আবুল মনসুর আহমদ: বাঙালি সমাজজীবনের নিপুণ রূপকার

আবুল মনসুর আহমদ এক বিস্ময়কর বাঙালি মনীষা। বাংলার সমাজজীবনের নিবিড়-নিপুণ রূপকার এবং সমাজ-নিরীক্ষক। বলা যায়, ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক আমলে; বিশেষ করে তৎকালীন পূর্ববঙ্গের সমাজ ও জীবন-সংকটের রূপায়ণে তিনি অদ্বিতীয়। তিনি এমন একজন ব্যক্তিত্ব- যার মধ্যে অনেক গুণাবলির সন্নিবেশ দেখতে পাই। তিনি শুধু সুসাহিত্যিক নন; একজন তুখোড় রাজনীতিক, সুযোগ্য সাংবাদিক এবং ডাকসাইটে আইনজ্ঞও। 

একজন মানুষের মধ্যে এত বৈচিত্র্যময় সত্তা কিংবা বৈশিষ্ট্যের দেখা মেলা ভার। সমকালীনতা, সমসাময়িককালের সমাজ ও জীবনবাস্তবতার নিরিখে নির্মিত তার সাহিত্যভুবন জীবন ও সমাজবাস্তবতারই নিবিড় পাঠ। তার বয়ান ও বুনন, মনন ও চিন্তন, পর্যবেক্ষণ ও অনুসন্ধান নিঃসন্দেহে কালোত্তীর্ণ-শিল্পোত্তীর্ণ। বাংলার রন্ধ্রে রন্ধ্রে লুকায়িত হতাশা ও নৈরাশ্যব্যঞ্জক সমাজকাঠামো, অসঙ্গতিপূর্ণ জীবনপ্রবাহের আড়ালে যত কার্যকারণসূত্র- তা তিনি অত্যন্ত নিখুঁতভাবে চিত্রিত করেছেন। তার পর্যবেক্ষণ যেমন সুনিপুণ-নিখুঁত, রচনাশৈলী ও প্রকাশভঙ্গিও তেমন স্বতন্ত্র ঘরানার। বাংলা সাহিত্যে এমন ব্যঙ্গাত্মক অথচ সরস রচনা সত্যিই বিরল। এই হাস্য-ব্যঙ্গের আড়ালে বৃহত্তর মানবজীবন ও মানবসমাজের জন্য তার সংবেদনশীল শিল্পমন সক্রিয় ছিল অনুভবের তীব্রতায়।

অধিকারবঞ্চিত, শোষিত-পীড়িত, প্রতারিত মানুষের প্রতি দায়বদ্ধতাও নিশ্চয়ই ক্রিয়াশীল ছিল বর্ষীয়ান এই রাজনীতিক সাহিত্যিকের। গণমানুষের প্রতি দায় এবং ভেতরে জমাটবাঁধা কান্নাই ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ হয়ে ঝরেছে তার পুরো সাহিত্যে। আর্থ-সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংকট-কবলিত সাধারণ মানুষের জীবনকে রূপায়িত করেছেন তিনি। এই রূপায়ণের পেছনে নিশ্চয়ই সমস্যা-সংকট থেকে উত্তরণের আকুতি এবং প্রয়াস রয়েছে। ব্যাধিগ্রস্ত বাঙালি সমাজজীবনে অসহায় মানুষের মর্মভেদী কান্নার সহানুভূতিশীল রূপকার তিনি। এই চিরবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর তিনি স্বয়ং প্রতিনিধি যেন।

