চা-কফির আসক্তি কমানোর ৬ উপায়
নিজেকে উজ্জীবিত ও সতেজ রাখতে গরম চা বা কফি পান করে থাকি আমরা। এই পানীয়তে থাকা ক্যাফেইন মূলত আমাদের সজাগ থাকতে ও মনোযোগ ধরে রাখতে সাহায্য করে। তবে ক্যাফেইনে অত্যধিক নির্ভরশীলতা তৈরি হয়ে গেলে প্রতিদিনকার গ্রহণযোগ্য মাত্রা ছাড়িয়ে যেতে পারে সহজে।
প্রতিদিন প্রায় ৪০০ মিলিগ্রাম ক্যাফেইন শরীরের জন্য নিরাপদ বলে মনে করা হয়, যা ৪-৫ কাপ কফি বা চা খেলেই পূরণ হয়ে যায়। ক্যাফেইন সজাগ ও মনোযোগী রাখে। তবে মাত্রাতিরিক্ত ক্যাফেইন হতে পারে অস্থিরতা ও উদ্বেগের কারণ। এটি কেড়ে নিতে পারে রাতের ঘুমও।
ক্যাফেইন গ্রহণ কমানোর ফলে মাথাব্যথা, তন্দ্রা, তৃপ্তি কমে যাওয়া, বিষণ্ণতা, অমনোযোগ, বিরক্তি, জড়তা ও দিশেহারা বোধ হওয়ার মতো কিছু উপসর্গ ও অন্যান্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যেতে পারে। যদিও মাত্রা কমানোর প্রথম ১০ দিন পেরিয়ে গেলে সতেজ অনুভব হতে পারে।
ক্যাফেইন গ্রহণের মাত্রা কমাতে ৬টি টিপস অনুসরণ করা যেতে পারে।
ছোট কাপ বা মগে অভ্যস্ত হওয়া
হঠাৎ করে ক্যাফেইন গ্রহণ একেবারে ছেড়ে দেওয়ার পরিবর্তে দৈনিক পানের মাত্রা কমানোর চেষ্টা করাই ভালো।এতে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থেকে কিছুটা রেহাই পাওয়া যাবে। এ ক্ষেত্রে স্বাভাবিকের চেয়ে আকারে ছোট মগ বা কাপ বাছাই করা যেতে পারে অথবা অর্ধেক কাপ চা বা অর্ধেক মগ কফি পান করা যেতে পারে।
পাওয়ার ন্যাপ বা ছোট ঘুম দেওয়া
পাওয়ার ন্যাপ বা ছোট ঘুম ক্যাফেইনের মাত্রা কমানোর ফলে সৃষ্ট অস্থিরতার সঙ্গে লড়াই করতে সাহায্য করে। এ ছাড়া ভালো ঘুম হলে মন ভালো থাকা, মনোযোগী হওয়া এবং কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পাওয়ার মতো সুবিধা পাওয়া যায়। তবে এ জন্য প্রতি ঘণ্টায় ন্যাপ নেওয়ার দরকার নেই। কারণ এটি আবার রাতে ঘুম না আসার আশঙ্কাকে প্রবল করে তোলে। দিনের অগ্রভাগে কাজের বিরতিতে কিংবা ক্লান্ত অনুভব করার সময় পাওয়ার ন্যাপ নেওয়ার চেষ্টা করতে হবে।
বিকল্প পানীয় পান করা
ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় ও কফির সবচেয়ে ভালো বিকল্প হলো ডিক্যাফ। কিন্তু একই ফলাফল পেতে চাইলে অন্যান্য সমজাতীয় পানীয় বেছে নেওয়া যেতে পারে। এ দিক বিবেচনায় গ্রিন টি বা ভেষজ চা শুধু শরীরের জন্য যে উপকারী তাই নয়, মানসিক সতেজতার জন্যও কফির তুলনায় ভালো।
গ্রিন টির স্বাদ প্রথমে পছন্দ না হলেও ধীরে ধীরে ভালো লাগা বাড়তে থাকে। স্বাদ ভালো করতে মধু, পুদিনা, লেবু, ফলের নির্যাস এবং অন্যান্য উপাদান যোগ করা যেতে পারে এর সঙ্গে। ১ কাপ গ্রিন টি ক্যাফেইন ছাড়াই আপনাকে কফির মতোই চাঙা রাখতে পারে। যারা অনিদ্রা ও উদ্বেগে ভোগেন, তাদের জন্য এটি উপযুক্ত বিকল্প।
হাইড্রেটেড থাকা
ক্যাফেইন গ্রহণের চেয়ে পানি পানের মাত্রা বাড়াতে হবে। আপনি যদি নিয়মিত প্রচুর ক্যাফেইন গ্রহণ করে থাকেন, তবে গ্রহণের মাত্রা কমালে মাথাব্যথা বা বমি বমি ভাবের মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে। এজন্য প্রচুর পানি পান করে হাইড্রেটেড থাকলে উপকার পাওয়া যাবে।
ব্যায়াম
দিনে স্বল্প দূরত্বে দৌড়ানো বা হাঁটার অভ্যাস করলে ক্যাফেইন গ্রহণের মাত্রা কমালেও জেগে থাকা সহজ হবে। ক্লান্তি কমাতে ও শক্তি বৃদ্ধিতেও সাহায্য করবে এটি। ক্যাফেইনের আকাঙ্ক্ষা কমানোর ভালো উপায় হিসেবেও কাজ করবে ব্যায়াম।
ক্যাফেইন উইন্ডো সেট করা
একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ক্যাফেইনযুক্ত নির্দিষ্ট কাপ পানীয় পানের অনুমতি দিন নিজেকে। তবে ক্যাফেইন উইন্ডো অবশ্যই ঘুমের সময় থেকে কমপক্ষে ৬ ঘণ্টা দূরত্বে রাখতে ভুলবেন না।
অনুবাদ করেছেন আসরিফা সুলতানা রিয়া
Comments