বিএনপির সাবেক এমপি নাসিরুলসহ ৫৪ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে পুলিশের মামলা

ফরিদপুর
স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

ফরিদপুরে বিএনপির সাবেক এক সংসদ সদস্যসহ ৫৪ জন নেতাকর্মীকে আসামি করে সালথা ও বোয়ালমারী থানায় পৃথক ২টি মামলা করেছে পুলিশ। ২ মামলায় অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে আরও ১০০-১২০ জনকে। 

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে বোয়ালমারী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কাজী আবুল বাশার ও সালথা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আওলাদ হোসেন বাদী হয়ে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে এ দুটি মামলা করেন।

এ দুই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা দ্য ডেইলি স্টারকে মামলার তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ২ মামলায় মোট ১১ জনকে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

বোয়ালমারী থানায় করা মামলায় ফরিদপুর-১ (বোয়ালমারী, আলফাডাঙ্গা, মধুখালী) আসনের বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য খন্দকার নাসিরুল ইসলামকে (৫৫) ১ নম্বর আসামি করা হয়েছে।

এছাড়াও বোয়ালমারী উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম (৬৫), সাধারণ সম্পাদক সিরাজ ইসলাম (৬০), যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শামসুদ্দিন মিয়া (৫৫), উপজেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি সৈয়দ মাহাবুবুর রশিদ হেলাল (৩৫), সাতৈর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জাকির হোসেন (৫০), পৌর বিএনপির সভাপতি শেখ আফছার উদ্দিন (৫৫) ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সঞ্জয় কুমার সাহাসহ (৪৫) ৩১ নেতাকর্মীকে মামলার আসামি করা হয়েছে। অজ্ঞাত আসামি আরও ৬০-৭০ জন।

মামলার এজাহারে বলা হয়, বোয়ালমারী উপজেলার জয়নগর বটতলায় বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য খন্দকার নাসিরুল ইসলামের একটি ইটভাটা আছে। বৃহস্পতিবার সকালে আসামিরা সেখানে জড়ো হয়ে ভাটা সংলগ্ন মাইজকান্দি-ভাটিয়াপাড়া আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ করেন। তারা রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে, বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে রাস্তায় যান চলাচলের বিঘ্ন ঘটায়, রাস্তায় চলাচলরত যানবাহন ভাঙচুর ও আগুন দিয়ে নাশকতা সৃষ্টি করে।

মামলার বিষয়ে সাবেক সংসদ সদস্য খন্দকার নাসিরুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমি গত ২ দিন ধরে ঢাকায় অবস্থান করছি। বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকার সিএমএম আদালতে একটি মামলার হাজিরা দিয়েছি।'

বোয়ালমারী থানার ওসি আব্দুল ওয়াহাব গণমাধ্যমকে বলেন, 'বৃহস্পতিবার সকালে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে তাদের ওপর ইট ছোড়া হয়। এতে ৪ পুলিশ সদস্য আহত হন। পুলিশ ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ওই এলাকা থেকে ৪টি বোমাও উদ্ধার করা হয়। বোয়ালমারী দমকল বাহিনীর একটি দল এসে টায়ারের আগুন নেভায়।'

এদিকে সালথা থানার করা মামলায় স্থানীয় ২৩ বিএনপি নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। এছাড়া অজ্ঞাত আসামি আরও ৪০-৫০ জন। 

পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলা সদরের সালথা সরকারি কলেজ মাঠের পাশে সড়কের ওপর ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় ৪ পুলিশ সদস্য আহত হয়।

ঘটনাস্থল থেকে বিস্ফোরিত ককটেলসহ নাশকতার কাজে ব্যবহৃত সরঞ্জাম জব্দ করেছে পুলিশ।

মামলার পর সালথা উপজেলা বিএনপির প্রচার সম্পাদক মো. নাছির মাতুব্বর (৪৩), বিএনপি কর্মী আমিনুল  ইসলাম (৩৮) ও শহিদুল ইসলামকে (৪৪) পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।

সালথা থানার ওসি মো. শেখ সাদিক ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ককটেল বিস্ফোরণের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। আসামিদের ছোড়া ইটপাটকেলের আঘাতে পুলিশের ২ এসআইসহ মোট ৪ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।'

তিনি বলেন, 'মামলার পর বৃহস্পতিবার রাতেই ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুক্রবার তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।' 

এর আগে গত বুধবার বিএনপির বিক্ষোভ-সমাবেশে ছাত্রলীগ-যুবলীগের হামলার পর বিএনপির ৩১ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করে পুলিশ। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ৪০-৫০ জনকে আসামি করা হয়।মামলায় মোট ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে বৃহস্পতিবার কারাগারে পাঠানো হয়।

Comments

The Daily Star  | English

Shutdown is another economic peril

Vowing to continue an indefinite work stoppage and stage a protest march on tax offices, the NBR Reform Unity Council has intensified its demands

7h ago