এবারের পূজা শঙ্কামুক্ত নয়: বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ

বক্তব্য রাখছেন বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ৷ ছবি: সংগৃহীত

এবারের শারদীয় দুর্গাপূজা শঙ্কামুক্ত নয় বলে দাবি করেছেন বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ৷

পরিষদের সভাপতি জে এল ভৌমিক বলেন, 'গত বছর পূজার সময়ের হামলাগুলোর কোনো বিচার হয়নি। আমাদের দাবি, এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনা হোক। আমরা সরকারের ওপর আস্থা রাখতে চাই। তবে এ বছরের পূজাও সম্পূর্ণরূপে শঙ্কামুক্ত নয়৷ তবে আমরা সচেতন রয়েছি৷'

পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. চন্দ্রনাথ পোদ্দার বলেন, 'এখন পর্যন্ত দেশের কয়েকটি স্থানে ১২ থেকে ১৩টি মন্দিরে ভাঙচুর ও হামলা হয়েছে।'

এর আগে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, 'গত বছর দেশের দুর্গাপূজার সংখ্যা ছিল ৩২ হাজার ১১৮টি। এবার এই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩২ হাজার ১৬৮টিতে, যা গত বছরের চাইতে ৫০টি বেশি। ঢাকা মহানগরে পূজার সংখ্যা ২৪২টি, যা গত বছরের চেয়ে ৭টি বেশি।'

তিনি বলেন, 'বর্তমান সরকার রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে আসার পর প্রতিবছর ধারাবাহিকভাবে পূজার সংখ্যা বাড়ছে। দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও শুভানুধ্যায়ীদের অনুদান নিঃসন্দেহে পূজার সংখ্যা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখছে বলা যায়। পূজার সংখ্যা বৃদ্ধি নিশ্চয়ই আনন্দদায়ক। তবে পূজার সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে পূজাকেন্দ্রিক নিরাপত্তার বিষয়টিও সবার বিবেচনায় নেওয়া দরকার।'

তিনি আরও বলেন, '৩টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুরোধ করছি৷ দুর্গাপূজা চলাকালীন সময়ে কোনো ধরনের রাজনৈতিক কর্মসূচি না দেওয়া, দুর্গাপূজাসহ অন্যান্য প্রধান ধর্মীয় অনুষ্ঠানের সময় স্কুল, কলেজ, পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে পরীক্ষা না নেওয়া এবং সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ পরীক্ষা না নেওয়া।'

সংবাদ সম্মেলনে পরিষদের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকটি দাবি উত্থাপন করা হয়৷

যার মধ্যে রয়েছে— দুর্গাপূজায় ২ দিনের ছুটি ঘোষণা; অন্যান্য জাতীয় উৎসবের মতো দুর্গাপূজাও জাতীয় মর্যাদায় পালনের উদ্যোগ নেওয়া; কারাগার, হাসপাতাল, অনাথ আশ্রমে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা; দেবোত্তর সম্পত্তি পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণ আইন প্রণয়নে সাম্প্রতিক সময়ে সরকার কর্তৃক গৃহীত উদ্যোগের দ্রুত বাস্তবায়ন; একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রাক্কালে নির্বাচনী ইশতেহারে ঘোষিত ধর্মীয় সংখ্যালঘু বিশেষ সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠন, অর্পিত সম্পত্তি ফেরত প্রদানে প্রশাসনিক জটিলতা নিরসন এবং সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়া এবং দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচারের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করার প্রতিশ্রুতি সরকারের এই মেয়াদে বাস্তবায়ন করা; হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের পরিবর্তে হিন্দু ফাউন্ডেশন গঠন করা; প্রতিটি জেলায় একটি করে মডেল মন্দির কমপ্লেক্স প্রতিষ্ঠা করা; টোল সংস্কার ও টোল শিক্ষকদের উপযুক্ত বেতন ধার্য করা এবং ২০২১ সালে দুর্গাপূজার সময়ে সংগঠিত সহিংসতাসহ বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন স্থানে দেশব্যাপী হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়ি-ঘর, মন্দিরে হামলা, লুটপাট, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের ঘটনার তদন্ত ও দ্রুত বিচার করা।

Comments

The Daily Star  | English

‘No room for politics under AL name, ideology’

Nahid Islam, adviser to the interim government, spoke with The Daily Star on the nation's key challenges and the way forward.

15h ago