বিএনপির সমাবেশের দিনে যশোর-খুলনা মহাসড়ক

‘লাঠি হাতে যুদ্ধংদেহী তরুণের দল’

খুলনা-যশোর মহাসড়কের গোয়ালখালী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এক মোটরসাইকেল আরোহীর পথ আটকেছেন কয়েকজন। ছবি: স্টার

যশোর থেকে খুলনার দূরত্ব প্রায় ৬০ কিলোমিটার। যশোর-খুলনা মহাসড়ক এই অঞ্চলের ব্যস্ত সড়কগুলোর একটি। আজ শনিবার খুলনায় বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে এই সড়কটিতে যানবাহন চলাচলের ক্ষেত্রে চলছে অঘোষিত নিষেধাজ্ঞা। বিএনপি নেতা-কর্মীরা অভিযোগ করে আসছিলেন- খুলনার জনসমাবেশে আসার পথে পদে পদে তাদের বাধা দেওয়া হচ্ছে।

বিষয়টি খতিয়ে দেখতে আজ সকালে যশোর থেকে খুলনার পথে রওনা দেন দ্য ডেইলি স্টারের ডেপুটি চিফ রিপোর্টার মোহাম্মদ আল-মাসুম মোল্লা। তার জবানিতেই শোনা যাক এই পুরো যাত্রাপথটি ঠিক কেমন ছিল—

একটি প্রাইভেট কারে চড়ে যশোর ছাড়তেই চোখে পড়ল প্রচণ্ড ব্যস্ত এই মহাসড়কে নেই কোনো ভারি যানবাহনের চাপ। চলছে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও পায়ে টানা ভ্যান। দুয়েকটি ট্রাক ছাড়া কোন গণপরিবহন নেই।

রাজারহাটে পৌঁছে দেখা গেল পুলিশের প্রথম চেকপোস্টটি। তবে গাড়ি থামাননি পুলিশ সদস্যরা। পরে বসুন্দিয়া মোড় এলাকাতেও দেখা গেল আরেকটি চেকপোস্ট। এর পরের চেকপোস্টটি ছিল ফুলতলা বাজার ছাড়িয়ে। নির্বিঘ্নে পার হওয়া গেল এটুকু পথ।

এখান থেকে গাড়ি আরেকটু সামনে এগুতেই বেজেরডাঙ্গা বাজার। পুলিশের ইশারায় থামল আমার গাড়ি। সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার পরেও পুলিশের একজন কনস্টেবল তার 'স্যারের' সঙ্গে কথা বলতে বললেন। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বললেন প্রেস কার্ড দেখাতে। আমি কার্ড দেখিয়ে জানতে চাইলাম, চেকপোস্ট কেন ভাই? জবাবে তিনি বললের, 'এটা রেগুলার কাজের অংশ।'

গাড়ি চলতে শুরু করল আবার। একে একে পথের বাজার, আফিল গেইট বাইপাস ও আপার যশোর রোড এলাকায় চোখে পড়ে আরও কয়েকটি চেকপোস্ট। কিন্তু গাড়ি আটকায়নি কোথাও।

তবে গাড়ি রেলিগেট বাসস্ট্যান্ড মোড় পেরিয়ে দৌলতপুর পৌঁছাতেই গজারির কাঠ আর হকিস্টিক হাতে প্রায় জনা পঞ্চাশেক তরুণ বলল গাড়ি থামাতে। তারা সমস্বরে জিজ্ঞেস করলেন, 'কোথায় যাচ্ছেন?' বললাম- সমাবেশে। এবার তারা আমার প্রেসকার্ড দেখতে চাইলেন। দেখালাম। এরপর গাড়িতে থাকা আমার ২ সহকর্মীর প্রেসকার্ডও দেখতে চাইল তারা। সেটাও দেখালাম। তারা যতক্ষণ আমার সঙ্গে কথা বলছিলেন ততক্ষণ ধরে গাড়িতে থাপ্পড় দিচ্ছিলেন কেউ কেউ। পরে নেতা গোছের একজন এসে বলল আমাদের ছেড়ে দিতে।

এখান থেকে ছাড়া পেয়ে খুলনার প্রবেশপথে অন্তত ১০টি জায়গায় লাঠি-হকিস্টিক হাতে এমন অনেক তরুণ-যুবকের দেখা মিলল। মোটরসাইকেলে করে মহড়া দিতে দেখা গেল অনেককে। তাদের সবার মুখে ছিল জয় বাংলা স্লোগান।

এ ছাড়া যেসব তরুণ-যুবকরা যুদ্ধংদেহী মনোভাব নিয়ে পথ আগলে দাঁড়িয়ে ছিলেন, তারা অনেকেই অটোরিকশা-ভ্যান থামিয়ে যাত্রীদের জিজ্ঞাসাবাদ করছিলেন। তল্লাশিও করছিলেন কাউকে কাউকে।

শহরের বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিস পর্যন্ত ছিল এমন অবস্থা।

Comments

The Daily Star  | English

Police, Bida launch special security measures for foreign investors

Held meeting with officials of foreign companies, introduced dedicated emergency contact line

1h ago