লালমনিরহাট-কুড়িগ্রাম

অতিরিক্ত গরমে ৮৩৪২৫ হেক্টর জমির বোরো ধান ‘চিটা’ হওয়ার আশঙ্কা

বোরো ধান
লালমনিরহাট সদর উপজেলার ফুলগাছ গ্রামে খেতের বোরো ধান অতিরিক্ত গরমে ‘চিটা’ হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ছবি: এস দিলীপ রায়/স্টার

লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামে অতিরিক্ত গরমে ৮৩ হাজার ৪২৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধান 'চিটা' হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে ধানখেতে কৃষকদের সবসময় পানি দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে কৃষি বিভাগ।

কৃষি বিভাগের পরামর্শে ধানখেতে সার্বক্ষণিক সেচের পানি দিতে গিয়ে এ বছর কৃষকদের বোরো ধান উৎপাদনে বিঘাপ্রতি ৬০০-৮০০ টাকা বাড়তি খরচ করতে হচ্ছে।

গত বছরগুলোয় এ সময় বোরোখেতে সেচের পানির প্রয়োজন হতো না বলে দ্য ডেইলি স্টারকে কৃষকরা জানিয়েছেন।

কৃষি বিভাগ সূত্র ডেইলি স্টারকে জানায়, এ বছর লালমনিরহাটের ৫ উপজেলায় ৪৭ হাজার ৮৫০ হেক্টর ও কুড়িগ্রামের ৯ উপজেলায় এক লাখ ১৯ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হয়েছে।

এর মধ্যে ২০ শতাংশ জমির ধান পেকেছে। আধা-পাকা হয়েছে ৩০ শতাংশ জমির ধান। এখনো মুকুল ও শীষের পর্যায় আছে ৫০ শতাংশ জমির ধান।

অতিরিক্ত গরমের কারণে মুকুল ও শীষ পর্যায়ের ধানগুলো নষ্ট (চিটা) হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

লালমনিরহাট সদর উপজেলার ফুলগাছ গ্রামের কৃষক কাদের আলী (৬৫) ডেইলি স্টারকে বলেন, '৮ বিঘা জমিতে বোরো চাষ করেছি। ২ বিঘা জমির ধান আধা-পাকা হয়েছে। ৬ বিঘা জমির ধানে মুকুল ও শীষ দেখা দিয়েছে। প্রচণ্ড গরমের কারণে এ বছর বোরো ধান পাতান (চিটা) হতে পারে।'

'কৃষি বিভাগের পরামর্শে খেতে পানি দিতে হচ্ছে,' উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, 'এতে প্রতিবিঘায় ধান উৎপাদনে ৭০০ টাকা বাড়তি খরচ হচ্ছে। গত বছরগুলোয় ধানখেতে এ সময় সেচের পানির প্রয়োজন হতো না।'

লালমনিরহাট সদর উপজেলার মন্ডলেরহাট এলাকার কৃষক আনোয়ার হোসেন (৬০) ডেইলি স্টারকে বলেন, '১০ বিঘা জমিতে বোরো চাষ করেছি। এ বছর ধান পাতান (চিটা) হওয়ার আশঙ্কা করছি।'

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার শিমুলবাড়ী গ্রামের কৃষক হেমন্ত বর্মণ (৬৫) ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সার, বীজ, তেল ও শ্রমিক খরচ বেড়ে যাওয়ায় এমনিতেই প্রতিমণ ধান উৎপাদনে ৯৫০-১০০০ টাকা বাড়তি খরচ হচ্ছে। বাড়তি সেচে দিতে গিয়ে বিঘাপ্রতি ৬০০-৮০০ টাকা বেশি খরচ হচ্ছে।'

এ বছর প্রতিমণ ধান উৎপাদনে প্রায় ১ হাজার ১০০ টাকা খরচ হতে পারে বলে জানান তিনি।

লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক হামিদুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বোরো ধানের জন্য ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়ার নিচে তাপমাত্রা প্রয়োজন। গত কয়েকদিন ধরে এ অঞ্চলের তাপমাত্রা ৩৭-৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠানামা করছে। এ তাপমাত্রা বোরোর জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এ অবস্থায় খেতে সার্বক্ষণিক পানি সরবরাহ করা হলে ধানের তেমন ক্ষতি হবে না।'

'তবে যে কৃষক সার্বক্ষণিক পানি সরবরাহ রাখতে পারবেন না তাদের ধান চিটা (পাতান) হতে পারে। তাই অতিরিক্ত তাপমাত্রার কারণে খেতে সর্বদা পানি রাখার পরামর্শ দিচ্ছি,' যোগ করেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

What are we building after dismantling the AL regime?

Democracy does not seem to be our focus today. Because if it were, then shouldn’t we have been talking about elections more?

6h ago