মিশরে বর্ণাঢ্য আয়োজনে মঙ্গল শোভাযাত্রা ও বৈশাখী মেলা

কায়রোতে নববর্ষ উদযাপন। ছবি: সংগৃহীত

নতুন স্বপ্ন, উদ্যম ও প্রত্যাশার আলোয় বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে প্রবাসীদের নিয়ে বাংলা বর্ষবরণসহ মঙ্গল শোভাযাত্রা, বৈশাখী মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে রাজধানী কায়রোস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস।

চলতি বছর রমজান মাসে বাংলা নববর্ষ হওয়ায় ১৪ দিন পর গতকাল ২৮ এপ্রিল এই আয়োজন করা হয়।

দক্ষিণ এশিয়ার সবুজ-শ্যামল বাংলাদেশ, আর সুদূর আফ্রিকা মহাদেশে লোহিত সাগর ও নীল নদের তীরে অবস্থিত বিশ্বের প্রাচীনতম সভ্যতার দেশ মিশরের মধ্যে হাজার মাইলের ভৌগোলিক দূরত্ব। এই দুই দেশ বৈচিত্র্যপূর্ণ প্রকৃতি ও ভিন্ন সংস্কৃতি।

জীবিকা ও পেশাগত দায়িত্বের প্রয়োজনে দেশটির রাজধানী কায়রো, বন্দরনগরী আলেক্সান্দ্রিয়া, পোর্ট সাঈদ, ইসমাইলিয়া ও আশরা রমাধান শহরে প্রবাসী বাংলাদেশিদের বসবাস। একাকী প্রবাস জীবনে পরিবার, আত্মীয়-পরিজন ও বন্ধুবান্ধব থেকে দূরে থাকা এবং দেশীয় স্বাদ ও আমেজের জন্য সারা বছর হা-হুতাশ করা এই প্রবাসীরা হাজার মাইলের দূরত্ব আর সাংস্কৃতিক ভিন্নতর কষ্ট ভুলে গিয়েছিল পহেলা বৈশাখের আয়োজনে। দৈনন্দিন হাজারো ব্যস্ততার মধ্যেও বছরের এই দিনটি পালন না করলে প্রবাসী বাঙালিদের জন্য একটা অসম্পূর্ণতা ও অতৃপ্তি থেকেই যায়।

মিশরে বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে রাজধানী কায়রো ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের অংশগ্রহণে দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত মনিরুল ইসলামের শুভেচ্ছা বক্তব্যে ও মঙ্গল শোভাযাত্রার মাধ্যমে বৈশাখী বরণ উৎসব অনুষ্ঠানের সূচনা করা হয়।

ছোট আর বড়দের রঙ-বেরঙের বৈচিত্র্যপূর্ণ দেশীয় পোশাক, সাজসজ্জা, ভোজনরসিক বাঙালির প্রিয় পিঠা-পায়েস আয়োজন আর সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে মিশরে বাংলাদেশ দূতাবাস প্রাঙ্গণটি হয়ে ওঠে আনন্দমুখর একটি ক্ষুদ্র বাংলাদেশ। দেশের সীমানা পেরিয়ে সুদূর বিদেশের মাটিতে নিজস্ব সংস্কৃতি তুলে ধরার এ প্রয়াস দেশের প্রতি গভীর ভালোবাসার প্রকাশ এবং দেশীয় ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির শ্রেষ্ঠত্বেরই বহিঃপ্রকাশ।

বিকেল ৩টায় দূর-দূরান্ত থেকে প্রবাসীরা রঙ-বেরঙের শাড়ি, পাঞ্জাবি, সালোয়ার-কামিজ পরে আসেন বৈশাখী মেলায় অংশ নিতে।

পান্তা ইলিশ, চেপা শুটকির ভর্তা, চিতই ও নকশিসহ বিভিন্ন পিঠা, সিঙ্গারা, সমুচা, ঝালমুড়ি, জিলাপি ও রসমালাই নানা পদের মুখরোচক খাবারের পাশাপাশি রকমারি পণ্যের স্টল, যা ছিল চোখে পড়ার মতো।

এরপর বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, বাঙালি সংস্কৃতিকে তুলে ধরে সাহিত্য সম্ভার, কবিতাপাঠ, বৈশাখের ওপর সমবেত একক ও দ্বৈত গান, পুরুষ, নারী ও শিশুদের অংশগ্রহণে বিভিন্ন ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও আবৃত্তি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। শিশু-কিশোর ও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ অনুষ্ঠানকে করে তুলেছিল প্রাণবন্ত।

অনুষ্ঠানে দূতাবাসের সব কর্মকর্তা-কর্মচারী, বিখ্যাত আল-আজহার ও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, বাংলাদেশি কমিউনিটির বিভিন্ন নেতা, চিকিৎসক, পেশাজীবী ও ব্যবসায়ীরা অংশগ্রহণ করেন।

লেখক: মিশরপ্রবাসী বাংলাদেশি সাংবাদিক

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh Civil Administration

Govt sets four criteria for selecting secretaries

The interim government is seeking out individuals who maintain financial integrity, demonstrate competence and uphold professionalism while selecting secretaries within the administration.

8h ago