যেভাবে শ্রীলঙ্কার পার্লামেন্টে হবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন

শ্রীলঙ্কার পার্লামেন্ট। ছবি: রয়টার্স ফাইল ফটো

অনেক নাটকীয়তার পর আজ বুধবার শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। নির্বাচনে কী পদ্ধতি অনুসরণ করা হবে তার রূপরেখা দিয়েছে দ্বীপ দেশটির পার্লামেন্ট। মূলত গোপন ব্যালটের মাধ্যমে পার্লামেন্টের সদস্যদের ভোটে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

নির্বাচনে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে, অনুরা কুমারা দিসানায়েকে ও দুল্লাস আলহাপ্পেরুমা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।

শ্রীলঙ্কার সংবাদমাধ্যম নিউজ ওয়ার প্রতিবেদন অনুসারে, পার্লামেন্ট এক বিবৃতিতে জানিয়েছে—পার্লামেন্টের পক্ষ থেকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের অভিজ্ঞতা থাকলেও এ বারের নির্বাচনটি বিশেষ গুরুত্ব বহন করে।

১৯৯৩ সালে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট রানাসিংহে প্রেমাদাসার মৃত্যুর পর ডিবি বিজয়তুঙ্গাকে সর্বসম্মতিক্রমে অবশিষ্ট মেয়াদের জন্য প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করা হয়। তবে, তিনি কোনো ভোট ছাড়াই নির্বাচিত হয়েছিলেন।

যেভাবে ভোটগ্রহণ হবে

ভোট শুরুর আগে রিটার্নিং কর্মকর্তা খালি ব্যালট বাক্সগুলো পার্লামেন্টের সদস্যদের দেখানোর পর সেগুলো সিল করে দেবেন। এবারের নির্বাচনে স্পিকারও ভোট দেওয়ার অধিকার পেয়েছেন।

যখন ভোট শুরু হবে তখন স্পিকার ও সেক্রেটারি জেনারেলসহ (সেক্রেটারি জেনারেল রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করবেন) পার্লামেন্ট সদস্যের নাম ধরে ধরে ডাকা হবে। এরপর ওই সদস্যকে রিটার্নিং কর্মকর্তার ডেস্কে গিয়ে ব্যালট পেপার নিতে হবে।

সে সময় পোলিং কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা সদস্য ব্যালট পেপারের পিছনে তার আদ্যক্ষর দিয়ে সই করবেন। এরপর যে সদস্য ব্যালট পেপার পেয়েছেন, তাকে চেম্বারের মাঝখানে রাখা বুথে গিয়ে ব্যালট পেপারে প্রার্থী চিহ্নিত করে রিটার্নিং কর্মকর্তার ডেস্কের বাক্সে রাখতে হবে।

যেভাবে ব্যালট পেপার চিহ্নিত হবে

পার্লামেন্টের প্রত্যেক সদস্য একটি ভোট দিতে পারবেন এবং ব্যালট পেপারে প্রার্থীর নামের সামনের খালি ঘরে '১' নম্বর লিখে চিহ্নিত করতে হবে। একাধিক প্রার্থীকে ভোট দিতে চাইলে এরও বিকল্প ব্যবস্থা আছে।

একাধিক পছন্দ থাকলে সেই অনুযায়ী অন্যান্য নির্বাচনী প্রার্থীদের নামের সামনে থাকা খালি ঘরে পছন্দের গুরুত্ব অনুযায়ী '২', '৩' লেখা যাবে। অর্থাৎ প্রথম পছন্দ হলে ১ এবং দ্বিতীয় পছন্দ হলে ২ এবং তৃতীয় পছন্দ হলে ৩ লেখা যাবে।

যদি কোনো সদস্যের ব্যালট পেপার চিহ্নিত করার সময় ক্রুটি দেখা দেয় (আইনে বলা হয়েছে, যদি কোনো সদস্যের অনিচ্ছাকৃত কারণে ব্যালট পেপার নষ্ট হয়...) তাহলে তিনি এটি রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে ফেরত দিতে পারবেন। যদি রিটার্নিং কর্মকর্তা তাতে সন্তুষ্ট হন, তবে তাকে অন্য ব্যালট পেপার দেওয়া হবে। নষ্ট হওয়া ব্যালট পেপার বাতিল করা হবে।

যদি প্রথমবার নাম ডাকার পর কোনো সদস্য ভোট না দেন বা ভোট শেষ হওয়ার আগে দ্বিতীয়বার তার নাম ডাকা হয় এবং তখনো যদি ভোট না দেন, তাহলে তিনি ভোট দেওয়া থেকে বিরত ছিলেন বলে বিবেচিত হবেন।

যেভাবে ভোট গণনা ও বিজয়ী ঘোষণা হবে

ভোটগ্রহণ শেষে প্রতিটি প্রার্থীর জন্য রেকর্ড করা ভোটের সংখ্যা গণনা করা হবে। যদি কোনো প্রার্থী ভোট গণনাস্থলে যেতে চান তবে তিনি সেই সুযোগ পাবেন। অথবা তিনি তার প্রতিনিধি হিসেবে অন্য পার্লামেন্ট সদস্যকে পাঠাতে পারবেন।

যদি কোনো প্রার্থী বৈধ ভোটের অর্ধেকের বেশি ভোট পান, তাহলে রিটার্নিং কর্মকর্তা তাৎক্ষণিকভাবে তাকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত ঘোষণা করবেন।

কোনো প্রার্থী যদি বৈধ ভোটের অর্ধেকের বেশি না পান তাহলে এই কার্যক্রম কিছুটা বাড়ানো হবে। তারপর সবচেয়ে কম ভোট পাওয়া প্রার্থীকে প্রতিযোগিতা থেকে বাদ দেওয়া হবে। প্রতিযোগিতা থেকে বাদ পড়া প্রার্থীকে যেসব সদস্য প্রথম পছন্দ হিসেবে ভোট দেবেন এবং তারা যদি দ্বিতীয় পছন্দ হিসেবে কাউকে ভোট দিয়ে থাকেন তাহলে সেই ভোট দ্বিতীয় পছন্দের প্রার্থীর ভোট হিসেবে যুক্ত হবে।

এরপরও যদি কোনো প্রার্থী বৈধ ভোটের অর্ধেকের বেশি না পেয়ে থাকেন, তাহলে প্রতিটি গণনায় সবচেয়ে কম ভোট পাওয়া প্রার্থীকে প্রতিযোগিতা থেকে বাদ দেওয়া হবে এবং দ্বিতীয়, তৃতীয় পছন্দের ভোট সংশ্লিষ্ট প্রার্থীর পাওয়া ভোটের সঙ্গে যোগ করা হবে।

এমনকি তা করার পরেও যদি কোনো প্রার্থী বৈধ সংখ্যক ভোটের অর্ধেক না পেয়ে থাকেন তাহলে গণনা শেষে যিনি সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট পেয়েছেন তাকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত ঘোষণা করা হবে।

এ ছাড়াও, দুই বা ততোধিক প্রার্থীর ভোট সমান হলে রিটার্নিং কর্মকর্তা নিজস্ব বিবেচনার ভিত্তিতে ড্র করতে পারবেন। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ৩ দিনের মধ্যে গেজেটের মাধ্যমে প্রার্থীর নাম প্রকাশ করতে হবে।

Comments

The Daily Star  | English

‘Shockingly insufficient’

"The proposed decision to allocate USD 250 billion per year for all developing countries is shockingly insufficient," said the adviser

2h ago