ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৫ লাখ টাকায় ৪ কিলোমিটার দীর্ঘ দ. কোরিয়ার পতাকা
পাঁচ লাখ টাকা খরচ করে ৪ কিলোমিটার দীর্ঘ পতাকা বানিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার খাল্লা গ্রামের আবু কাউসার মিন্টু।
বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে।
চাকরির সুবাদে দীর্ঘ প্রায় ১৫ বছর দক্ষিণ কোরিয়ায় বসবাস করেছেন আবু কাউসার মিন্টু।
তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে মুঠোফোনে জানান, ১৯৯৮ সালে জীবিকার তাগিদে দক্ষিণ কোরিয়ায় পাড়ি জমিয়েছিলেন তিনি। ২০০২ সালে দক্ষিণ কোরিয়ায় অনুষ্ঠিত ফুটবল বিশ্বকাপ খেলা সরাসরি সেখানকার স্টেডিয়ামে বসে উপভোগ করেন। এরপর থেকেই দক্ষিণ কোরিয়া ফুটবল দলের ভক্ত তিনি।
মিন্টু বলেন, '২০০২ সালের বিশ্বকাপ খেলায় দক্ষিণ কোরিয়া দলের আঞ্জুয়ান নামের একজন খেলোয়াড় দুর্দান্ত খেলেছিলেন। এরপর থেকেই আমি দলটির ভক্ত হয়ে যাই। দক্ষিণ কোরিয়া থেকে গত ২০১৩ সালে বাংলাদেশের ফিরে এলেও সে দেশের ফুটবল টিমের প্রতি আমার ভালোবাসা কমেনি।'
'২০১৮ সালে বিশ্বকাপ খেলা শুরুর আগে আমি রাজধানীর বিমানবন্দর এলাকার একটি ওভারপাসে ১ হাজার ফুট দীর্ঘ দক্ষিণ কোরিয়ার পতাকা টাঙিয়েছিলাম। কিন্তু এতেও আমার মন ভরেনি। আমি চাই দীর্ঘ এই পতাকার মাধ্যমে ভালোবাসা প্রকাশের জন্য দক্ষিণ কোরিয়ার মানুষ বাংলাদেশকে ভালো জানুক,' বলেন তিনি।
মিন্টুর পরিবারের সদস্যরা জানায়, ২০১৩ সালে বাংলাদেশে ফিরে এসে আর দক্ষিণ কোরিয়ায় যাওয়া হয়নি তার। দেশে ফেরার পর থেকে গাজীপুরে ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহ করছেন তিনি।
২০০৬ সালে তিনি বিয়ে করেন। বিয়ের পর তার স্ত্রী সাবিনাও দক্ষিণ কোরিয়া ফুটবল দলের ভক্ত হন বলে পরিবারের সদস্যরা জানান।
মিন্টুর স্ত্রী সাবিনা আক্তার ডেইলি স্টারকে জানান, ২০১৮ সালের বিশ্বকাপের পর থেকে ৮টি মাটির ব্যাংকে টাকা-পয়সা জমিয়েছেন তারা। সম্প্রতি সবগুলো ব্যাংক ভেঙে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা পাওয়া যায়।
কিন্তু এই টাকায় দীর্ঘ পতাকা বানানো সম্ভব না হওয়ায় নিজের পৈতৃক একটি আম বাগানের জায়গা বিক্রি করে সেই টাকা দিয়ে পতাকা তৈরি করেন মিন্টু।
জানা গেছে, ৪ কিলোমিটার দীর্ঘ পতাকাটি মিন্টু খাল্লা গ্রামে নিজ বাড়ির সামনের সড়ক থেকে তার শ্বশুরবাড়ি তেজখালী পর্যন্ত টাঙিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার এই পতাকা তৈরিতে কাপড় কেনা এবং মুদ্রণসহ প্রায় ৫ লাখ টাকা খরচ হয়েছে বলে মিন্টু জানান।
Comments