বন্যার পানি সিলেট গ্রিড উপকেন্দ্রে, সমন্বিত প্রয়াসে আপাত রক্ষা

কুমারগাঁও গ্রিড উপকেন্দ্রে বন্যার পানি ঢুকে গেছে। ছবি: দ্বোহা চৌধুরী/স্টার

সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার বন্যা কবলিত বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ গতকাল থেকে বন্ধ আছে। এর মধ্যে গতকাল বৃহস্পতিবার রাত থেকে সিলেটের কুমারগাঁও ১৩২/৩৩ গ্রিড উপকেন্দ্রেও ঢুকতে থাকে বন্যার পানি।

বন্যার পানিতে কন্ট্রোল রুমসহ গ্রিড উপকেন্দ্র প্লাবিত হলে জেলার যেসব এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক আছে, সেসব এলাকা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল।

তবে আজ শুক্রবার দুপুর থেকে বিদ্যুৎ বিভাগের সঙ্গে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, সিলেট সিটি করপোরেশন এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সমন্বিত প্রয়াসে উপকেন্দ্রে প্রবেশ করা বন্যার পানি সন্ধ্যা নাগাদ কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনা গেছে।

বিকেলে সরেজমিনে কুমারগাঁও এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, জিও ব্যাগে বালু ভরে নদীর পাড়ে কৃত্রিম বাঁধ নির্মাণের চেষ্টা করা হচ্ছে। একইসঙ্গে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের পাম্প ব্যবহার করে উপকেন্দ্রের ভেতরে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করা হচ্ছে।

পরে সন্ধ্যায় সিলেট বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আরাফাত-আল-মাজিদ ভুঁইয়া দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সমন্বিত প্রচেষ্টায় উপকেন্দ্রের পানি নিষ্কাশন করে নিয়ন্ত্রণ করা গেছে। যদি বন্যা পরিস্থিতির খুব বেশি অবনতি না হয়, তবে আপাতত বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হওয়ার আশঙ্কা নেই।'

সিলেট নগরীর উপকণ্ঠে কুমারগাঁওয়ে অবস্থিত এই উপকেন্দ্র সুরমা নদী সংলগ্ন। এ নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় উপকেন্দ্রে পানি প্রবেশ করতে থাকে।

এদিকে বৃহস্পতিবার থেকে সিলেট ও সুনামগঞ্জের বন্যা কবলিত অন্তত ৩ লক্ষাধিক গ্রাহক বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় আছেন বলে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি সূত্রে জানা গেছে।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে সিলেট মহানগরীর বেশ কিছু এলাকা, সিলেট সদর উপজেলা, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা, সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর, ছাতক উপজেলাসহ বিভিন্ন এলাকার অন্তত ১ লাখ ৮০ হাজার গ্রাহক বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন আছেন।

এছাড়াও সিলেট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ১ এর অধীনে বিশ্বনাথ উপজেলার ২ হাজার ৫০০ গ্রাহক এবং সিলেট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ২ এর অধীনে সিলেটের গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, জৈন্তাপুর উপজেলাসহ বিভিন্ন অংশের প্রায় ৮০ হাজার গ্রাহক বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন আছেন।

এছাড়াও সুনামগঞ্জ শহর, সদর উপজেলা, দোয়ারাবাজার, বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর, মধ্যনগর, ধর্মপাশাসহ জেলা আরো বেশ কিছু এলাকায় লক্ষাধিক গ্রাহক বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় আছেন।

Comments