পেশা যাদের মেহেদি চাষ

মেহেদি গ্রাম
ছবি: স্টার

রাজধানীর অদূরে সাভারের সলমাসি গ্রাম। এটি লোকমুখে 'মেহেদি গ্রাম' হিসেবে পরিচিত। এ গ্রামে বাণিজ্যিকভাবে প্রায় অর্ধশত কৃষক মেহেদি চাষ করেন। মেহেদি পাতার আয়েই চলে তাদের সংসার।

গত শনিবার সেই গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, চাষিরা মেহেদিপাতা বাজারজাতের জন্য প্রস্তুত করছেন। আবার কেউ কেউ মেহেদি খেতে পোকা দমনের জন্য কীটনাশক ছড়াচ্ছেন।

মেহেদি পাতা বাজারজাতের জন্য প্রস্তুত করছিলেন কৃষক পেয়ার আলী (৫০)। তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'প্রায় ৫ বিঘা জমি ইজারা নিয়ে মেহেদি চাষ করছি। প্রতি বিঘায় সাড়ে ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার মেহেদির চারা রোপণ করতে হয়। রোপণের পর পরিচর্যা করলে এক নাগাড়ে ৭/৮ বছর ফলন পাওয়া যায়।'

'গ্রামটিতে প্রায় ২০০ বিঘা জমিতে মেহেদি চাষ হয়' উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, 'শীতে মেহেদি পাতার উৎপাদন কম হয়। তবে বছরে অন্তত ৫ বার মেহেদি পাতা বিক্রি করা যায়।'

মেহেদি গ্রাম
ছবি: স্টার

পেয়ার আলী জানান, তিনি জমি ভাড়া হিসেবে ৭৫ হাজার টাকা দেন। গত বছর মেহেদি পাতার দাম ভালো ছিল। সার-কীটনাশকের খরচ বাদ দিয়ে প্রায় ২ লাখ টাকা আয় করেছিলেন।

'এ বছর সব কিছুরই দাম বেশি। কিন্তু, মেহেদি পাতার দাম কম। এ বছর তেমন লাভ হবে না,' যোগ করেন তিনি।

১০ বিঘা জমিতে মেহেদি চাষ করেছেন একই গ্রামের কৃষক স্বপন আলী। তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গত ১২/১৩ বছর ধরে মেহেদি চাষ করছি। এর ওপর নির্ভর করে সংসার চলে।'

'বাজারে নিয়ে মেহেদি পাতা বিক্রি করতে হয় না' উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, 'পাইকাররা বাগান থেকে কিনে নিয়ে যান।'

এ বছর এখন পর্যন্ত জমি থেকে ৩ বার মেহেদি পাতা বিক্রি করেছেন বলে জানান তিনি।

স্বপন আলী বলেন, 'দিন দিন চাষের জমি কমে যাচ্ছে। এক সময় আমাদের পাশের গ্রাম কলাতিয়ায় মেহেদি চাষ হতো। ওখানে হাউজিং, বাড়িঘর হওয়ায় এখন মেহেদি চাষ হয় না। আমাদের গ্রামেও দিন দিন চাষের জমি কমে যাচ্ছে।'

তিনি জানান, শ্রমিক, সার, কীটনাশক, জমির ভাড়ামূল্য দিন দিন বেড়ে যাওয়ায় মেহেদি চাষ বাড়ানো সম্ভব হচ্ছে না। বলেন, 'আমাদের গ্রামটি "মেহেদি গ্রাম" হিসেবে পরিচিত। যেভাবে কৃষি জমি কমে যাচ্ছে তাতে মনে হচ্ছে একদিন আমরাও আর মেহেদি চাষ করতে পারবো না।'

সাভার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নজিয়াত আহমেদ ডেইলি স্টারকে বলেন, `আমাদের তথ্য অনুসারে সাভারে ১০ হেক্টর জমিতে মেহেদি চাষ হয়। রাজধানীর বাজারে মেহেদি পাতার চাহিদা দিন দিন বাড়ছে কারণ মানুষ টিউব মেহেদির ব্যবহার কমাচ্ছেন।'

তিনি আরও বলেন, 'এ এলাকার মানুষ দীর্ঘদিন ধরে মেহেদি চাষে লাভবান হচ্ছেন। আমরা তাদের এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিই। খেতে পোকার আক্রমণ হলে পরামর্শ দিই।​'​​​​​​​​​​​​​​​​​​

Comments

The Daily Star  | English

Economic expectations: Did govt fall short?

When an interim government was sworn into office following the ouster of the Awami League regime just 100 days ago, there was an air of expectation that the Prof Muhammad Yunus-led administration would take steps to salvage a scam-ridden financial sector and rescue an ailing economy.

8h ago