ইইউ সম্মেলন চলাকালে রুশ হামলার তীব্রতা বাড়তে পারে: জেলেন্সকি

মিকোলাইভে স্থানীয়দের সঙ্গে বৈঠকে জেলেনস্কি
মিকোলাইভে স্থানীয়দের সঙ্গে বৈঠকে জেলেনস্কি। ফাইল ছবি: রয়টার্স

গতকাল ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি পূর্বাভাষ দেন, এ সপ্তাহে রাশিয়া দেশটিতে আক্রমণের তীব্রতা বাড়াতে পারে।

আসন্ন ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) সম্মেলনে সংস্থাটিতে ইউক্রেনের যোগদানের বিষয়টির নিষ্পত্তি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। জেলেনস্কির মতে, এই সম্মেলন চলাকালীন সময় রাশিয়া এ ধরনের উদ্যোগ নিতে পারে।

আজ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

জেলেনস্কি রোববার রাতে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় বলেন, 'নিঃসন্দেহে, আমরা আশা করতে পারি এ সপ্তাহে রাশিয়ার শত্রুভাবাপন্ন কার্যক্রমের তীব্রতা আরও বেড়ে যাবে।'

২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা চালানোর ৪ দিন পর দেশটি ইইউতে যোগ দেওয়ার আবেদন জানায়। ইইউর নিয়ন্ত্রক সংস্থা ইউরোপীয় কমিশন গত শুক্রবার ইউক্রেনকে 'প্রার্থী'র মর্যাদা দেওয়ার সুপারিশ করেছে।

আগামী বৃহস্পতি ও শুক্রবারে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এক সম্মেলনে ২৭ সদস্যের অর্থনৈতিক জোট ইইউর নেতারা ইউক্রেনের আবেদনটি বিবেচনা করবেন। কিছু সদস্যের আপত্তি থাকা সত্ত্বেও আশা করা যাচ্ছে ইউক্রেনের আবেদনটিকে তারা অনুমোদন করবেন। তবে অনুমোদন পেলেও পুরো প্রক্রিয়া শেষ হতে বেশ কয়েক বছর সময় লেগে যেতে পারে। 

ইউক্রেন ইইউর সদস্যপদ পেলে তা রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মাথা ব্যথার কারণ হতে পারে। ইউক্রেনে 'বিশেষ সামরিক অভিযানের' অন্যতম লক্ষ্য হিসেবে তিনি ইউক্রেনকে পশ্চিমের প্রভাব মুক্ত করার কথা বলেছেন। ইইউতে অন্তর্ভুক্তি এ লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে সরাসরি ভাবে সাংঘর্ষিক।

পুতিন শুক্রবার জানান, ইউক্রেনের ইইউ সদস্যপদের বিষয়ে মস্কোর কোনো আপত্তি নেই। তবে ক্রেমলিনের একজন মুখপাত্র জানান, রাশিয়া কিয়েভের ইইউ সদস্যপদের বিষয়টিকে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।

যুদ্ধক্ষেত্রে রুশ বাহিনী পূর্বের দনবাস অঞ্চলের পূর্ণ দখল নেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর আগেই এর অংশবিশেষ রুশ সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দখলে ছিল।

মস্কোর পূর্বাঞ্চলের অভিযানের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে শিল্প নগরী সেভেরোদোনেৎস্কের দখল নেওয়া। রোববার রাশিয়া জানিয়েছে, তারা এ শহরের বাইরের দিকে অবস্থিত গ্রাম মেতিওলকিনের দখল নিয়েছে। রুশ রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ সংস্থা তাস জানিয়েছে, সেখানে অসংখ্য ইউক্রেনীয় যোদ্ধা আত্মসমর্পণ করেছেন। তবে ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর দাবি, সেখানে রাশিয়া 'সীমিত আকারে' সাফল্য পেয়েছে।

লুহানস্কের গভর্নর সের্হেই গাইদাই ইউক্রেনের একটি টিভি চ্যানেলকে জানান, সেভেরোদনেৎস্কের ৩৫ কিমি দক্ষিণে অবস্থিত তোসকিভকা অঞ্চলে আক্রমণ করে রাশিয়া কিছু পরিমাণ সাফল্য অর্জন করেছে।

গাইদাই আরও জানান, রাশিয়া সেভেরোদনেৎস্কের মূল অংশের দখল নিয়েছে, তবে এখনও শহরের কিছু অংশ ইউক্রেনীয়দের দখলে আছে। রয়টার্স উভয় পক্ষের দাবির সত্যতা যাচাই করতে পারেনি।

রোববার ব্রিটেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, উভয় পক্ষই সেভেরোদনেৎস্কে ক্রমাগত হামলা অব্যাহত রেখেছে, তবে কেউই এখনও শহরের পূর্ণ দখল নিতে পারেনি।

সেভেরোদনৎস্কের 'যমজ' হিসেবে পরিচিত পার্শ্ববর্তী শহর লিসচানস্কতে আবাসিক দালান ও ব্যক্তিগত বাড়ি রুশ বোমার আঘাতে ধ্বংস হয়েছে বলে দাবি করেন গাইদাই।

'মানুষ সড়কে ও বোমা শেল্টারে মারা যাচ্ছে', যোগ করেন তিনি।

ইইউর বৈঠকে কিয়েভের পক্ষে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে সেটি ইউক্রেনের জন্য একটি দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণে সহায়ক হতে পারে। রুশ হামলার আগে পর্যন্ত ইইউর সদস্যপদ দেশটির জন্য সোনার হরিণের মতই ছিল।

ইউক্রেনের পার্লামেন্টের স্পিকার রুসলান স্তেফানচুক এক বিবৃতিতে বলেন, 'সোভিয়েত ইউনিয়নের কারাগার থেকে পালানোর সুযোগের জন্য বেশ কয়েকটি প্রজন্ম যুদ্ধ করেছে। তারা চেয়েছে খাঁচা থেকে মুক্ত পাখির মত উড়ে যেয়ে ইউরোপীয় সভ্যতার অংশ হতে।'

Comments

The Daily Star  | English

Domestic tourism heats up this winter

The local tourism industry was suffering from apprehension over the loss of business amid a long recession stemming from mass unrest, which began in July

1h ago