ভাষার ভিন্নতা, পরিবেশগত সমস্যা

শেরপুরে ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক শিশুদের ঝরে পড়ার হার প্রাথমিকে ৩০ শতাংশ, মাধ্যমিকে ৫০

শেরপুরে ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক শিশুদের ঝরে পড়ার হার প্রাথমিকে ৩০ শতাংশ, মাধ্যমিকে ৫০
বুধবার জেলা পরিষদ মিলনায়তনে দরিদ্র সমাজ উন্নয়ন সংস্থা ও গণসাক্ষরতা অভিযান এক সংলাপের আয়োজন করে। ছবি: সংগৃহীত

শেরপুরে ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক শিশুদের লেখাপড়ায় চ্যালেঞ্জ ও করণীয় নিয়ে এক সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ বুধবার জেলা পরিষদ মিলনায়তনে দরিদ্র সমাজ উন্নয়ন সংস্থা ও গণসাক্ষরতা অভিযান এ সংলাপের আয়োজন করে।

সংলাপের মূলপ্রবন্ধে বলা হয়েছে, ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক শিশুরা বাড়িতে নিজ নিজ মাতৃভাষায় কথা বলেই বেড়ে ওঠে। ৫-৬ বছরের শিশুরা লেখাপড়া করার উদ্দেশ্যে স্কুলে গিয়ে ভাষাগত ও পরিবেশগত সমস্যায় পড়ে। ভাষার ভিন্নতা, ভিন্ন ভাষাভাষী শিক্ষক, সহপাঠী এবং নতুন পরিবেশ, লাজুকতার কারণে তারা একসময় স্কুলে যাওয়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলে।

ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিকদের উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান কালাচারাল অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট সোসাইটির (সিডিএস) সমাজভিত্তিক এক গবেষণার তথ্য তুলে ধরে জানানো হয়, শেরপুরে প্রাথমিক পর্যায়ে ২৫-৩০ শতাংশ এবং মাধ্যমিক পর্যায়ে ৫০ শতাংশ ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক শিশু বিদ্যালয় থেকে ঝরে পড়ে। যে কারণে প্রাথমিক শিক্ষার বুনিয়াদ সঠিকভাবে হয়ে ওঠেনা, মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিকে এ সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করে।

আজ বুধবার সংলাপে এই সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য ৮ দফা প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়। যার মধ্যে ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক শিক্ষার্থী অধ্যূষিত সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সরকার প্রণীত মাতৃভাষায় শিক্ষা কার্যক্রম জোরালো করা, ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর নিজের ভাষায় পড়ার জন্য প্রাথমিকের সব বই নিজ ভাষায় প্রণয়ন করা এবং নিজ ভাষাভাষী শিক্ষক নিয়োগ, শিক্ষকদের যথাযথ প্রশিক্ষণ ও প্রণোদনা প্রদানের উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

এছাড়া ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক শিশুদের জন্য শিক্ষাবৃত্তি নিশ্চিত করা, বিশেষ পশ্চাৎপদ অঞ্চল ঘোষণা করে স্কুলে একবেলা খাবার ব্যবস্থা করার দাবি জানানো হয়।

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রেজুয়ান-এর সভাপতিত্বে সভায় 'আদিবাসী শিশুদের শিক্ষা: সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ' শিরোনামে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গণসাক্ষরতা অভিযানের প্রকল্প ব্যবস্থাপক মো. আব্দুর রউফ।

দরিদ্র সমাজ উন্নয়ন সংস্থার পরিচালক নাহিদা সুলতানা ইলার সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য দেন নির্বাহী পরিচালক মো. ইমান আলী।

সংলাপে অন্যান্যের মাঝে ম্যাজিস্ট্রেট সানাউল মোরশেদ, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক লুৎফুল কবীর, কারিতাস কর্মকর্তা প্রীতি রিছিল, সিল বাংলাদেশ কর্মকর্তা সুজল সাংমা, প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জিয়াউল হক, শিক্ষক নেতা শওকত হোসেন, শিক্ষক ইশরাত জাহান শম্পা, করোনা দাস কারুয়া, ব্র্যাক জেলা প্রতিনিধি ফারহানা মিল্কী, সাংবাদিক হাকিম বাবুলসহ আরও অনেকে বক্তব্য রাখেন।

Comments

The Daily Star  | English

Govt dissolves NBR as per IMF proposal

An ordinance published last night disbands NBR and creates two new divisions

2h ago