সেভেরোদোনেৎস্কে ইউক্রেনকে আত্মসমর্পণের আহ্বান রাশিয়ার

সেভেরোদোনেৎস্ক শহরে অবস্থিত রাসায়নিক কারখানা আজত
সেভেরোদোনেৎস্ক শহরে অবস্থিত রাসায়নিক কারখানা আজত। ছবি: রয়টার্স

পূর্ব ইউক্রেনের দখল নেওয়ার জন্য তীব্র আক্রমণ চালাচ্ছে রাশিয়া। এ ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যবস্তু হল লুহানস্ক প্রদেশের সেভেরোদোনেৎস্ক শহরের দখল নেওয়া।

বেশ কিছুদিন ধরে শহরটির একটি রাসায়নিক কারখানায় আশ্রয় নিয়ে রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে ইউক্রেনীয় প্রতিরক্ষা বাহিনী। তবে আজ বুধবার রুশ বাহিনী ইউক্রেনীয়দের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সকাল ১১টার মধ্যে আত্মসমর্পণ করার।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

বন্দর নগরী মারিউপোল দখলের পর ইউক্রেনের অন্যান্য অংশ থেকে সৈন্য প্রত্যাহার করে পূর্বের দনবাস অঞ্চলের দিকে নজর দিয়েছে রাশিয়া। এ হামলার হাত থেকে রক্ষা পেতে ইউক্রেন পশ্চিমের কাছে আরও বেশি করে ভারী অস্ত্র-সহায়তা চেয়েছে। এ বিষয়টি আজ ব্রাসেলসে ন্যাটো জোটভুক্ত দেশগুলোর প্রতিরক্ষা মন্ত্রীদের এক বৈঠকে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।

ইউক্রেন জানিয়েছে, 'আজত' রাসায়নিক কারখানায় সেনাদের পাশাপাশি ৫০০ বেসামরিক ব্যক্তিও আটকে আছেন। সেভেরোদোনেৎস্কের বেশিরভাগ অংশ রুশ বাহিনীর দখলে চলে গেলেও এখনও এই কারখানাকে ঘিরে ইউক্রেনের প্রতিরোধ টিকে আছে, যা মারিউপোলের আজভস্টল কারখানাকে ঘিরে তীব্র প্রতিরোধের কথা মনে করিয়ে দেয়।

রাশিয়ার জাতীয় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাপনা কেন্দ্রের প্রধান মিখাইল মিজিনৎসেভ জানান, যোদ্ধাদের উচিৎ হবে মস্কো সময় সকাল ৮টা থেকে (বাংলাদেশ সময় সকাল ১১টা) তাদের 'অর্থহীন প্রতিরোধের অবসান ঘটিয়ে অস্ত্র নামিয়ে রাখা।'

'বেসামরিক ব্যক্তিদের মানবতার করিডরের মাধ্যমে বের হয়ে আসতে দেওয়া হবে', যোগ করেন তিনি।

এ মুহূর্তে 'দনবাসের যুদ্ধ' হিসেবে পরিচিত সংঘর্ষের মূল লক্ষ্যবস্তু হিসেবে সেভেরোদোনেৎস্ক শহরকেই বিবেচনা করছে রাশিয়া। যুদ্ধ শুরুর আগে কৌশলগত দিক দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ এ শহরের জনসংখ্যা ১ লাখের চেয়ে সামান্য বেশি ছিল।

কিয়েভের ভাষ্য, এ যুদ্ধে প্রতিদিন ১০০ থেকে ২০০ ইউক্রেনীয় সেনা নিহত হচ্ছেন এবং আরও শত শত সেনা আহত হচ্ছেন।

ইতোমধ্যে সেভেরোদোনেৎস্ক থেকে পালানোর সব পথ বন্ধ করে দিয়েছে রাশিয়া। সর্বশেষ সেতুটিও তারা ধ্বংস করেছে, যার মাধ্যমে লিসিচানস্ক শহরে যাওয়া যেতো।

লিসিচানস্কতেও রুশ বাহিনী বোমাবর্ষণ অব্যাহত রেখেছে।

সেভেরোদোনেৎস্কের যুদ্ধ শুরুর পর বেশ কয়েকবার এর দখল হাতবদল হয়েছে। তবে শহর থেকে বের হওয়ার সব পথ বন্ধ করে দেওয়ায় ইউক্রেনের বাহিনী এখন কোণঠাসা হয়ে পড়েছে।

রুশদের বোমাবর্ষণে সেভেরোদোনেৎস্ক শহরের প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
রুশদের বোমাবর্ষণে সেভেরোদোনেৎস্ক শহরের প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ছবি: রয়টার্স

মঙ্গলবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেন, 'আমাদেরকে শক্ত প্রতিরোধ অব্যাহত রাখতে হবে। শত্রুপক্ষ যত ক্ষতিগ্রস্ত হবে, ততই এ ধরনের আক্রমণাত্মক মনোভাব বজায় রাখার ক্ষেত্রে তাদের শক্তি খর্ব হবে।'

দনবাস অঞ্চলের দখল নিতে রাশিয়া মূলত তাদের গোলন্দাজ বাহিনীর ওপর নির্ভর করছে। তারা ধারাবাহিকভাবে কামানের গোলার বর্ষণে শহর অঞ্চলগুলোতে জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত করে তুলেছে। সঙ্গে পদাতিক বাহিনীও বেশ তৎপর রয়েছে।

জেলেনস্কি জানান, ইউক্রেনের যথেষ্ট পরিমাণ ক্ষেপণাস্ত্র বিধ্বংসী সিস্টেম নেই, যার ফলে তারা শহরগুলোকে গোলাবর্ষণ ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা থেকে রক্ষা করতে পারছেন না।

'এ ধরনের অস্ত্র দেওয়ার ক্ষেত্রে দেরি করার কোনো যৌক্তিকতা নেই', যোগ করে জেলেনস্কি।

এমন পরিস্থিতিতে আগামী শুক্রবার জন্মস্থান সেইন্ট পিটার্সবার্গে আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ফোরামে বক্তৃতা দেবেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সবার দৃষ্টি এখন সেদিকে।

 

Comments

The Daily Star  | English

US retailers lean on suppliers to absorb tariffs

Rather than absorbing the cost or immediately passing it on to consumers, many US apparel retailers and brands have turned to their suppliers in Bangladesh, demanding they share the pain

8h ago