চার্লসের বিস্ফোরক সেঞ্চুরিতে রেকর্ড গড়ে প্লে অফে কুমিল্লা  

Johnson Charles
সেঞ্চুরির পর জনসন চার্লস। ছবি: ফিরোজ আহমেদ

মার্ক ডেয়ালের বলটা স্লগ সুইপ করে বাউন্ডারির বাইরে আছড়ে ফেললেন জনসন চার্লস। যেন তুড়ি মেরেই সেরে ফেললেন কাজ। তার মারা ১১তম ছক্কাতেই শেষ হয়ে গেল ম্যাচ। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ২১১ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করে ফেলল ১০ বল আগে। রেকর্ড রান তাড়ায় খুলনা টাইগার্সকে উড়িয়ে প্লে অফ নিশ্চিত করে ফেলল বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।

সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার শেষ ম্যাচটাতে হয়েছে বিপুল রান উৎসব। তাতে মোহাম্মদ রিজওয়ান আর চার্লসের ঝাঁজে কুমিল্লা জিতেছে ৭ উইকেটে। খুলনার ২১১ রান তাড়া করে জেতায় বিপিএলের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি রান তাড়ায় নিজেদের আগের রেকর্ডই (২০৭) ভেঙেছে কুমিল্লা।

অথচ এদিন নায়ক হতে পারতেন তামিম ইকবাল বা শেই হোপদের কেউও। রয়েসয়ে খেলে ছুটতে থাকা তামিম থিতু হয়ে মেলেছিলেন ডানা। সেঞ্চুরির কাছে গিয়ে তিনি আউট হন শেষ ওভারে, তার সঙ্গী হোপও নব্বুই ছাড়িয়ে থাকেন অপরাজিত। আসরে ধুঁকতে থাকা খুলনা টাইগার্স এই দুজনের ব্যাটে পেয়েছিল দুইশো ছাড়ানো পুঁজি। ইনিংস বিরতিতে কে জানত এই ম্যাচ শেষ ওভারের আগেই জিতে যাবে কুমিল্লা।

Johnson Charles

রান তাড়ায় কুমিল্লার নায়ক চার্লস। ক্যারিবিয়ান ব্যাটার ৫৬ বলে ৫ চার আর ১১ ছক্কায় করে ফেলেন ১০৭ রান। এবারের বিপিএলে এটি চতুর্থ সেঞ্চুরি। তার এমন তাণ্ডবে আড়ালে পড়ে গেছেন রিজওয়ান। অথচ মাত্র ৩৯ বলে ৭৩ রানের ইনিংস খেলেছেন তিনিও। 

২১২ রানের লক্ষ্যে নেমে প্রথম বলেই বাউন্ডারি মেরে শুরু করেন লিটন দাস। শফিকুল ইসলামের পরের বলটি আচমকা লাফিয়ে আঘাত হানে তার গ্লাভসে। প্রচণ্ড ব্যথায় কাতরে মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যান দেশ সেরা ওপেনার। আইস ব্যাগ নিয়ে ব্যাথা সামলাতে থাকায় পরে আর নামেননি।  

লিটনের জায়গায় নেমে ইমরুল কায়েস করেন হতাশ। ১ চার মেরেই ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন কুমিল্লার অধিনায়ক। চাপে পড়া দল অবশ্য দ্রুতই স্বস্তি পায় রিজওয়ানের ব্যাটে। পাকিস্তানি ওপেনারের ব্যাট হয়ে উঠে উত্তাল। পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে চলে আসে ৫৩ রান, তার সঙ্গে যোগ দিয়ে চার-ছয়ে মাতেন চালর্সও। তবে তাকে প্বার্শ চরিত্রে রেখে ছুটছিলেন রিজওয়ান ২৪ বলে ফিফটি স্পর্শ করেন তিনি।

ফিফটির পরও চালাতে থাকেন পাকিস্তানি তারকা। রিজওয়ানের খুনে ইনিংস থামে ১৪তম ওভারে। ৩৯ বলে ৮ চার, ৪ ছক্কায় ৭৩ করে থামেন তিনি। এর আগে তৃতীয় উইকেটে ৬৯ বলে আসে ১২২ রান।

Mohammad Rizwan & Johnson Charles

রিজওয়ানের বিদায়ের পর তাণ্ডব চালাতে থাকেন চার্লস। এক পর্যায়ে ১৭ বলে ১৪ থেকে গা ঝাড়া দিয়ে ৩৫ বলে ফিফটি স্পর্শ করেন তিনি। এরপর বুলেট গতিতে ছুটেন তিন অঙ্কের দিকে। তার পরের ৫০ আসে স্রেফ ১৫ বলে। আমাদ বাটকে ওভারে তিন ছক্কা পেটানোর পর নাহিদুল ইসলামের এক ওভারে মারেন চার ছয়। এরপর ম্যাচের উত্তেজনাই করে দেন হাওয়া। ছক্কায় সেঞ্চুরি করার পর তড়িঘড়ি ম্যাচও শেষ করে দেন এই ডানহাতি।

টস হেরে ব্যাট করতে নেমে তৃতীয় ওভারেই ধাক্কা খায় খুলনা। ৫ বলে ১ রান করে নাসিম শাহর বলে এলবিডব্লিউতে ফেরেন মাহমুদুল হাসান জয়। এরপর আর উইকেট পড়েছে একদম শেষ ওভারে গিয়ে। এরমাঝে দ্বিতীয় উইকেটে হোপ-তামিম মিলে গড়েন ১০৪ বলে ১৮৪ রানের বিস্ফোরক জুটি।

শুরুতে মন্থর ছিলেন তামিম। রয়েসয়ে প্রান্ত ধরে খেলছিলেন তিনি। ৪৫ বলে পান ফিফটির দেখা। ফিফটির পরের ১৬ বলে যোগ করেন আরও ৪১ রান।

Tamim Iqbal & Shei Hope

হোপের ইনিংসের আবার উল্টো গল্প। তামিম থেকে আগ্রাসী ছিল তার ব্যাট। তবে পরের দিকে হয়েছে কিছুটা শ্লথ। এবার বিপিএলে আগের ম্যাচগুলোতে বিবর্ণ থাকা তামিম মনে হচ্ছিল দেশি ব্যাটারদের মধ্যে আসরের প্রথম সেঞ্চুরিটা পেয়েই যাবেন। দরকার ছিল স্রেফ পাঁচ রানের। শেষ ওভারে ছক্কা মেরে সেই কাজটা করতে গিয়ে তুলে দেন সহজ ক্যাচ। ৬১ বলে ৪ ছক্কা, ১১ চারে ৯৫ রানে থামেন তিনি। ৫৫ বলে ৫ চার, ৭ ছক্কায় ৯১ রানে অপরাজিত রয়ে যান হোপ। দল ২১১ রানের চূড়ায় যাওয়ায় জেতার আশা চওড়া হয়েছিল তাদের। কিন্তু ম্যাচ শেষে দুর্বল শরীরী ভাষায় মাথা নিচু করে মাঠ ছেড়েছেন তামিমরা। 

Comments

The Daily Star  | English

Jatrabari turns into battlefield as students clash

Students of three colleges clashed at Dhaka's Jatrabari today, turning the area into a battlefield

24m ago