তার সাহিত্যের অমর চরিত্র এমদাদ কিংবা হামিদ যেন তিনি নিজেই। এমদাদ এবং হামিদের প্রতিকারহীন অন্তর্ভেদী কান্না, দ্রোহ, অসহায়তা কিংবা সংকট-উত্তরণের ভাবনায় বিভোরতাই আবুল মনসুর আহমদের অনুভব-উপলব্ধির স্তরে উত্তীর্ণ হয়েছে। গল্পকার নিজেই হয়ে ওঠেন বঞ্চিতজনের প্রতিভূ। ফলে এই কান্না তার নিজেরও। পৃথিবীর বিভিন্ন সমাজের অসংগতি, ভারসাম্যহীনতা, বঞ্চনা-শোষণের প্রতিকার কিংবা প্রতিবাদে বিশ্বসাহিত্যে নানা শাখার সাহিত্য সৃষ্টি হয়েছে। এসব সাহিত্য রচনা করতে কেউ কেউ সরাসরি আক্রমণাত্মক সাহিত্য সৃষ্টি করেছেন। কেউ কেউ আবার রূপক-সংকেত কিংবা প্রতীকের বাতাবরণে স্যাটায়ার (ব্যঙ্গাত্মক রচনা), প্রহসন (ফার্স-হাস্যরসাত্মক রচনা) সৃষ্টি করেছেন। বিশ্বসাহিত্যে 'এনিমেল ফার্ম', 'গালিভার ট্রাভলেস', বাংলা সাহিত্যে 'একেই কি বলে সভ্যতা', 'বুড়ো সালিকের ঘাড়ে রোঁ', 'সধবার একাদশী', 'জামাই বারিক'—এমন সব প্রহসন সমাজে বিদ্যমান অসংগতির প্রতি তীক্ষ্ণ বাক্যবাণেরই প্রসূন। 

এসব রচনার পেছনে সমাজের অসংগতি, সমস্যা-সংকট নিরসনের সুদূরপ্রসারী প্রত্যাশা কার্যকর থাকে। প্রকৃত মানবতাবাদী লেখক, শিল্পী-দার্শনিক মানববিমুখ হতে পারেন না। সাময়িক অভিমানে খানিক আবিষ্ট হতে পারেন, কিন্তু চূড়ান্তভাবে মুখ ফেরাতে পারেন না। বিশ্ববিখ্যাত অভিনেতা চার্লি চ্যাপলিন বলেছিলেন, 'আমি বৃষ্টির মধ্যে অশ্রুগোপন করি।' এই অশ্রু গোপনের পেছনে ব্যক্তিক এবং সামষ্টিক জীবন এবং সমাজভাবনা রয়েছে। বৃহৎ মানবের কথা যারা ভাবেন, তারা অন্যের বেদনায় বেদনার্ত হন; অন্যের ব্যথায় হন ব্যথিত। 

আবুল মনসুর আহমদ বাংলা সাহিত্যে একটি স্বতন্ত্র জায়গায় আছেন স্বকীয়তায়। বাংলা ছোটগল্পে তো তার অবদান অভিনব। সম্ভ্রান্ত রক্ষণশীল মুসলিম পরিবারে জন্ম। ঐতিহ্যবাহী 'ফরাযি' পরিবারের রীতি-রেওয়াজ মেনে বড় হওয়া আবুল মনসুর আহমদ স্বীয় প্রজ্ঞা, আত্মজ্ঞান এবং মানবতাবাদী প্রেরণার বলে সকল প্রকার গোঁড়ামি ও কুসংস্কারকে মাড়িয়ে বাঙালি মুসলমান সমাজের প্রকৃত মুক্তির দিশারীতে রূপান্তরিত হতে পেরেছিলেন। ফলে অনায়াসে তিনি স্বীয় সমাজের দোষ-ত্রুটি, ধর্মান্ধতা-কুসংস্কার প্রভৃতিকে শুধু চিহ্নিত করে ক্ষান্ত হননি; বরং এসব সংস্কারার্থে সৃষ্টি করেছেন অভূতপূর্ব গল্পের প্লট, কাহিনী ও চরিত্র। উচ্চারণ করেছেন সাহসী বক্তব্য। জীবনের শেষবেলায় প্রকাশিত তার 'আত্মকথা'য় অকপটে স্বীকার করে গেছেন নিজ পরিবারের গোঁড়ামির কথা। নিজ পরিবারের পরিবেশকে তিনি ' 'গোঁড়ামির পরিবেশ' বলেই উল্লেখ করেছেন। 

