মৌলভীবাজারের বিলে-হাওরে পাখি শিকারিদের দৌরাত্ম্য

হাকালুকি হাওর সংলগ্ন হাল্লা পাখিবাড়ি এলাকা থেকে তোলা ছবি। ছবি: সংগৃহীত

সরকারের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও মৌলভীবাজারের হাকালুকি হাওর, হাইল হাওর এবং বাইক্কা বিলসহ বিভিন্ন জায়গায় পরিযায়ী ও দেশি পাখি শিকার চলছেই। বরাবরের মতো এবারও শীত মৌসুম আসার আগেই এই অঞ্চলে পাখি শিকারিদের তৎপরতা বেড়ে গেছে।

বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, পাখি শিকার বন্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। এর সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি নিশ্চিত করার পাশাপাশি সচেতনতা কার্যক্রমও চালিয়ে আসছেন তারা। তারপরও তেমন ‍সুফল মিলছে না।

গত ৩ নভেম্বর শ্রীমঙ্গল উপজেলার পশ্চিম ভাড়াউড়া এলাকা থেকে খাজা মিয়া নামে এক পাখি শিকারিকে বেশ কিছু পরিযায়ী পাখি ও পাখি ধরার সরঞ্জামসহ আটক করা হয়। এসময় তাকে ৩ হাজার টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে কাজ করা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন মিতা ফাউন্ডেশনের মুখপাত্র বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন জানান, খাজা মিয়া দীর্ঘদিন ধরেই হাইল হাওর এলাকায় জাল দিয়ে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি শিকার করে আসছিলেন।

এর আগে ২৫ সেপ্টেম্বর মৌলভীবাজারের থানা বাজার এলাকা থেকে বিভিন্ন প্রজাতির ৮টি পাখিসহ আটক আব্দুস শহীদকে ১৫ দিনের কারাদণ্ড দেন ভ্রাম্যমাণ আদালাত। পাশাপাশি ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় তাকে।

তারও আগে ৩০ আগস্ট সিলেটের ভোলাগঞ্জের পারুয়া বাজার থেকে উদ্ধার করা ৩২টি শালিক পাখি অবমুক্ত করে বন বিভাগ।

হাইল হাওর এলাকার বাসিন্দা সাদেক মিয়ার ভাষ্য, হাইল হাওরের পাশাপাশি হাকালুকি হাওর এবং কমলগঞ্জ উপজেলার আদমপুর, ইসলামপুর ও হাজীপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন জায়গায় শিকার করা পাখি বিক্রি হচ্ছে।

হাওর রক্ষায় কাজ করা বেসরকারি সংস্থা সেন্টার ফর ন্যাচারাল রিসোর্স স্টাডির (সিএনআরএস) কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান চৌধুরীর বলেন, 'অবাধ শিকারের কারণে পাখিদের পরিসর যেমন সীমিত হয়ে আসছে, তেমনি হুমকির মুখে পড়ছে এর প্রজনন ও আবাসস্থল। অতিথি পাখির আগমনের এ সময়টিতে শিকারিরা বেশি সক্রিয় থাকে।'

হাওর-বিলের পাশাপাশি প্রত্যন্ত গ্রাম এলাকা থেকে শিকার করা পাখি খুব গোপনে বিক্রি হয় জানিয়ে মৌলভীবাজার পরিবেশ সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নুরুল মোহাইমিন বলেন, 'গ্রামের অনেক মানুষ এখনো জানে না যে পাখি শিকার একটি অপরাধমূলক কাজ।'

সার্বিক বিষয়ে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের সিলেট বিভাগীয় কর্মকর্তা রেজাউল করিম চৌধুরী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পাখি শিকারিদের বিষয়ে কোনো তথ্য-প্রমাণ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। বন বিভাগের নিয়মিত অভিযানের পাশাপাশি ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।'

Comments

The Daily Star  | English
US attack on Iran nuclear sites

Iran denounces US attack as ‘outrageous’

Iran says 'no signs of contamination' after US attacks on key nuclear sites

7h ago