ওডিশা ট্রেন দুর্ঘটনা: তদন্ত শুরু করল সিবিআই
ভারতের ওডিশায় ৩ ট্রেনের সংঘর্ষে শতাব্দীর সবচেয়ে ভয়াবহতম রেল দুর্ঘটনা ঘটে। এতে প্রায় ২৯৪ জন নিহত ও ১ হাজারেরও বেশি মানুষ আহত হন। ভারতের রেল মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে দেশটির শীর্ষ গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই এই দুর্ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
আজ মঙ্গলবার ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, আজ সকালে সিবিআইয়ের একটি তদন্ত দল বালেশ্বরে দুর্ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছেছেন। তারা ওডিশা পুলিশের কাছ থেকে তদন্তের দায়িত্ব বুঝে নেবেন।
এই দুর্ঘটনায় ওডিশা পুলিশ 'অবহেলাজনিত কারণে মৃত্যু ও জীবনকে বিপদগ্রস্ত' করার অভিযোগে মামলা দায়ের করেছে।
কর্মকর্তাদের মতে, সিবিআইকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া একটি উল্লেখযোগ্য উদ্যোগ। কারণ শুধু একটি শীর্ষ সংস্থার পক্ষেই বিস্তারিত তদন্তের মাধ্যমে পয়েন্ট মেশিন বা ইলেকট্রনিক ইন্টারলকিং ব্যবস্থায় কোনো ধরনের নাশকতা হয়েছে কি না, তা চিহ্নিত করা সম্ভব। এ ছাড়া দুর্ঘটনার অন্য সম্ভাব্য কারণের মধ্যে আছে, ট্র্যাকের রূপান্তর বা ভুল সিগনাল পেয়ে ট্রেনের ট্র্যাক বদলানো।
রেল কর্মকর্তারা এর আগে সম্ভাব্য 'নাশকতা' ও ইন্টারলকিং ব্যবস্থার ক্ষতি করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন। এই ব্যবস্থাটি ট্রেনের উপস্থিতি চিহ্নিত করার কথা থাকলেও তা করেনি এবং এ কারণেই মূলত শালিমার-চেন্নাই কেন্দ্রীয় করমণ্ডল এক্সপ্রেস, বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস ও একটি মালবাহী ট্রেনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
রেল কর্তৃপক্ষের প্রাথমিক তদন্তে বলা হয়, ভুল সিগনালের জন্য এই দুর্ঘটনা ঘটে।
তবে কিছু রেল বিশেষজ্ঞ জানান, করমণ্ডল এক্সপ্রেস খুব সম্ভবত একটি 'লুপ লাইনের' ভেতরে সরাসরি মালবাহী ট্রেনকে আঘাত করে।
ব্যস্ত রেল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় বহুল ব্যবহৃত প্রক্রিয়া হচ্ছে 'লুপ লাইন', যেটি মূল রেলওয়ে ট্র্যাক থেকে আলাদা হয়ে কিছু দূরত্ব যেয়ে আবার মূল লাইনের সঙ্গে যুক্ত হয়।
ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ইঞ্জিনটি মালবাহী ট্রেনের ওপরে উঠে গেছে, যা থেকে সরাসরি সংঘর্ষের বিষয়টি প্রমাণিত হয়।
সিবিআইর তদন্তে এই দুর্ঘটনা সংশ্লিষ্ট সব প্রশ্নের উত্তর খোজা হবে। সরকারি সূত্র জানিয়েছে, সব ধরনের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখা হবে, যার মধ্যে আছে যান্ত্রিক ত্রুটি, ভুল ও নাশকতা।
শনিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জানান, দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোরতম ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Comments