‘গরুর মাংস আর খেতে পারি না’, লেবাননে অর্থ সংকটে থাকা বাংলাদেশির আক্ষেপ

‘গরুর মাংস আর খেতে পারি না’, লেবাননে অর্থ সংকটে থাকা বাংলাদেশির আক্ষেপ
লেবাননের রাজধানী বৈরুতের দাওড়া বাজারের একটি বাংলাদেশি দোকান। ছবি: সুব্রত সাহা বাবু

লেবাননে স্বস্তিতে নেই অর্থ সংকটে থাকা প্রবাসী বাংলাদেশিরা। নিত্যপণ্যের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধিতে বাড়ি ভাড়াসহ দৈনন্দিন চাহিদা মেটাতেই হিমসিম খাচ্ছেন স্বল্প আয়ের প্রবাসীরা। রমজানকে ঘিরে তাদের হতাশা ও অস্থির আরও বেড়েছে।

দেশটিতে গত ৪ বছর ধরে মার্কিন ডলারের বিপরীতে স্থানীয় মুদ্রা লিরার অস্বাভাবিক দরপতনের কারণে বাংলাদেশিদের আয় কমেছে কয়েকগুণ। বিপরীতে, মূল্যস্ফীতির কারণে ব্যয় বেড়েছে অনেক বেশি। লাগামহীন দ্রব্যমূল্যে নাজেহাল বাংলাদেশিরাও। রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন দ্রব্যমূল্যে দেশটির ব্যবসায়ীরা আগের মতো ছাড়ও দিচ্ছে না।

আজ বৃহস্পতিবার থেকে লেবাননে শুরু হয়েছে রমজান। অর্থ সংকটের কারণে চাহিদার তুলনায় কম পণ্য কিনতে হচ্ছে প্রবাসী বাংলাদেশিদের। ফলে, ইফতার ও সেহেরিতে পছন্দের বা প্রয়োজনীয় খাবারও বাদ দিতে হচ্ছে।

রাজধানী বৈরুতের ছাবরা বাজার ও দাওড়া বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাংলাদেশি দোকানগুলোতে ভিড় থাকলেও বিক্রি অনেক কম।

রমজানের বাজার করতে এসে গৃহকর্মী শেফালী খাতুন বলেন, 'আমাদেরকে ডলারের পরিবর্তে লিরা দিচ্ছেন নিয়োগকর্তা। বাসা ভাড়া ও বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করার পর যা থাকে তা দিয়ে চলতে খুব কষ্ট হয়।'

তিনি বলেন, 'অর্থ কষ্টের কারণে গরুর মাংসসহ অনেক প্রিয় খাবারই এখন আর খেতে পারি না। জানি না পুরো রমজান কীভাবে কাটবে।'

দাওড়া বাজারের বাংলাদেশি ব্যবসায়ী ও পণ্য আমাদানিকারক মো. ঈসমাইল বলেন, 'আমরা পণ্য আমদানি করি ডলার দিয়ে। বর্তমানে খোলাবাজারে প্রতিদিন অস্বাভাবিক হারে ডলারের দাম ওঠানামা করে। এর ফলে প্রায়শই আমাদের লোকসান গুনতে হচ্ছে।'

তিনি বলেন, 'দোকানে রমজানের পণ্যের বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু, বাংলাদেশিরা অর্থের অভাবে থাকায় আগের তুলনায় অনেক কম জিনিস কিনছেন।'

'আমাদের ক্রেতা সবাই বাংলাদেশি। তারা যদি অর্থের অভাবে কিনতে না পারেন, তাহলে আমাদের ব্যবসার কেমন পরিস্থিতি হয় তা তো বুঝতেই পারছেন', যোগ করেন তিনি।

শেফালীর মতো এমন আক্ষেপ আরও অনেক বাংলাদেশির, যারা লেবাননে নিম্নআয়ের কাজ করেন। এমনই হতাশার মধ্যে গত ৪ বছরের সংকটকালে প্রায় ৭০ হাজার বাংলাদেশি লেবানন ছেড়ে দেশে ফিরে যেতে বাধ্য হয়েছেন। সংকটের সঙ্গে সংগ্রাম করে এখনো টিকে আছে আরও প্রায় ৭০ হাজার বাংলাদেশি।

 

লেখক: লেবাননপ্রবাসী সাংবাদিক

Comments

The Daily Star  | English

Beximco workers' protest turns violent in Gazipur

Demonstrators set fire to Grameen Fabrics factory, vehicles, vandalise property

2h ago