চাঁপাইনবাবগঞ্জের মোহাম্মদ আলীর বাগানে ৫ হাজারেরও বেশি অর্কিড

অর্কিড
নিজের অর্কিড বাগানে মোহাম্মদ আলী। ছবি: স্টার

চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার গুমপাড়ার বাসিন্দা মোহাম্মদ আলী ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা। বর্তমানে অর্কিড চাষ করে তিনি আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। তার সংগ্রহে আছে ৫ হাজারেরও বেশি অর্কিড।

গত বছর অক্টোবরে মোহাম্মদ আলী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরিচালক পদ থেকে অবসর নেওয়ার পর ফিরে যান নিজ বাড়িতে। গত জানুয়ারিতে বাড়ির পাশে পরিত্যক্ত ১ হাজার ৪০০ বর্গফুট জায়গায় শুরু করেন অর্কিড চাষ।

মোহাম্মদ আলী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'শুরুতে কাজটা কঠিন ছিল। অর্কিড চাষ এ জেলায় একেবারেই নতুন। আত্মীয়স্বজনের মধ্যে শঙ্কা ছিল যে এসব করে টাকা নষ্ট করব। আমি চ্যালেঞ্জটা নিলাম।'

অর্কিড
মোহাম্মদ আলীর অর্কিড বাগান। ছবি: স্টার

তিনি জানান, অর্কিড সহজেই অল্প রোদে বাড়ির বেলকনিতে হয়। বৈচিত্র্যময় ফুল সহজেই সবার দৃষ্টি কাড়ে। একটা ফুল থাকে দেড় থেকে দুই মাস।

'অর্কিড গাছ বহু বছর বাঁচে। এ কারণেও অর্কিড চাষে উদ্বুদ্ধ হই। অল্প জায়গায় অর্কিড চাষ করা যায়। অন্য দেশি-বিদেশি ফুলের চেয়ে দ্রুত টাকা উঠে আসে।'

'ভেবেছিলাম চাঁপাইনবাবগঞ্জের গরম আবহাওয়ায় যদি দেশি-বিদেশি ফুল হয় তবে অর্কিড হবে না কেন। যে সব আমদানিকারক মূলত থাইল্যান্ড থেকে অর্কিড আনেন তাদের কাছ থেকে অর্কিড সংগ্রহ শুরু করি। এখন আমার কাছে ২৫ জাতের ২০০ ধরনের আলাদা আলাদা ফুল হয় এমন ৫ হাজারের বেশি অর্কিড আছে,' বলেন তিনি।

তার সংগ্রহে আছে ৫০ রঙের ডেনড্রবিয়াম, ৩৫ রঙের ক্যাটেলিয়া, ১৯ রঙের গ্রাউন্ড অর্কিড। এ ছাড়াও আছে নানান রঙের ভেন্ডা, রিংকোসটিলিস, অনসিডিয়াম, হৈয়া, গ্রিন লিফ, মিলিয়ন হার্ট, পেন্সিল অর্কিড, অ্যাগ্রেগেটাম ও সিমবিডিয়াম।

মোহাম্মদ আলী জানান, ১৫ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে ইতোমধ্যে তিনি অনলাইনের মাধ্যমে ৪ লাখ টাকার অর্কিড বিক্রি করেছেন।

'অনলাইন ছাড়াও শিক্ষার্থী ও গৃহিণীরা পাইকারি দামে অর্কিড কিনে ক্রেতাদের কাছে তা বিক্রি করে বাড়তি আয় করছেন,' যোগ করেন তিনি।

আগামী বছর ১০ লাখ টাকার বেশি অর্কিড বিক্রি করবেন বলে আশা করছেন মোহাম্মদ আলী। বলেন, 'চাকরি থেকে অবসরের পর হাতে টাকা ও সময় দুটোই ছিল। এখন তা কাজে লাগাচ্ছি। আর্থিক লাভের পাশাপাশি সুন্দর সময় কাটছে।'

চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. পলাশ সরকার ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা মোহাম্মদ আলীর অর্কিডের বাগান পরিদর্শন করেছি। সঠিক ব্যবস্থাপনা জেনেই তিনি অর্কিড চাষ করছেন।'

'জেলার আবহাওয়া অর্কিড চাষে উপযোগী' উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, 'মোহাম্মদ আলীর মতো এখানে বাণিজ্যিকভাবে অর্কিড চাষ করা সম্ভব। এর ব্যাপক বাণিজ্যিক সম্ভাবনা আছে।'

Comments

The Daily Star  | English

Dhaka airport receives 2nd bomb threat

Operations at HSIA continue amid heightened security

42m ago