‘স্থানীয়দের কমনসেন্স আছে কিনা এটা নিয়ে আমার সন্দেহ’

Imrul Kayes
বোল্ড হয়ে ফিরছেন ইমরুল কায়েস। পরিস্থিতির দাবি মেটেনি তার ব্যাটে। ছবি: ফিরোজ আহমেদ

বিপিএলে স্থানীয় ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্সে চরম হতাশ কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন। এর আগে স্থানীয়দের 'ব্রেইনলেস' আখ্যা দিয়েছিলেন। এবার দেশীয় ক্রিকেটারদের কাণ্ডজ্ঞান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।

শনিবার চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে ৬ উইকেটের জয় পায় কুমিল্লা। চট্টগ্রামের ১৫৬ রান টপকাতে গিয়ে কুমিল্লা সওয়ার হয় মোহাম্মদ রিজওয়ানের ব্যাটে। ৪৭ বলে ৬১ রান করে দলকে জেতাতে বড়  ভূমিকা রাখেন তিনি।

রান তাড়ায় এদিন ভালো শুরু পেয়েও ইনিংস টানতে পারেননি সৈকত আলি, ইমরুল কায়েসরা। দুজনেই ফেরেন ভুলসময়ে, দৃষ্টিকটুভাবে। পরে অবশ্য ভালো ফিনিশিং টানেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত।

এবার টুর্নামেন্টে লিটন দাস ছাড়া কুমিল্লার স্থানীয় ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্স ছিল গড়পড়তা। কুমিল্লা মূলত বিদেশিদের উপর ভর করেই ছুটছে টুর্নামেন্টে।

ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসে সার্বিকভাবে স্থানীয় খেলোয়াড়দের পর্যালোচনার প্রসঙ্গে কড়া জবাব দেন কুমিল্লার কোচ,  'স্থানীয় খেলোয়াড়দের কাছে আমি একটা সামান্য কমনসেন্স (কাণ্ডজ্ঞান) চাই, যেন একটা কমনসেন্স থাকে। তাদের আসলে কমনসেন্স আছে কি না এটা নিয়ে আমার সন্দেহ। আপনি যদি ১৫ বছর ধরে ঘরোয়া ক্রিকেট মিরপুরে খেলেন, আপনি জানেন যে আপনার আসলে কী করতে হবে। সে কমনসেন্স যদি আপনার না থাকে তাহলে আসলে আমি হতাশ। বিশেষ করে আমাদের ছেলেরা ক্রিকেট নিয়ে চিন্তা করে কিনা সেটা নিয়ে আমার সন্দেহ।'

Imrul Kayes & Mohammad Salauddin

শট খেলার সামর্থ্যে অনেক বিদেশিদের থেকে দেশিরা কেউ কেউ এগিয়ে থাকলেও মাঠের পারফরম্যান্স ভিন্ন হচ্ছে সাধারণ জ্ঞানের ঘাটতিতে, এমনটাই মত সালাউদ্দিনের  'রিজওয়ানের সঙ্গে আমাদের দেশের অনেক ওপেনার ধরেন বা অলরাউন্ডার ধরেন, তারা হয়তো আরও জোরেও মারতে পারে। সব দিকে মারতে পারে, কিন্তু খেলতে গেলে দেখা যায় যে মনে হয় যে উল্টো হচ্ছে। আমি আরেকটা প্রেস কনফারেন্সে বলেছিলাম, আমাদের দেশে অনেকে হয়তো মাথা দিয়ে খেলে, অনেকে খেলে না। বেশিরভাগই মাথা ছাড়া খেলে। আল্লাহ যদি যেদিন মিলাই দেখে প্রশ্ন কমন পড়ে যায়, সেদিন ভালো খেলে, যেদিন পড়ে না সেদিন ভালো খেলে না। খুবই হতাশাজনক। আপনি যখন ১০/১২ বছর ক্রিকেট খেলছেন তখন সামান্য কমনসেন্স থাকা উচিত কখন কি করতে হবে।'

দেশের ক্রিকেটের লম্বা সময়ের এই কোচের হতাশাটা বেশিরভাগ ব্যাটারদের নিয়ে,  'আমার মনে হয় তাদের ক্রিকেট জ্ঞান অনেক কম। সামান্য জিনিস এ উইকেটে আমার কি করতে হবে বা কোন বোলারকে আমি কখন চার্জ করব। যখন সব কিছু আমার নিয়ন্ত্রণে আছে তখন নিয়ন্ত্রণ ছাড়া কেন! তো এ বুদ্ধি যদি কারো না হয় তাহলে তারা ক্রিকেট কবে শিখবে উপরওলা জানে।'

ক্রিকেটারদের বোধের জায়গা পরিষ্কার করতে নিশ্চিতভাবে বড় ভূমিকা রাখার সুযোগ আছে কোচদের। বিপিএলে স্থানীয় কোচদের সংখ্যাই বেশি। তবু উন্নতি না হওয়ার পেছনে কারণও ব্যাখ্যা করেন সালাউদ্দিন,   'আপনার যদি ব্যাকরণ ছোট বেলা থেকে খারাপ থাকে তাহলে তো আপনি ইংলিশ রচনা লিখতে পারবেন না। আমরা আসলে ছোটবেলা থেকে তাদের ওভাবে গড়ে তুলছি। আমরা নিজেরাই সব সময় বেশিরভাগই কোচ নির্ভর খেলোয়াড়, কোচ যেটা বলবে। প্রকৃতপক্ষে ভেতরে গিয়ে তো কোচ খেলবে না, তখনই ব্রেনটা লক হয়ে যায়। সিস্টেমেই গলদ।'

দেশের ক্রিকেটারদের স্বাধীন স্বকীয়ভাবে বেড়ে উঠার ঘাটতিতে এই পরিস্থিতি দেখেন সালাউদ্দিন, দায় নিলেন নিজেদের উপরও,   'কম্পিউটার টায় আসলে সেটআপটা ঠিক মতো হয়নি। ছোটবেলা থেকে সেটআপ ভালো মতো হতো। প্রকৃতপক্ষে তাদের যদি আমরা স্বাধীনভাবে গড়ে তুলতে পারতাম, তাহলে এ সমস্যাটা হতো না। আমরা যারা কোচিং করাই তাদেরই সমস্যাটা বেশি, ছেলেদের দোষ দিই লাভ নাই। একটা পর্যায়ে এসে ব্রেনটা কাজও করে না। ছোটবেলা থেকে যদি আমাদের কোচিং ম্যাথোড পরিবর্তন করি তাহলে হয়তো কাজে আসবে।'

Comments

The Daily Star  | English

US cuts tariffs on Bangladesh to 20% after talks

The deal for Dhaka was secured just hours before a midnight deadline set by President Donald Trump

2h ago