শৈশবে তিনিও যে গোঁড়ামির ভেতরে ঢুকে পড়েন তাও স্বীকার করেছেন। নিজের জবানিতে: 'টুপি ছাড়া আমি কোথাও যাইতাম না, স্কুলে মক্তবে তো নয়ই। ক্লাসে কখনও মাথা হইতে টুপি নামাইতাম না। আমার টুপিটা ছিল লাল তুর্কি টুপি। ঐ ধরনের টুপিতে মাথায় বাতাস যাতায়তের কোনো রাস্তা ছিল না। গরমের দিনে ঘামে ঘামে ভিজিয়া যাইত। কপাল, গলা, চিপ ও ঘাড় বাইয়া ঘাম পড়িত। তবু টুপি খুলিতাম না।' এমন অকপটে পারিবারিক বলয়ের কথা খুব কম বাঙালি লেখকই তাদের আত্মস্মৃতিতে তুলে ধরেন। ধর্মীয় গোঁড়ামি ও কুসংস্কারের বিরুদ্ধে সোচ্চার এই সাহিত্যিক ইসলামের উদারচেতা ভাবধারায় উজ্জীবিত হয়েছিলেন। তাই স্বীয় ধর্ম ও সমাজের কুসংস্কারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হলেও মুসলমান সমাজের প্রতি দরদও ছিল তীব্র। আর ভালোবাসতেন বলেই গোঁড়ামিমুক্ত, কুসংস্কারমুক্ত মুসলমান-সমাজ প্রতিষ্ঠার তাগিদ অনুভব করেছেন।

'আয়না' গ্রন্থটি উৎসর্গ করেছিলেন সাহিত্যিকবন্ধু আবুল কালাম শামসুদ্দীনকে। উৎসর্গপত্রে লিখেছেন: 'বন্ধুরা বলছেন, এই বইয়ে আমি সবাইকে খুব হাসিয়েছি। কিন্তু এই হাসির পেছনে যে কতটা কান্না লুকানো আছে, তা তুমি যেমন জান, তেমন আর কেউ জানে না।' লেখকের এই উক্তির ভেতর দিয়ে লেখার প্রকৃত প্রেরণার সন্ধান পাই আমরা। অবশ্য ব্যঙ্গরস পরিবেশনে সত্যিই তিনি অতুলনীয়। তার হিউমার এবং উইট অত্যন্ত সূচারু এবং প্রখর। অনুভবের প্রাখর্য ও গভীরতায় অনন্য। এমন ভাষাশৈলী বাংলা সাহিত্যে বিরল। 'আয়না' গ্রন্থের ভূমিকায় কাজী নজরুল ইসলামের মূল্যায়ন হতে আমরা তার ভাষাশৈলী ও সাহিত্যরসের সরসতা সম্পর্কে সুদৃঢ় ধারণা পাই: ' ...ব্যঙ্গ-সৃষ্টিতে অসাধারণ প্রতিভার প্রয়োজন। এ যেন সেতারের কান মলে সুর বের করা- সুরও বেরুবে, তারও ছিঁড়বে না।... ভাষার কান মলে রস-সৃষ্টির ক্ষমতা আবুল মনসুর আহমদের অসাধারণ। এ যেন পাকা ওস্তাদী হাত।' এই মন্তব্যের আলোকে আমরা তার সিদ্ধ রসবোধের পাকাপোক্ত সিদ্ধান্তও পাই।

