বুয়েটে ছাত্রলীগের কর্মসূচি, শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের পর ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে আজ শনিবার ছাত্রলীগের সাবেক নেতাকর্মীরা রাজনৈতিক ব্যানারে একটি কর্মসূচির আয়োজন করে। এ নিয়ে বুয়েট শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েন আলোচনা সভায় অংশগ্রহণকারীরা। রাজনৈতিক কর্মসূচির প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন।
বুয়েট
বুয়েট ক্যাম্পাসের ক্যাফেটেরিয়ার সামনে জড়ো হন শত শত শিক্ষার্থী। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের পর ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে আজ শনিবার ছাত্রলীগের সাবেক নেতাকর্মীরা রাজনৈতিক ব্যানারে একটি কর্মসূচির আয়োজন করে। এ নিয়ে বুয়েট শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েন আলোচনা সভায় অংশগ্রহণকারীরা। রাজনৈতিক কর্মসূচির প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন।

রাজনৈতিক কর্মসূচির বিষয়টিকে দুঃখজনক বলেছেন আবরারের পরিবারও।

প্রতিবেদনটি লেখা পর্যন্ত রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত বুয়েট ক্যাম্পাসের ক্যাফেটেরিয়ার সামনে জড়ো হয়েছেন শত শত শিক্ষার্থী। কর্মসূচিটি আয়োজনে অনুমতি কীভাবে পেল, সে প্রশ্নের উত্তর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ থেকে জানতে চান তারা।

বুয়েটের শিক্ষার্থীরা জানান, আজ বিকাল ৫টায় বুয়েট ক্যাফেটেরিয়াতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের বুয়েট শাখার সাবেক নেতারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের শহীদদের ৪৬তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করে।

ছবি: সংগৃহীত

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী জানান, ১৫ আগস্ট উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কর্মসূচিটির আয়োজন করতে পারত, কিন্তু ছাত্রলীগ এর আয়োজন করে। যা আমাদের কাছে কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

এ খবর জানার পরই শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ জানিয়ে ক্যাম্পাসে জড়ো হন। ক্যাম্পাসে সব সংগঠনের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ হলেও এ কর্মসূচি কীভাবে আয়োজনের অনুমতি পেল, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে সে প্রশ্নের উত্তর চান তারা।

জানতে চাইলে বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী এস এম শিহাব দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ক্যাম্পাসে সব রাজনৈতিক সংগঠনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ। কিন্তু ছাত্রলীগের কিছু সাবেক নেতাকর্মী একটি কর্মসূচির আয়োজন করেছেন। ছাত্রলীগের ব্যানারে এ ধরনের কর্মসূচির আয়োজন করা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়মের পরিপন্থী।'

'আমরা এর প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কাছে জানতে চাইব,' যোগ করেন তিনি। 

আবরারের ছোট ভাই ফাইয়াজ আবরার বিষয়টিকে দুঃখজনক মন্তব্য করে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'যেহেতু কর্মসূচির আয়োজন ছাত্রলীগের ব্যানারে হয়েছে, এটা খুবই দুঃখজনক। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হাতেই আবরারের মৃত্যু হয়। এরপরই ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হলো। এখন এ ধরনের কর্মসূচি আমাদের পছন্দ হয়নি।'

এভাবে ক্যাম্পাসে আবার আগের মতো রাজনৈতিক কার্যক্রম শুরু হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।

২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে শেরে বাংলা হলে পিটিয়ে হত্যা করেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। আদালত এ হত্যার দায়ে  ২০ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেন।

এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সত্যপ্রসাদ মজুমদার এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমানকে একাধিকবার কল করলেও তারা রিসিভ না করায় বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

ছাত্র কল্যাণ পরিচালক (ডি এস ডব্লিউ) অধ্যাপক মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, 'বলা যায়, তারা আমাদের থেকে অনুমতি নিয়েছে, আবার নেয়ওনি। অনুমতি নেওয়ার সময় জানিয়েছে, তারা সাবেক শিক্ষার্থী, ক্যাম্পাসে পুনর্মিলনী করবে। সে কারণে আমরা অনুমতি দেই। তারা বুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক নেতাদের ব্যানারে প্রোগ্রাম করতে গেলে শিক্ষার্থীরা বাধা দেয়।'

Comments

The Daily Star  | English

Post-August 5 politics: BNP, Jamaat drifting apart

The taunts and barbs leave little room for doubt that the 33-year-old ties have soured. Since the fall of Sheikh Hasina’s government on August 5, BNP and Jamaat-e-Islami leaders have differed in private and in public on various issues, including reforms and election timeframe.

6h ago