সেফটি হেলমেট: কোন রঙের কী অর্থ

সেফটি হেলমেট: কোন রঙের কী অর্থ
ছবি: সংগৃহীত

শিল্প-কারখানার কাজগুলোতে, বিশেষ করে নির্মাণকাজে ঝুঁকির পরিমাণ অনেক বেশি। নির্মাণকাজের জায়গাগুলোতে দুর্ঘটনা খুবই পরিচিত একটি বিষয়। আর এসব দুর্ঘটনায় মাথায় কিছু পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবার দৃষ্টান্তও রয়েছে অনেক। তাই মাথা বাঁচাতে শ্রমিকদের হেলমেট পরাটা নিত্য অনুষঙ্গ। 

আকস্মিক আঘাত থেকে বাঁচতে, সূর্যের তীব্র আলো বা বেগুনি রশ্মি থেকে সুরক্ষা পেতে এই হেলমেটগুলো বেশ কার্যকর। এ ছাড়া ভারি সেফটি হ্যাটের বদলে সেফটি হেলমেট পরলে পর্যাপ্ত আলো-বাতাস চলাচল করে বিধায় পরিধানকারীর দমবন্ধ লাগার সুযোগ থাকে না। অবশ্য সুরক্ষা আর আরামের বাইরেও এসব সেফটি হেলমেট ব্যবহারের রয়েছে আরেকটি কারণও। 

এসব হেলমেটের মধ্যে আবার রয়েছে বিভিন্ন রঙ এবং এসব রঙের নানান অর্থ। এসব অর্থ জানা থাকলে নির্মাণকাজে জড়িত নয় এমন মানুষও জানতে পারবে, এসব জায়গায় বিপদে কখন কার কাছে কোন তথ্য বা সহায়তা পাওয়া সম্ভব। এ লেখায় জানা যাবে 'সেফটি হেলমেট' ও এতে থাকা বাহারি ৭ রঙের বিষয়ে বহুবিধ তথ্য। 

সাদা

সাদা রঙের সেফটি হেলমেট পরেন এ সব কর্মক্ষেত্রে থাকা নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিরা। এদের মধ্যে সাইট ম্যানেজার, প্রকৌশলী, তত্ত্বাবধায়ক অন্যতম। আশেপাশের কাজকর্ম ও অন্যান্য কর্মীদের দায়িত্বে আছেন, এমন লোকেদের যাতে সহজে চিহ্নিত করা যায়– সেজন্য তাদের পরা হেলমেটের রঙ সাদা। 

এ ছাড়া যেহেতু এসব দায়িত্বে থাকা লোকেদের কায়িক শ্রমের চেয়ে বেশি মস্তিষ্কের শ্রমই করতে হয়, সেহেতু গরম আবহাওয়ায় মাথা ঠান্ডা রাখার জন্যেও সাদা রঙটি বেছে নেওয়া হয়। 

হলুদ

সাধারণত কায়িক শ্রমিকদের পরিধান করা সেফটি হেলমেটের রঙ হচ্ছে হলুদ। এদের মধ্যে রয়েছেন মাটিকাটা শ্রমিক, ইট উত্তোলনকারী, খোদাইকারী বা ভারী মেশিন অপারেটররা। নিরাপত্তা এবং আলাদা করে চিহ্নিত করার পাশাপাশি এই হলুদ রঙের হেলমেটের আরেকটি উদ্দেশ্য হচ্ছে, এই শ্রমিকদেরকে যাতে ভারি কায়িক শ্রমের সময় বিরক্ত না করা হয়। কেন না এই কাজগুলো অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এবং খুব সময়ের জন্য মনোযোগ সরলেও যেকোনো ধরনের বিপত্তি ঘটতে পারে। 