'আয়না' তার অনবদ্য সৃষ্টি। গ্রন্থের সাতটি গল্পে নিপুণ বুননে প্রতিফলিত হয়েছে তৎকালীন পূর্ব-বাংলার কুসংস্কার-কুপ্রথায় আচ্ছন্ন গোঁড়ামিপূর্ণ বিশ্বাসপ্রবণ অর্ধ-শিক্ষিত, অশিক্ষিত, নিরক্ষর জনগোষ্ঠীর জীবনভাষ্য এবং সমাজবাস্তবতা। আন্তঃধর্মীয় সম্পর্কে চির ধরাতে ধর্ম-ব্যবসায়ীদের ভূমিকা এবং প্রভাব, হিন্দু-মুসলমান বিরোধ এবং ভারতবর্ষের পরাধীনতা র্দীঘায়িত হবার কার্যকারণ, মুসলিম সমাজে আশরাফ-আতরাফ মনোভঙ্গির সূচনা প্রভৃতি নানা কুসংস্কারের বয়ান রয়েছে প্রতিটি গল্পে। ধর্ম এবং রাজনীতির যোগসাজশ কীভাবে সাধারণ জনগোষ্ঠীকে জিম্মিদশায় আবদ্ধ করে ফেলে, এমনকি শিক্ষিত, উদার-মুক্তমনা মানবতাবাদী মানুষও যে এই শক্তির কাছে অনিরাপদ, তা আবুল মনসুর আহমদের গল্পে বিচিত্রভাবে এসেছে। একই প্রক্রিয়ায় ধর্ম ও রাজনীতি যুগপৎ মানুষকে চরমভাবে জিম্মিদশার আবেষ্টনে রাখছে অতীতের চেয়ে তীব্রতরভাবে। তার গল্প তাই যুগপ্রভাব কাটিয়ে দূর ভবিতব্যকেও যেন নির্দেশ করে বহুমাত্রিকতায়। গল্পকারের বয়ান হয়ে ওঠে সমকালীন বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও সমধিক প্রাসঙ্গিক। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সাহিত্যে যে 'চিরত্বগুণের' কথা বলেছেন- আবুল মনসুর আহমদের গল্পে তা অনায়াসলব্ধ।

আবুল মনসুর আহমদের ৪৭' পূর্ববতী সময়ে লেখা অধিকাংশ রচনার দৃশ্যপট একবিংশ শতাব্দীর বাংলার আনাচে কানাচে এখনও দৃশ্যমান। আমাদের বিস্ময় জাগে! জীবন ও সমাজ-প্রগতির প্রকৃত গতিপ্রকৃতি বা স্বরূপ কী! আমাদের এই অভিযাত্রা কতটুকু ইতিবাচক?- ইত্যাদি প্রশ্ন ও দ্বিধা হরহামেশাই উঁকি দেয় ভাবনার বিচিত্র কুঠুরিতে। আর এই প্রশ্নগুলোকে আরও তীব্র করে তুলে আবুল মনসুর আহমদের গল্প। কালের গণ্ডি  পেরিয়ে তার বক্তব্য মহাকালের নৌকায় আমাদের চিরকালের সংকটকেই যেন তুলে দেয়! ফলে একটি বিশেষ সময়ের বাংলাদেশের জীবন ও সমাজবাস্তবতাকে রূপায়িত করলেও তা চিরকালের সত্যভাষণে পরিণত হয়েছে। 

আবুল মনসুর আহমদের প্রতিটি গল্পে তুমুল হাস্যরসাত্মক দৃশ্যপট থাকলেও আড়ালে মানববেদনা ও পরাভবের ছটফটানি, শাশ্বত ভাবনা শতধা বিচ্ছুরিত হয়েছে সর্বত্র। 'নায়েবে নবী' গল্পটি একটি অসাধারণ গল্প। দুই মাওলানা- গ্রামের সরদার মৌলবী সুধারানরী সাহেব এবং প্রতিদ্বন্দ্বী মৌলবী গরিবুল্লাহর প্রভাব-প্রতিপত্তি নিয়ে দ্বন্দ্ব-সংঘাতের হাস্যরসাত্মক চিত্র এই গল্পের প্রতিপাদ্য। জানাজায় মৃত ব্যক্তির সিনা নাকি শির বরাবর দাঁড়াতে হবে- এমন সাধারণ বিষয়কে নিয়ে দুই মৌলবীর চরম বাকযুদ্ধ, জুতা ছোড়াছুড়ি, জানাজার নামাজ পড়ানোর কালে পিছন থেকে অন্য মাওলানা এসে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে নিজে জানাজা পড়াতে যাওয়ার মতো হাস্যকর ঘটনা যে জনমনে চরম হাস্যরসের অবতারণা করে- সে বিষয়ে সংশয় নেই। ক্ষমতা-মর্যাদা-শক্তি অর্জনের জন্য গল্পে বর্ণিত দুই মৌলবীর দ্বন্দ্ব-সংঘাত পুরো শ্রেণিকেই আত্মমর্যাদাহীনতার সংকটে নিপতিত করে। গভীরভাবে দৃষ্টি দিলে বোঝা যায়- আবুল মনসুর আহমদের এই পর্যবেক্ষণ কেবল মৌলবী শ্রেণিতেই সীমাবদ্ধ থাকে না; বরং এমন কর্মকাণ্ড  পুরো বাংলার সকল শ্রেণি-পেশাজীবী মানুষের মাঝেই লক্ষণীয়- যা আমাদের অত্যন্ত আশাহত করে এবং প্রকৃত মানব-প্রগতির চাকাকে পেছনে ঘুরিয়ে দেয় প্রবলভাবে। এটি যে কতটা আত্মঅবমাননার- তা আমরা বুঝতে পারি না। সর্বত্র এমন সাদৃশ্যপূর্ণ দৃশ্যপট আমাদের চোখের সামনে মঞ্চস্থ হতে দেখি। 

