পারেন।

‍ওয়াকিল সাব

তেলেুগু পাওয়ার তারকা পবণ কল্যাণের আরও একটি চমৎকার সিনেমা ওয়াকিল সাব। সিনেমাটি সমালোচকদের কাছে ব্যাপকভাবে  প্রশংসিত হয়েছে। এটি অমিতাভ বচ্চনের 'পিঙ্ক'র তেলেগু রিমেক। প্লটটি মূলত পবনকে কেন্দ্র করে, যিনি একজন ন্যায়পরায়ণ আইনজীবীর ভূমিকা পালন করেন। দুজন নারীর মামলা নিয়ে সিনেমার গল্প এগিয়ে যাবে। সিনেমাপ্রেমীরা এই সিনেমা দেখতে পারেন। পবণ কল্যাণের অভিনয় আপনাকে মুগ্ধ করবে।

‍দৃশ্যম-২

দক্ষিণ ভারতীয় সিনেমার 'ইউনিভার্সাল স্টার অব মালায়ালাম' হলেন মোহনলাল। তিনি কেবল সেরা দক্ষিণ ভারতীয় সিনেমা উপহার দেন না, তার একটি অনন্য শৈলী আছে- যা অনেককে বিস্মিত করে। তিনি দৃশ্যমে একজন বাবার চরিত্রে অভিনয় করেছেন। তার পরিবারকে ফৌজদারি তদন্ত থেকে রক্ষা করতে হবে। পুরো সিনেমাটি দর্শককে মুগ্ধ করবে। তাই সিনেমাপ্রেমীরা এই সিনেমাটি দেখতে পারেন।

কেজিএফ পার্ট-২

কন্নড় অ্যাকশন ফিল্ম কেজিএফ চ্যাপ্টার-২ প্রশান্ত নীল পরিচালিত ও বিজয় কিরাগান্দুর প্রযোজনা করেছেন হোম্বলে ফিল্মসের ব্যানারে। ২০১৮ সালে মুক্তি পেয়েছিল কেজিএফ চ্যাপ্টার-১। যা মুক্তির পরপরই ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিল। সিনেমাটিতে যশ প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন। সিনেমায় তিনি রকি নামে পরিচিত। রকি এমন একজন ব্যক্তি যিনি সোনার খনির জগতে একটি শক্তিশালী ব্যক্তিত্ব হয়ে ওঠেন। ভারতের কর্ণাটকের কেজিএফ খনিগুলোর বিপজ্জনক গল্প উঠে এসেছে পুরো সিনেমাতে। কেজিএফ চ্যাপ্টার-২'তে সঞ্জয় দত্ত, রবিনা ট্যান্ডন ও প্রকাশ রাজের মতো তারকারাও ছিলেন।

সীতা রামাম

২০২২ সালে মুক্তি পাওয়া সীতা রামম খুবই হিট সিনেমা ছিল। রোমান্টিক ঘরানার সিনেমাটি দর্শককে প্রেম ও ভালোবাসার একাধিক মুহূর্ত উপহার দিয়েছিল। এটি পরিচালনা করেছিলেন হানু রাঘবপুড়ি। চিত্রনাট্য লিখেছেন পরিচালক ও রাজ কুমার কান্দামুদি। খুবই ব্যবসা সফল সিনেমাটির প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন দুলকার সালমান ও ম্রুণাল ঠাকুর। সিনেমাটির গল্প একজন সৈনিককে কেন্দ্র করে। যিনি সীতা নামের একটি মেয়ের কাছ থেকে একটি চিঠি পান। পুরো গল্পটি জানতে সিনেমাটি দেখতে পারেন।

কানতারা

২০২২ সালের আরেকটি সফল দক্ষিণ ভারতীয় চলচ্চিত্র ছিল ঋষভ শেঠির কানতারা। একজন বন কর্মকর্তার আধ্যাত্মিক বিবরণ দেখা যাবে সিনেমাতে। সিনেমাটি লোককাহিনীর মতো লাগতে পারে, যা শেষ পর্যন্ত পরাবাস্তববাদী গল্পে রূপান্তরিত হয়। সিনেমাটি খুব সহজে দর্শককে মুগ্ধ করবে। তাই দক্ষিণী সিনেমাপ্রেমীরা কানতারা সিনেমাটি দেখতে পারেন।

Comments

The Daily Star  | English
The Indian media and Bangladesh-India relations

The Indian media and Bangladesh-India relations

The bilateral relationship must be based on a "win-win" policy, rooted in mutual respect, non-hegemony, and the pursuit of shared prosperity and deeper understanding.

6h ago