ফরিদপুরে আ. লীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ১০
ফরিদপুরের সালথা উপজেলায় জমি নিয়ে ২ ভাইয়ের বিরোধের জেরে আওয়ামী লীগের দু'গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ, হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।
এ সময় ২টি দোকানসহ মোট ১৮টি বসতবাড়ি ভাঙচুর করা হয়। আহতদের ৫ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জানা গেছে, উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের মীরের গট্টি গ্রামে শুক্রবার সকাল ৮টার দিকে সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে সকাল ৯টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে ২ শতাংশ জমির মালিকানা নিয়ে মীরের গট্টি গ্রামের তোরাপ মাতুব্বরের সঙ্গে তার ভাই আবু মাতুব্বরের বিরোধ চলে আসছিল। আগে তারা ২ ভাই ওই গ্রামের মাতব্বর চাঁন মিয়া দলের সমর্থক ছিলেন। জমি নিয়ে বিরোধের পর আবু মাতুব্বর চাঁন মিয়ার প্রতিপক্ষ ইব্রাহিম খানের দলে যোগ দেন। চাঁন মিয়া গট্টি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। আর ইব্রাহিম খান গট্টি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। গতকাল বিকেলে আবু মাতুব্বর বিরোধপূর্ণ জমিতে ঘর তুলতে গেলে বাধা দেন তার ভাই তোরাপ মাতুব্বর। এ নিয়ে ২ ভাইয়ের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে এবং ২ গ্রুপের সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
গতকাল ঘটনার জেরে শুক্রবার সকাল ৬টা দিকে ইব্রাহিম খানের সমর্থকরা আবু মাতুব্বরের হয়ে মীরের গট্টি গ্রামে তোরাপের বাড়িতে হামলা চালায় ও ভাঙচুর করে। এর জেরে চাঁন মিয়ার সমর্থকরা সকাল ৮টার দিকে সংঘবদ্ধ হয়ে তোরাপের পক্ষে ইব্রাহিম খানের সমর্থকদের দোকান ও বাড়ি-ঘরে হামলা করে ভাঙচুর করে।
গট্টি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও আ. লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ইব্রাহিম খান বলেন, 'সকালে চাঁন মিয়ার নেতৃত্বে আমার সমর্থকদের দোকান ও বাড়ি-ঘরে হামলা করে ব্যাপক ভাঙচুর করা হয়। হামলাকারীরা বেছে বেছে আমার সমর্থকদের বাড়ি ও দোকানে হামলা করেছে।'
জানতে চাইলে গট্টি ইউনিয়ন আ. লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক চাঁন মিয়া বলেন, 'প্রথমে আমার সমর্থক তোরাবের বাড়িতে অন্যান্য গ্রাম থেকে লোক এনে হামলা ও ভাঙচুর করা হয়। এর জের ধরে আমার সমর্থকরা বেশ কিছু বাড়িতে হামলা করেছে।'
গট্টি ইউনিয়ন আ. লীগের সভাপতি জাফর মোল্লা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'চাঁন মিয়া ও ইব্রাহিম খান আওয়ামী লীগের কোনো পদে নেই। তবে, তারা আ. লীগের সমর্থক এবং তারা এলাকার দুটি গ্রুপের নেতৃত্ব দেন। মূলত এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে তাদের সংঘর্ষ হয়েছে।'
ফরিদপুরের সহকারী পুলিশ সুপার (নগরকান্দা সার্কেল) মো. সুমিনুর রহমান বলেন, 'মীরের গট্টিতে ২ গ্রুপের মুখোমুখি সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সংঘর্ষের সময় ২টি দোকানসহ বেশ কয়েকটি বাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। সেখানকার পরিস্থিতি এখন শান্ত আছে। এ ঘটনায় শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনো পক্ষ থানায় অভিযোগ করেনি।'
Comments