বরগুনায় পায়রা নদী তীরবর্তী বাঁধে ভাঙন, ঝুঁকিতে ৪ গ্রামের ১০ হাজার মানুষ

বরগুনা তালতলী উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের তেঁতুলবাড়িয়া এলাকায় পায়রা নদীর তীরবর্তী বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে আকস্মিক ভাঙন দেখা দিয়েছে | ছবি: সোহরাব হোসেন/স্টার

বরগুনায় পায়রা নদীর তীরবর্তী বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে আকস্মিক ভাঙন দেখা দিয়েছে।

ইতোমধ্যে তালতলী উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের তেঁতুলবাড়িয়া এলাকায় বাঁধের প্রায় ২০০ মিটার নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়া দেখা দিয়েছে বড় আকারের ফাটল।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গত সোমবার রাতে বাঁধের ২০০ মিটার ভেঙে পড়ায় নতুন করে ঝুঁকিতে পড়েছেন তেঁতুলবাড়িয়া, সোবাহানপাড়া, অংকুজানপাড়া ও জয়ালভাঙ্গা গ্রামের অন্তত ১০ হাজার মানুষ।

তারা আরও জানান, গত ১৬ বছরে পায়রা নদীর তীব্র ভাঙনে তেতুঁলবাড়িয়া ও জয়ালভাঙ্গা গ্রামের কয়েক হাজার একর ফসলি জমি এবং ঘর-বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বসতভিটা হারিয়েছেন কমপক্ষে ৫ হাজার মানুষ।

তেতুঁলবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা মো. জসিম উদ্দিন হাওলাদার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, '২০০৭ সালে ঘূর্ণিঝড় সিডর আঘাত হানার ১৬ বছর পেরিয়ে গেলেও এখানে টেকসই বাঁধ নির্মাণ করেনি পানি উন্নয়ন বোর্ড। দায়সারাভাবে একটি বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। যে কারণে এই এলাকার অন্তত ১০ হাজার মানুষ জোয়ার-ভাটার সঙ্গে যুদ্ধ করে বেঁচে আছে।'

একই গ্রামের বাসিন্দা নুরজাহান বলেন, 'সিডরের পর থেকে আমরা বছরে ৬ মাস পানির সঙ্গে যুদ্ধ করে চলি। আমাদের এই কষ্টগুলো কারো চোখে পড়ে না।'

একই অভিযোগ তোলেন নিশানবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. কামরুজ্জামান বাচ্চু। তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সিডরের পর পরিকল্পনা মাফিক টেকসই বাঁধ নির্মাণ না করায় ১৬ বছরে সাগর সংলগ্ন নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের তেতুঁলবাড়িয়া ও জয়ালভাঙ্গা গ্রামের কমপক্ষে দেড় কিলোমিটার কৃষিজমি ও অসংখ্য বাড়ি-ঘর নদীতে বিলীন হয়েছে।'
 
'দ্রুত টেকসই বাঁধ নির্মাণ করা না গেলে পুরো নিশানবাড়িয়া ইউনিয়ন তালতলীর মানচিত্র থেকে মুছে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের আতঙ্কে দিন কাটছে,' বলেন তিনি।

যোগাযোগ করা হলে তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সিফাত আনোয়ার বলেন, 'বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ পরিদর্শন করে ঝুঁকিপূর্ণ বাড়ির নারী, শিশু ও বৃদ্ধদের নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে বাঁধ মেরামত করতে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।'

বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী সুদীপ্ত চৌধুরী বলেন, 'পায়রা নদী সংলগ্ন ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ এলাকা আমরা পরিদর্শন করেছি। আগামী ১ সপ্তাহের মধ্যে রিং বাঁধের নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে।'

Comments

The Daily Star  | English
compensation for uprising martyrs families

Each martyr family to get Tk 30 lakh: Prof Yunus

Vows to rehabilitate them; govt to bear all expenses of uprising injured

5h ago