সমকালে বহুমাত্রিকতায় উত্তীর্ণ তার গল্প। কারণ পুঁজিবাদী সমাজব্যবস্থায় শোষণ এমন বহুকৌণিক যে এখানে অধিকাংশ মানুষই জিম্মি কিছু বিধি-ব্যবস্থার কাছে। আবুল মনসুর আহমদের গল্প তাই অতীতের চেয়ে অধিক সম্প্রসারিত বিষয় ও ভাবভাষ্য নিয়ে হাজির হয় আমাদের কাছে। আত্মার লাবণ্যটুকু যেমন করে শুষে নেয় এই বৈশ্বিক নয়া অর্থনৈতিক সমাজব্যবস্থা- তেমন করেই গণমানুষকে শোষিত-নিপীড়িত হতে দেখি তার গল্পে। আরও বিস্ময়ের কথা হচ্ছে- তিনি তো নিজেই বর্ষীয়ান রাজনীতিক! 'ফুডকনফারেন্স' গ্রন্থের 'রিলিফ ওয়ার্ক' নামক অসাধারণ গল্পে বর্ণিত ত্রাণদানের বিশৃঙ্খল ও অসততার চিত্র কী নির্মোহভাবে তিনি উপস্থাপন করলেন!

বন্যা-কবলিত অসহায় বিপর্যস্ত মানুষের জন্য বরাদ্দকৃত ত্রাণ কীভাবে সংকটকালেও প্রভাবশালী-বিত্তশালীদের পকেটে চলে যায়- তার অনুপম চিত্র 'রিলিফ ওয়ার্ক।' ত্রাণ বিতরণে অনিয়ম চেষ্টা করেও রুখতে পারেননি দায়িত্বরত পরিদর্শক হামিদ। হামিদের অসহায়তা, নীরব কান্না যেন মুক্ত-উদার সকল মানবিক মানুষেরই কান্না! মানুষের কল্যাণ চান, ন্যায্য অধিকার যারা চান- এমন মানুষ সমাজে কম নেই। তবুও পরিস্থিতি যেন আমাদেরকে হামিদের মতোই নিরুপায় করে রাখে।

সবকিছুই স্পষ্ট সবার কাছে- তবু যেন মুক্তি নেই কারও। এ কেমন শৃঙ্খল! আর 'হুযুর কেবলা'র সেই পরি এবং দ্রোহী মুরিদ এমদাদের কালজয়ী রূপ তো আজও বিদ্যমান। আবুল মনসুর আহমদের গল্প তাই সমাজ ও মানবমুক্তির অনন্য দলিল। তার সাহিত্যের আবেদন কখনো ফুরাবে না। যতদিন সমাজে অনাসৃষ্টি, অসংগতি থাকবে- ততদিন তার গল্প সংকটে নবতর দিকনির্দেশনা দেবে।  আমাদের দেবে নবপ্রেরণা।   

Comments

The Daily Star  | English

Teknaf customs in limbo as 19 mt of rice, authorised by AA, reaches port

The consignment of rice weighing 19 metric tonnes arrived at Teknaf land port on Tuesday evening with the documents sealed and signed by the Arakan Army

2h ago