মিষ্টির ভাস্কর্য: জিনজারব্রেডের তৈরি যত সিনেমার চরিত্র

ছবি: সংগৃহীত

উৎসবের দিনগুলোতে বাহারি খাবারের মেন্যুতে একঘেয়েমি কাটাতে রঙিন ক্যান্ডি, স্প্রিঙ্কেল, সুগার আইসিংয়ের গার্নিশে জিনজার কেক বা কুকি পরিবেশন করার রীতি চলে আসছে অনেক আগে থেকেই। কিন্তু বরফঘেরা দেশের ছোট্ট বাড়িসদৃশ জিনজার কেক যদি ভাস্কর্যে রূপ নেয় তাহলে কেমন হয়? তার সঙ্গে পছন্দের চরিত্রের চেহারা যোগ করতে পারলে তো কথাই নেই। 

ইউটিউব ভিডিও দূরে থাক, পরিবার থেকে শেখা রেসিপি দিয়েও যখন অনেককে জিনজার কেকের আদল বানাতে হিমশিম খেতে হয়, তখন ভিন্ন ধারার থিম যেন অকল্পনীয় বিষয়বস্তু। আর এখানেই নরওয়ের বাসিন্দা ক্যারোলিন এরিকসন দেখিয়েছেন শিল্পের খেলা।  

ছবি: সংগৃহীত

২০১৩ সালে এরিকসন প্রথম জিনজারব্রেড দিয়ে নানা শিল্পকর্ম তৈরি করা শুরু করে। তারপর আগ্রহ বাড়তে থাকায় একে একে জাদুর মতো অনেক কিছু বানাতে থাকে। এক পর্যায়ে তিনি চিন্তা করলেন, জিনজারব্রেড দিয়ে কত কী তৈরি করলাম, তাহলে সিনেমার চরিত্রগুলো খোদাই করা কেন বাকি থাকবে? এরপর লেগে পড়লেন পরিকল্পিত মহাযজ্ঞে। প্রথমে বানালেন ট্রান্সফর্মারস মুভির বিশালাকার একটি অপটিমাস প্রাইম। একটি জিনজারব্রেড প্রতিযোগিতায় সেটি উপস্থাপন করে তাক লাগিয়ে দেন সবাইকে। 

ছবি: সংগৃহীত

তিনি বলেন, 'প্রাথমিক ধারণার জন্য আমি প্রথমে মুভিটি খুব মনোযোগ দিয়ে দেখি। তারপর ভাস্কর্যের গঠন কেমন হবে, সেটির একটি স্কেচ তৈরি করি। তারপর খুব যত্ন করে ভাস্কর্যটিকে সাজিয়ে উপস্থাপন করি।' ফলাফলস্বরূপ অপটিমাস প্রাইম প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান দখল করায় এরিকসন পুরস্কৃত হওয়ার পাশাপাশি খ্যাতি অর্জন করেন। বলা যায়, এটি মিষ্টির জগতের একটি নতুন দ্বার উন্মোচন করে। 

ছবি: সংগৃহীত

এরিকসনের ভাস্কর্যগুলো যে তার শিল্পীসত্তাকে কত সুন্দর করে ফুটিয়ে তুলেছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। আর এগুলো তৈরির জন্য বেশ পরিশ্রমও করতে হয় তাকে। গড়ে প্রতিটি ভাস্কর্য সৃষ্টির পেছনে তাকে ব্যয় করতে হয় ৫ সপ্তাহ। কখনো কখনো আরও বেশি। এ প্রক্রিয়ায় শুরুতে তিনি ১ঃ১ অনুপাতে একটি স্কেচ তৈরি করেন। 

এরপর জিনজারব্রেডের প্রতিটি টুকরো ফ্রেমে রেখে গলিত চিনির আস্তরণ দিয়ে সংযুক্ত করেন। কী ভাবছেন জিনজারব্রেডের টুকরোগুলো তিনি বাইরে থেকে কিনে আনেন? মোটেই না। তার মতে, প্রতিটি সিনেমাটিক কাজের জন্য সঠিক মসৃণতা ও দৃঢ়তার দিকটি মাথায় রাখতে হয়। আবার সঠিক মাপে টুকরোগুলো কাটা তো অত্যাবশ্যক। যা বাজারের কোথাও পাওয়া সম্ভব নয়। এজন্য জিনজারব্রেডগুলো তিনি নিজ হাতে ঘরে বেক করেন। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজন হয় প্রায় ১৫ পাউন্ড ময়দা এবং ১১ প্যাকেট চিনিসহ নানা উপকরণ। 

এ পর্যন্ত এরিকসন অপটিমাস প্রাইমের পাশাপাশি তৈরি করেছেন দ্য হবিট মুভির স্মাগ দ্য ড্রাগন, এলিয়েন মুভির জেনোমর্ফের মতো চরিত্রের ভাস্কর্য। এ ছাড়া স্টার্স ওয়ার্স মুভির ডার্থ ভেডার এবং গার্ডিয়ানস অব দ্য গ্যালাক্সি মুভির গ্রুট-এর জন্য পেয়েছেন বাড়তি খ্যাতি। 

দর্শকমাত্রই স্বীকার করবেন, এরকম শিল্পকর্মের জন্য এরিকসনের শ্রম এবং বুদ্ধিমত্তা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। হলফ করে বলা যায়, জিনজারব্রেডের সাই-ফাই ধাঁচের সিনেম্যাটিক চরিত্রগুলো ইউলেটাইড ভাস্কর্যের সৌন্দর্যকে ছাড়িয়ে গেছে অনেকগুণ। 

রিপলি'স বিলিভ ইট অর নট থেকে অনুবাদ করেছেন আসরিফা সুলতানা রিয়া। 

 

Comments

The Daily Star  | English

The end of exemption?

TRIPS waiver end poses dual challenge: legal and technological

20h ago