কমলা

যারা সাধারণ সহকারী ধরনের পেশায় আছেন, সেই 'রোড ক্রু'রা পরেন কমলা রঙের সেফটি হেলমেট। এরা বেশিরভাগ সময় প্যাকিং, গাড়ি থেকে মাল ওঠানামা ইত্যাদি কাজ করে থাকেন। কাজের সময় মালবহনকারী ক্রেন অপারেটররা যাতে সহজে তাদের খুঁজে নিতে পারেন, সে জন্যও এমন চোখে পড়ার মতো রঙের হেলমেট পরতে দেওয়া হয়। নির্মাণকাজের বাইরে ট্রাফিক মার্শাল বা রাস্তায় সিগন্যাল প্রদানকারীরাও এমন রঙের হেলমেট পরে থাকেন। 

নীল

হেলমেটের রঙ থেকে সাধারণত কর্মীর পেশাগত অবস্থান ও দক্ষতা সম্পর্কে একটা ধারণা করে নেওয়া যায়। মূলত বিভিন্ন টেকনিক্যাল বা কারিগরি ঝুটঝামেলা যারা সামাল দেন, তাদের পরা সেফটি হেলমেটের রঙ হচ্ছে নীল। এদের মধ্যে আছেন ছুতার, বিদ্যুতের মিস্ত্রি ইত্যাদি পেশার ব্যক্তিরা। 

সবুজ

আমাদের কাছে বিভিন্ন রঙের ভালো-মন্দ একটা অর্থ দাঁড়িয়ে যায়। তেমনি সবুজ মানেও সাধারণত নিরাপদ বা ইতিবাচক কিছু। আবার এ রঙের দ্বারা নতুনত্বও বোঝানো হয়। তাই হয়তো সবুজ রঙের হেলমেট পরেন ২ ধরনের কর্মীরা– সেফটি ইনস্পেক্টর বা নিরাপত্তা পরিদর্শক এবং সাইটে আসা নতুন বা খণ্ডকালীন কর্মীরা। 

লাল

আগুনের রঙ বহু আলোকছটায় ভাগ হয়ে গেলেও প্রতীকী অর্থে আগুনের রঙ লাল বলেই ধরে নেওয়া হয়। আর তাই আগুন নেভানোর কাজে নিয়োজিত ফায়ার মার্শালদের হেলমেটের রঙ হয় লাল। এতে থাকে একটি আলাদা স্টিকারও, যাতে তাদের পরিচয় আলাদা করে লেখা থাকে– দুর্ঘটনাকালে যাতে শুধু রঙের ওপর নির্ভর করতে না হয়, সেজন্য এই বাড়তি সতর্কতা। 

ধূসর

আগ্রহ বা কাজের বদৌলতে অনেকেই এসব নির্মাণাধীন সাইটে ঘুরতে আসেন। তাদেরকে নিরাপত্তা দিতে এবং পাশাপাশি কর্মীদের সঙ্গে যাতে গুলিয়ে না ফেলা হয়– সেজন্য সেফটি হেলমেট পরতে দেওয়া হয়। সাইট পরিদর্শকদের হেলমেট হচ্ছে ছাই রঙা বা ধূসর।

সবসময় হেলমেট পরে থাকাটা বেশ কষ্টকর হলেও নিরাপত্তা ও কাজের সুবিধার জন্য এসব কাজের ক্ষেত্রে হেলমেট পরার চর্চাটা জারি রাখা জরুরি। এ ছাড়া এসব হেলমেটের বিভিন্ন রঙের অর্থ জানা থাকাটাও দরকার, নয়তো সাইটে থাকার সময়ে তৈরি হওয়া সংশয় ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় ফেলতে পারে যে কাউকেই। 

তথ্যসূত্র: লিংকডইনডটকম, এইচএসইব্লগ
 

Comments

The Daily Star  | English

Killing of trader in old Dhaka: Protests erupt on campuses

Protests were held on campuses and in some districts last night demanding swift trial and exemplary punishment for those involved in the brutal murder of Lal Chand, alias Sohag, in Old Dhaka’s Mitford area.

2h ago